ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বিরোধে চীন দৃঢ়ভাবে তার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে এমনকি তা যুদ্ধের মাধ্যমে হলেও। সিকিম সেক্টরে দুই দেশের তীব্র উত্তেজনার মাঝে সোমবার চীনের বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে ওই মন্তব্য করেছেন।
দুই দেশের দীর্ঘতম সীমান্ত সিকিমের দোকলাম এলাকায় তৃতীয় সপ্তাহের মতো চীন-ভারত সামরিক বাহিনীর উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এবং নীতিনির্ধারকরা বলেছেন, চীন এবং ভারতের মধ্যে যে সংঘাত রয়েছে তা যদি যথাযথ উপায়ে নিয়ন্ত্রণ করা না হয়; তাহলে যুদ্ধের সম্ভাবনা রয়েছে।
জম্মু-কাশ্মির থেকে অরুণাচল প্রদেশ পর্যন্ত চীন-ভারতের দীর্ঘ ৩ হাজার ৪৮৮ কিলোমিটার সীমান্ত আছে। এর মধ্যে সিকিমেই রয়েছে প্রায় ২২০ কিলোমিটার। চীনা বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে দেশটির সরকারি দৈনিক গ্লোবাল টাইমস এক প্রতিবেদনে বলছে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধের বিনিময়ে হলেও চীন তার সীমান্তের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে।
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী অরুণ জেটলি সম্প্রতি বলেন, ১৯৬২ সালে ভারত যা ছিল; ২০১৭ সালের ভারত তার চেয়ে ভিন্ন। ভারতীয় মন্ত্রীর এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় চীনের সাংহাই মিউনিসিপ্যাল সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের অধ্যাপক ওয়াং দেহুয়া বলেন, ১৯৬২ সালের চীনও এখন ভিন্ন।
অরুণ জেটলি বলেছিলেন, তারা যদি আমাদের মনে করিয়ে দিতে চায়, ১৯৬২ সালের পরিস্থিতি ছিল অন্যরকম এবং ২০১৭ সালের ভারতের অবস্থান আগের মতো নেই।
ওয়াং বলেন, ১৯৬২ সাল থেকেই চীনকে ভারত সবচেয়ে বড় প্রতিযোগী মনে করে আসছে। যদিও দেশ দুটির মধ্যে অনেক বিষয়ে মিল রয়েছে। যেমন, ব্যাপক জনগোষ্ঠী নিয়ে উভয় দেশই উন্নয়নশীল।
গ্লোবাল টাইমস বলছে, চীন এবং ভারতের মধ্যে সাম্প্রতিক যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে; তা যদি যথাযথ উপায়ে মোকাবেলা করা না হয় তাহলে একটি যুদ্ধের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সে রকম নাও ঘটতে পারে। চীন তার ভূখণ্ড ও সীমান্ত এলাকা রক্ষা করবে।
বেইজিংয়ের এই দৈনিক বলছে, ১৯৬২ সালে চীনা ভূখণ্ডে অতর্কিত ভারতীয় হামলার কারণে চীন-ভারত যুদ্ধ শুরু হয়। এতে অন্তত ৭২২ চীনা সৈন্য ও ৪ হাজার ৩৮৩ ভারতীয় সৈন্যের প্রাণহানি ঘটে। সংলাপ এবং আলোচনার মাধ্যমে দ্বন্দ্ব নিরসনের জন্য উভয় পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
সূত্র : ইকোনমিকস টাইমস।