ইয়েমেনে যুদ্ধবিরতি ও সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন ব্রিটেনের প্রধান বিরোধীদল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাকে দেয়া বিশেষ সাক্ষাতকারে করবিন ওই আহ্বান জানান।
লন্ডনভিত্তিক অস্ত্রবাণিজ্য বিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ক্যাম্পেইন অ্যাগেইন্সট দ্য আর্ম ট্রেড’ বলছে, ইয়েমেনে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত সৌদি আরবের কাছে ৪ দশমিক ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অস্ত্র রফতানির লাইসেন্স অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাজ্য।
ব্রিটেনের লেবার পার্টির এই নেতা বলেছেন, আমরা ইয়েমেনে এই অস্ত্র ব্যবহারে সৌদি আরবের ক্রমাগত নিন্দা জানিয়েছি। ইয়েমেনে সৌদি আরবের হামলা নয়, আমরা শান্তি প্রক্রিয়া চাই। এজন্যই সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রি স্থগিত করতে বলছি।
তিনি বলেন, ‘আমরা এ বিষয়টি অত্যন্ত পরিষ্কার করেছি।’
দেশটির নির্বাসিত প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মানসুর আল হাদি সমর্থিত সরকারি বাহিনী ও হুথি বিদ্রোহীদের মধ্যে দীর্ঘদিনের লড়াইয়ে বিধ্বস্ত হয়ে উঠেছে ইয়েমেন। হুথি বিদ্রোহীদের আন্দোলনের মুখে পালিয়ে থাকা হাদিকে ক্ষমতায় বসানোর লক্ষ্যে ২০১৫ সালে ইয়েমেনে হামলা শুরু করে সৌদি আরব।
ইয়েমেনে ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের উত্থান মধ্যপ্রাচ্যে তেহরানের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী সৌদি আরবের উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে। হাদি সমর্থিত সরকারকে ক্ষমতায় বসাতে দুই বছর আগে সৌদি নেতৃত্বাধীন সুন্নি আরব দেশগুলো ইয়েমেনে বড় ধরনের বিমান হামলায় অংশ নেয়।
জাতিসংঘ বলছে, ইয়েমেনে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। গত ২০ মার্চ পর্যন্ত ইয়েমেনে হামলায় আহত হয়েছে আরো অন্তত ৪০ হাজার মানুষ। তবে বেশিরভাগ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলায়।
সৌদি নেতৃত্বাধীন বিমান হামলা এবং পরবর্তীতে অবরোধ অারোপের ফলে আরব বিশ্বের দরিদ্র দেশটিতে মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। দেশটিতে কলেরা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে এবং অন্তত ৭০ শতাংশ নাগরিক এখন পুরোপুরি ত্রাণের ওপর নির্ভরশীল।
জেরেমি করবিন বলেন, ইয়েমেন যুদ্ধে আমি পুরোপুরি হতাশ। বোমা হামলা, প্রাণহানি, কলেরার বিস্তার ঘটছে তা আতঙ্কিত হওয়ার মতো। ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা ও যারা ইতোমধ্যে মারা গেছেন তাও উদ্বেগজনক।