ট্র্যাকের রাজার আসনে প্রথম বসেছিলেন সর্বশেষ বাংলাদেশ গেমসে। ২০১৩ সালে দেশের সবচেয়ে বড় এ গেমসে দ্রুততম মানব হওয়ার পর মেজবাহ আহমেদের কাছ থেকে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট কেড়ে নিতে পারেননি কেউ। এক এক করে ৫ বার ১০০ মিটারে দেশসেরা হয়েছেন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর এ অ্যাথলেট।
আগামী ২০ জুলাই শুরু হবে সামার অ্যাথলেটিক মিট। সেখানে মেজবাহর লক্ষ্য ডাবল হ্যাটট্রিক। দ্রুততম মানবের খেতাব ধরে রাখতে পারলে অনন্য এক রেকর্ড গড়াও হবে বাগেরহাটের এ তরুণের।
ঘরের ট্র্যাকে রাজত্ব করা মেজবাহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সবচেয়ে বড় আসর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপেও করতে যাচ্ছেন ‘অংশগ্রহণের হ্যাটট্রিক।’ মস্কো, বেইজিংয়ের পর এবার তিনি অংশ নেবেন আগামী ৪ থেকে ১৩ আগস্ট লন্ডনে অনুষ্ঠিতব্য আইএএএফ ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপের ১৬তম আসরে।
ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের কোনো অ্যাথলেট প্রাথমিক পর্ব অতিক্রমের স্বপ্নই দেখেন না। চোখ থাকে নিজের সেরা টাইমিং করা আর অ্যাথলেটিকের সুপারস্টারদের কাছাকাছি যাওয়ার। বোল্ট-পাওয়েল-গ্যাটলিনদের সঙ্গে ছবি তুলতে পারলেই যেন ধন্য হন তারা।
মেজবাহসহ ১৮ অ্যাথলেট এখন ভারতের ভুবনেশ্বর শহরে প্রস্তুতি নিচ্ছেন এশিয়ান অ্যাথলেটিক চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য। বাংলাদেশ অ্যামেচার অ্যাথলেটিক ফেডারেশনের উদ্যোগ এবং ইন্ডিয়া অ্যামেচার অ্যাথলেটিক ফেডারেশনের সহযোগিতায় বাংলাদেশের অ্যাথলেটরা এ সুযোগ পেয়েছেন প্রতিযোগিতার আগে। ৬ থেকে ৯ জুলাই ভুবনেশ্বরেই অনুষ্ঠিত হবে এই চ্যাম্পিয়নশিপ।
‘আমাদের এখানে অনেক ভালো অনুশীলন হচ্ছে। অ্যাথলেটদের জন্য এ ধরনের সুযোগ আগে কখনো আসেনি। কোনো দিন দুই বেলা, কোনো দিন এক বেলা অনুশীলন করছি। স্থানীয় স্প্রিন্টের সেরা কোচ মাঝে মধ্যে আমাদের অনুশীলন করান। যেখানে আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে সেখান থেকে অনুশীলনের ট্র্যাক মাত্র ১০ মিনিটের পথ। আমরা নিবিঢ়ভাবে এখানে অনুশীলন করছি’- ভুবনেশ্বর থেকে জাগো নিউজকে বলেছেন দেশের দ্রুততম মানব মেজবাহ আহমেদ।
বাংলাদেশেও অনুশীলন করেন, করছেন ভুবনেশ্বরেও। কী পার্থক্য দেখছেন? ‘আসলে পার্থক্য অনেক। এখানে খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে অনুশীলনের পরিবেশ-সবকিছু ভালো। দেশে অনুশীলনের এক ঘেঁয়েমিটাও কেটেছে। তাছাড়া এখানে খাওয়া, অনুশীলন, ঘুম আর বিশ্রামের বাইরে কিছু নেই। মনসংযোগটা পুরোই থাকছে অনুশীলনে’- ভুবনেশ্বরের অনুশীলন নিয়ে বলছিলেন মেজবাহ।
অনুশীলনে নিজের টাইমিং প্রসঙ্গে মেজবাহ বলেছেন, ‘ভালো হচ্ছে। পুরোপুরি ফিট আছি। আগের চেয়ে টাইমিংয়ের উন্নতি হচ্ছে। যদিও আমি সর্বোচ্চটা দিচ্ছি না। বলতে পারেন সামর্থ্যের ৮৫ ভাগ দিয়ে অনুশীলন করছি। তাতেই যে টাইমিং হচ্ছে তাতে আমি সন্তুষ্ট।’
মেজবাহ আহমেদ ২০১৩ সালে রাশিয়ার মস্কোয় অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে ১০০ মিটার স্প্রিন্টে দৌড়েছিলেন ১১.২৪ সেকেন্ড সময় নিয়ে। ২০১৫ সালে চীনের বেইজিংয়ে সময় নিয়েছিলেন ১১.১৩ সেকেন্ড। সর্বশেষ রিও অলিম্পিকে মেজবাহ সময় নিয়েছিলেন ১১.৩৪ সেকেন্ড। এসএ গেমসে মেজবাহর সময় ছিল ১০.৭২ সেকেন্ড। দ্রুততম মানবের খেতাব ধরে রাখতে সর্বশেষ জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে মেজবাহর টাইমিং ছিল ১০.৬৩ সেকেন্ড।