কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত নির্বিঘ্ন করতে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। মোতায়েন করা হয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্স (আরআরএফ), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), জেলা পুলিশসহ হাজারেরও বেশি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য।
ঈদের দিন মাঠের ভেতর ও বাইরে এক হাজারের বেশি সিসি ক্যামেরা, আটটি ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে আগতদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হবে। মাঠ ও আশপাশের এলাকায় আট প্লাটুন বিজিবি ও ২০ প্লাটুন এপিবিএন মোতায়েন করা হয়েছে। পুরো মাঠ ও আশপাশের এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হবে বলে জানান কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন খান। রবিবার সকালে শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
মো. আনোয়ার হোসেন খান বলেন, মাঠের ভেতর-বাইরে পুলিশ বাহিনীকে সহায়তা করবে অসংখ্য স্বেচ্ছাসেবক দল। নিরাপত্তার স্বার্থে কাউকে ছাতা বা কোনো ধরনের ব্যাগ নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হবে না। শুধু জায়নামাজ নিয়ে আসা যাবে।
তিনি আরও জানান, ঈদের দিন পর্যন্ত নতুন ভাড়াটে না তুলতে বাড়িওয়ালাদের আহ্বান জানানো হয়েছে।
শোলাকিয়ার মাঠের নিরাপত্তার বিষয়ে পুলিশ সুপার আরও বলেন, ঈদের দিন মাঠের দক্ষিণে তিনটি, পূর্বে তিনটি ও উত্তর পাশে একটি প্রবেশপথ খোলা রাখা হবে। এর মধ্যে ছয়টি প্রবেশপথে আর্চওয়ে বসানো হয়েছে। একটি পথ গাড়ি প্রবেশের জন্য রাখা হয়েছে। প্রত্যেককে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি করে মাঠে ঢুকতে দেওয়া হবে।
এবার শোলাকিয়ায় ১৯০তম ঈদুল ফিতরের জামাতে ইমামতি করবেন বাংলাদেশ ইসলাহুল মুসলেমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরিদ উদ্দীন মাসউদ। সকাল ১০টায় জামাত শুরু হবে। মুসল্লিদের আসা-যাওয়ার জন্য দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. আজিমুদ্দিন বিশ্বাস বলেন, মুসল্লিদের বাড়তি নিরাপত্তায় প্রশাসন থেকে সব রকমের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
গত বছর ৭ জুলাই ঈদুল ফিতরের দিন নামাজ শুরুর আগ মুহূর্তে শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের অদূরে আজিমউদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের কাছে পুলিশের তল্লাশির সময় জঙ্গি হামলা হয়। এতে দুই পুলিশ কনস্টেবলসহ তিনজন নিহত হন। আহত হন ১২ পুলিশ সদস্য। পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ঘটনাস্থলে এক জঙ্গি নিহত হন। আটক করা হয় দুজনকে। এ জঙ্গি হামলার ঘটনায় নিহত ঝর্ণা রাণী ভৌমিকের পরিবার এক বছরেও শোক কাটিয়ে উঠতে পারেনি। ঝর্ণা রানীর স্বামী গৌরাঙ্গনাথ ভৌমিক এই হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার দাবি করেন।