সরকারি চাকরিজীবীদের অবসরকালীন ভাতার ওপর আর আয়কর দিতে হবে না। ২০১৫ সালের ১ জুলাই থেকে অবসরকালীন ভাতার ওপর কর আরোপ করা হয়েছিল। এখন তা উঠিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সরকারের এই সিদ্ধান্ত আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।
গত বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের আয়কর শাখা থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এটি ইতোমধ্যেই সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রধানদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপণ অনুসারে, অবসরকালে প্রাপ্য বিভিন্ন ধরনের ভাতার (ল্যাম্প গ্র্যান্ট) ওপর থেকে আরোপিত আয়কর প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। তবে সরকারি কর্মচারীদের মূল বেতন, উৎসব ভাতা ও বোনাসের উপর আয়কর দিতে হবে। এর বাইরে যেসব সুবিধা পান সেসব আয়ের বিপরীতে কোনো কর দিতে হবে না।
সূত্র জানায়, অবসরে যাওয়ার সময় সরকারি চাকরিজীবী যেসব ভাতা পান সেগুলোকে আয়করের আওতায় নিলে তাদের প্রাপ্য অর্থের পরিমাণ অনেক কমে যায়। এ বিষয়ে একাধিক সরকারি চাকরিজীবী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। এসব বিবেচনায় নিয়ে এর উপর থেকে কর তুলে নেয়া হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সরকারি চাকরিজীবীরা অবসরকালীন ছুটিতে যাওয়ার সময় বিভিন্ন ধরনের সুবিধা পেয়ে থাকেন। এর মধ্যে রয়েছে অর্জিত ছুটি, অন্যান্য ছুটির বিপরীতে প্রাপ্য অর্থ, গ্রাচুইটি, চিকিৎসা ভাতাসহ অন্যান্য ভাতা। ২০১৫ সালের ১ জুলাই থেকে এসব ভাতার ওপর কর আরোপ করা হয়। ফলে ওই সময়ের পর থেকে যেসব সরকারি চাকরিজীবী অবসরে গেছেন বা চাকরি ছেড়ে দিয়ে এসব ভাতা নগদায়ন করেছেন তাদেরকে এর বিপরীতে আনুপাতিক হারে কর দিতে হয়েছে। অর্থৎ এসব খাত থেকে অর্জিত আয় করযোগ্য বলে বিবেচনায় নিয়ে কর আদায় করা হয়েছে।
নতুন প্রজ্ঞাপনের ফলে এসব খাত থেকে পাওয়া অর্থকে আয়কর যোগ্য বলে বিবেচনা করা হবে না। এগুলো হবে আয়কর মুক্ত। আয়করের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী ওই সময়ে প্রাপ্ত মূল বেতন, উৎসব ভাতা ও বোনাসের ওপর কর দিতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা চাকরি (বেতন ও ভাতাদি) আদেশ-২০১৫ অনুযায়ী স্বশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এবং জুডিশিয়াল সার্ভিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মূল বেতন, উৎসব ভাতা ও বোনাসের ওপর কর দিতে হবে।
এছাড়া জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫ এর আলোকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা যৌথ বাহিনীর নির্দেশাবলি অনুযায়ী সুবিধা ভোগ করা সামরিক কর্মকর্তা এবং অন্য যেকোনো আইনে বিধি বা প্রবিধান অধীনে নিয়োজিত হয়ে সরকারি কোষাগার থেকে বেতনভুক্ত কর্মচারীদেরও ওইসব বিষয়ের ওপর কর দিতে হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকারের এই আদেশের ফলে বিশেষ করে স্বল্প বেতনের সরকারি চাকরিজীবীরা উপকৃত হবেন। এছাড়া অবসরে যাওয়ার পর যারা শুধু পেনশনের ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করেন তারাও উপকৃত হবেন।