ক্রেডিট কার্ড নীতিমালা বাস্তবায়নের আগেই পরিবর্তনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কার্ড ব্যবসা করে এমন শীর্ষ ব্যাংকগুলোর দাবির মুখেই এমন উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল সোমবার ব্যাংকগুলোর সঙ্গে এক সভায় এমনই ইঙ্গিত দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
গত ১১ মে ক্রেডিট কার্ড সেবাসংক্রান্ত এক নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপরই ব্যাংকগুলো নীতিমালাটি পর্যালোচনার দাবি জানায়। এ নিয়ে গতকাল ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়, নীতিমালা অনুযায়ী কার্ডে সুদ হার হবে ভোক্তা ঋণের চেয়ে ৫ শতাংশ বেশি। অর্থাৎ সুদের হার হবে ১৫-১৭ শতাংশ। এ নীতিমালা বাস্তবায়িত হলে কার্ড ব্যবসা গুটিয়ে ফেলতে হবে। এতে ব্যাংকগুলোর কয়েক শ কোটি টাকার বিনিয়োগ আটকা পড়বে। নগদ টাকার লেনদেনবিহীন সমাজে যাওয়ার যে উদ্যোগ ছিল, তা থমকে যাবে।
ব্যাংকগুলো বলেছে, ক্রেডিট কার্ডে তহবিল ব্যয় ৫ শতাংশ, সাধারণ সঞ্চিতি ৫ শতাংশ, মন্দ ঋণ ব্যয় ৪ শতাংশ ও অন্যান্য খরচ ৯ শতাংশ। অর্থাৎ কার্ড ব্যবসায় কমপক্ষে সুদের হার ২৩ শতাংশ। এ জন্য ব্যাংকগুলো ক্রেডিট কার্ডে সাধারণ সঞ্চিতি ক্ষুদ্র ও মাঝারি ঋণের মতো দশমিক ২৫ শতাংশ রাখার সুযোগ চেয়েছে। এ ছাড়া ভোক্তা ঋণের পরিবর্তে সর্বোচ্চ সুদের চেয়ে ৫ শতাংশ বেশি হবে ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার। বাংলাদেশ ব্যাংক তাতে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে বলে জানা গেছে।
সভায় ব্যাংকগুলোর পক্ষ নীতিমালাটি ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়। ব্যাংকগুলো জানায়, চলতি বছরে গ্রাহকদের সেবা দিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে। এ কারণে নীতিমালাটি এখনই বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
গতকালের সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে গভর্নর ফজলে কবির, ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী, এস এম মুনিরুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক আবদুর রহিমসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, ব্যাংকগুলো বেশ কিছু দাবি করেছে, তা পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
ব্যাংকগুলোর পক্ষে ছিলেন ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন এবিবির চেয়ারম্যান আনিস এ খান, ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, ইস্টার্ণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলী রেজা ইফতেখার, ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হুসেইন, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের এ দেশীয় প্রধান আবরার এ আনোয়ার ও সিটি ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন।