চীনের সানওয়ে তাইহুলাইট ও তিহানে-২ বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির সুপার কম্পিউটার হিসেবে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানের খেতাব ধরে রেখেছে। বছরে দুবার গতির বিচারে সেরা ৫০০ সুপার কম্পিউটার তালিকা প্রকাশ করে টপ ৫০০ নামের প্রতিষ্ঠান। জার্মান ও মার্কিন বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিয়ে লিনপ্যাক বেঞ্চমার্কে জরিপ চালিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেন টপ ৫০০। আজ সোমবার নতুন তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
চীনের সানওয়ে তাইহুলাইটকে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির ও শক্তিশালী গণনাকারী কম্পিউটার যন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করেছে টপ ৫০০। গত বছরের জুন মাস থেকে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির কম্পিউটার হিসেবে স্থান দখল করে রেখেছে তাইহুলাইট। এর আগে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির কম্পিউটারের শীর্ষে ছিল চীনের আরেক কম্পিউটার তিহানে-২। তাইহুলাইটের আগে টানা তিন বছর বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির কম্পিউটারের খেতাব ছিল তিহানে-২-এর।
চীনের সানওয়ে তাইহুলাইট সুপার কম্পিউটারের গতি প্রতি সেকেন্ডে ৯৩ পেটাফ্লপ (১ পেটাফ্লপ= ১ হাজার টেরাফ্লপ বা ১০ লাখ গিগাফ্লপ)। এ সুপার কম্পিউটার তৈরিতে মার্কিন প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানের তৈরি কোনো চিপ বা যন্ত্রাংশ ব্যবহার করেনি চীন। অর্থাৎ, চীনের সম্পূর্ণ নিজস্ব প্রযুক্তিতে এ সুপার কম্পিউটার তৈরি।
তিয়ানহে-২ নামের কম্পিউটার তৈরিতে মার্কিন মাইক্রোপ্রসেসর নির্মাতা ইনটেলের প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছিল। তিয়ানহে-২ ছিল মাত্র ৩৩ পেটাফ্লপ গতির। পশ্চিমা প্রযুক্তির ওপর যে চীনের নির্ভরশীলতা কমছে, সানওয়ে তাইহুলাইট তা-ই প্রমাণ করে। জলবায়ু এবং জীবনবিজ্ঞান গবেষণায় ব্যবহারের জন্য চীনের উশি শহরের ন্যাশনাল সুপার কম্পিউটিং সেন্টারে এটির অবস্থান।
গতির বিচারে শীর্ষ দশ সুপার কম্পিউটারের দুটি চীনে, চারটি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত। বাকি চারটির মধ্যে জাপান, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড ও সৌদি আরবে একটি করে আছে। শুধু তালিকার শীর্ষে নয়, সেরা ৫০০ সুপার কম্পিউটারের ১৬৭টি চীনে অবস্থিত। অথচ শীর্ষ প্রসেসর নির্মাতাদের দেশ যুক্তরাষ্ট্রে আছে ১৬৫টি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গবেষণায় চীন প্রচুর অর্থ খরচ করে যাচ্ছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স ২০১৬ সালের এক প্রতিবেদনে জানায়, চীনকে হটিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির সুপার কম্পিউটার তৈরির পরিকল্পনা করছে জাপান। দেশটি এমন একটি যন্ত্র তৈরির পরিকল্পনা করছে, যা ব্যবহার করে দেশটির বিজ্ঞানীরা চালকবিহীন গাড়ি, রোবট ও ওষুধশিল্পে আরও উন্নতি করতে পারবে। সুপার কম্পিউটারের ক্ষেত্রে চীন ও দক্ষিণ কোরিয়াকে পেছনে ফেলতে ১৭ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করছে জাপান সরকার। জাপানের এই সুপার কম্পিউটার সেকেন্ডে ১৩০ কোয়াড্রিলিয়ন হিসাব সম্পন্ন করতে পারবে। অর্থাৎ, এর গতি হবে ১৩০ পেটাফ্লপস। জাপানের সুপার কম্পিউটার দেশটির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড ইন্ডাস্ট্রিয়াল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে স্থাপন করা হবে। তথ্যসূত্র: আইএএনএস।