ফাখর জামান ক্রিকেটকে খুব ভালোবাসেন। ছোটবেলায় পড়াশুনার ফাঁকে পাড়ার ক্রিকেটে খেলতেন। তবে জীবনের তাগিদে নৌবাহিনীতে যোগ দিতে হয়েছিল তাকে। ২০১৩ সাল পর্যন্ত ওই চাকরি চালিয়ে যান। এরপর নৌবাহিনী ছেড়ে ক্রিকেটে ফিরে আসেন তিনি।
ওই বছরই পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে ফাখরের অভিষেক। মুলতানের বিপক্ষে করাচি বুলসের হয়ে। কায়েদ-এ আজম ট্রফিতে অভিষেকেই জাত চিনিয়েছিলেন। চারদিনের ম্যাচটিতে প্রথম ইনিংসে ১১৪ বলে ৯টি চারে করেন ৭৯ রান। আর দ্বিতীয় ইনিংসে ১৮১ বল খেলে ১২টি চারের সাহায্যে করেন ৮৩ রান।
২৭ বছর বয়সে পাকিস্তান জাতীয় দলে অভিষেক হয় ফাখর জামানের। টি-টোয়েন্টি দিয়ে পথচলা শুরু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। চলতি বছরের ৭ জুন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অভিষিক্ত ম্যাচে মাত্র ৫ রানেই থামেন তিনি। এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন ৩টি। সর্বসাকুল্যে করতে পেরেছেন ২৬ রান।
ওয়ানডে ক্রিকেটে ফাখরের পথচলা শুরু চলতি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। পাকিস্তান নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভারতের কাছে হেরে যায়। ওই ম্যাচে ব্যাট হাতে ব্যর্থতার পরিচয় দেন আহমেদ শেহজাদ (১২)। তাতে কপাল খোলে ফাখরের। শেহজাদের পরিবর্তে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে একাদশে জায়গা পান তিনি।
প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ওই ম্যাচে ফাখরের ব্যাট থেকে আসে ৩১ রান। এরপর থেকে পাকিস্তান একাদশে খেলে যাচ্ছেন তিনি। শ্রীলঙ্কা ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ফিফটি করেছেন, রান সংখ্যা যথাক্রমে ৫০ ও ৫৭।
ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে তো আরও উজ্জ্বল ফাখর। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম সেঞ্চুরিটাও পেয়ে গেলেন তিনি। খেলেছেন ১১৪ রানের ইনিংস। ১০৬ বলে ১২টি চার ও ৩টি ছক্কায় সাজান ইনিংসটি। পাকিস্তানের বড় সংগ্রহের ভিতটা গড়ে দেন তিনিই।
চার ইনিংসে ৬৩ গড়ে নামের পাশে যোগ করেছেন ২৫২ রান (আজকের ম্যাচসহ)। ফাখর জামান নিজেকে বড় ভাগ্যবানই ভাবতে পারেন। নৌবাহিনীর চাকরিটা ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্তটা যথার্থই ছিল! নৌবাহিনীতে থাকলে তাকে ক`জনই বা চিনতেন। এখন ফাখরের খেলা দেখছে গোটা ক্রিকেট বিশ্ব। যেভাবে খেলছেন, এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবেন।