ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের লিংক প্রকল্প (সহযোগী প্রকল্প) ‘সাপোর্ট-টু-ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি প্রকল্প’ এর নির্মাণ ব্যয় ও সময় বাড়ছে। নির্মাণ ব্যয় বাড়ছে ১ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা। আর সময় বাড়ছে চার বছর।
প্রকল্পটির মূল ব্যয় ৩ হাজার ২১৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে নতুন ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ৪ হাজার ৮৬৯ কোটি ৮ লাখ টাকা। ফলে মূল প্রকল্প থেকে ব্যয় বাড়ছে ৫১ দশমিক ৩৬ শতাংশ। এছাড়া বাস্তবায়নের মেয়াদ ২০১৬ সালের ডিসেম্বর থেকে বাড়িয়ে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের জুলাই থেকে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য ২০১১ সালের ১৮ অক্টোবর একনেক সভায় ‘সাপোর্ট-টু-ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি’ নামে প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মেয়াদকালীন সময়ে (প্রায় পাঁচ বছরে) মোট বরাদ্দের অর্ধেক টাকা অর্থাৎ মাত্র ১ হাজার ৮০৮ কোটি ৫৩ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।
নির্ধারিত সময়ে নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় প্রকল্পটির প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে। প্রক্রিয়াকরণ শেষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় (মঙ্গলবার) এ প্রস্তাব প্রস্তাব উত্থাপন করা হতে পারে বলে পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা শহরের যানজট নিরসনে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। মূল প্রকল্পটির ব্যয় ৮ হাজার ৭০৩ কোটি ১১ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। এর মধ্যে ৬ হাজার ৪৪৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা ইটালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড বিনিয়োগ করবে। এছাড়া ২ হাজার ২৫৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা ভায়াবিলিটি গ্যাপ ফান্ড (ভিজিএফ) হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে।
পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) নীতিমালা অনুযায়ী মূল প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন, ইউটিলিটি স্থানান্তর ইত্যাদি কাজ অন্তর্ভূক্ত করে পিপিপি’র লিংক প্রকল্প হিসেবে বাস্তবায়নের জন্য ‘সাপোর্ট-টু-ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি’ প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। প্রকল্পটি ২০১১ সালের জুলাই থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য ২০১১ সালের ১৮ অক্টোবর একনেক সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়।
প্রস্তাবিত সাপোর্ট প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২৮ একর ভূমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণ ব্যয় মেটানো, ইউটিলিটি রিলোকেশন, অফিস বিল্ডিং নির্মাণ, যানবাহন ক্রয় (পাজেরো ৪টি, মাইক্রোবাস ২টি এবং মোটরসাইকেল ১০টি), পুনর্বাসন ব্যয় পরিশোধ, প্রশিক্ষণ, ইন্ডিপেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং, পরামর্শক সেবা, কম্পিউটার ও এক্সেসরিজ ক্রয় এবং আউট সোসিং, রেফারেল বই ক্রয়সহ বিভিন্ন কার্যক্রম করা হবে।
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ঢাকা এলিভেটেট এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজে চারটি কম্পোনেন্টে সহায়তা করা। এগুলো হচ্ছে ভূমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের জন্য বিদ্যমান ইউটিলিটি ফ্যাসিলিটি স্থানান্তর। সম্ভাব্যতা সমীক্ষা, ভূমি অধিগ্রহণ, পরিবেশ ও সামাজিক সমীক্ষা, আর্থিক মডেলিং, ট্রানজেকশন এবং আইনগত কাজে পরামর্শক সেবা প্রদান এবং পিপিপি প্রকল্পের নির্মাণ কাজে তদারকি করা।
পরিকল্পনা কমিশনে ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য জুয়েনা আজিজ পরিকল্পনা কমিশনে এ প্রসঙ্গে মতামত দিতে গিয়ে বলেছেন, ঢাকা এলিভিটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন এবং ইউটিলিটি রিলোকেশন অত্যাবশ্যকীয়। তাই লিংকড প্রকল্প হিসেবে প্রস্তাবিত সংশোধিত সাপোর্ট প্রকল্পটির অনুমোদন বিবেচনাযোগ্য।