বান্দরবান প্রতিনিধি : টানা বর্ষণে পাহাড় ধস-বন্যায় বিপর্যস্ত নগরীতে পরিণত হয়েছে পর্যটন শহর বান্দরবান। এর ফলে মঙ্গলবার (১৩ জুন) সকাল থেকে সারাদেশের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এ জেলার।
বঙ্গপসাগরে সৃষ্ট নিন্মচাপের প্রভাবে টানা বর্ষণে বান্দরবান-কেরানীহাট চট্টগ্রাম প্রধান সড়কের বাজালিয়ার বরদুয়ারসহ কয়েকটি স্থানে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে কয়েক কিলোমিটার সড়কপথ। অপরদিকে বান্দরবান-রাঙ্গামাটি সড়কের পুলপাড়া বেইলী ব্রীজ বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দূর্ভোগে পড়েছে এই পথের চলাচলকারীরা। সড়কের উপরে চলছে নৌকা। অনেকে ভ্যান গাড়ীতে করেও পার হচ্ছে তলিয়ে যাওয়া সড়কপথ।
অপরদিকে, রুমা উপজেলা সড়কের দলিয়ান পাড়া এলাকায় পাহাড় ধসে রুমা উপজেলার সঙ্গেও সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে দুদিন ধরে।
বঙ্গপসাগরে সৃষ্ট নিন্মচাপের প্রভাবে গত রবিবার থেকে বান্দরবান শহরসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে অবিরাম বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় বান্দরবানে ৩০৮ মি. মি. বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এটি সাম্প্রতিক সময়ে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড বলে জানিয়েছেন মৃত্তিকা ও পানি গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান।
এদিকে, টানা বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে বান্দরবানে সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে বান্দরবানের আর্মীপাড়া, ওয়াবদাব্রীজ, শেরেবাংলানগর, মেম্বারপাড়া, ইসলামপুরসহ আশপাশের এলাকার প্রায় দুইশতাধিক ঘরবাড়ি। বন্যায় তলিয়ে গেছে শহরের অভ্যন্তরিণ সব সড়ক। পানি বন্দি হয়ে পড়েছে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ।দূর্গত মানুষেরা স্থানীয় আল ফারুক স্কুল, শহর প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্নস্থানের ৫টি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে।
আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থানকারী জোসনা খাতুন ও মোহাম্মদ জামাল জানিয়েছেন, বন্যায় ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে গতরাত থেকেই আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন তারা। রমজান মাস হওয়ায় দূর্ভোগ বেশি পোহাতে হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তারা।
জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক জানান, দূর্যোগ মোকাবেলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বান্দরবান সদরে ৫টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সারাদেশের সঙ্গে বান্দরবানের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। জেলায় পাহাড় ধসে শিশুসহ ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত ৫ জনকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঝুকিপূর্ন স্থানে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে।