২০১৮ সালের মধ্যে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সব শর্ত পূরণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার জেনেভায় অনুষ্ঠিত আইএলও’র বার্ষিক সম্মেলনে এ প্রতিশ্রুতি দেয়ার কথা নিশ্চিত করেছে জেনেভার বাংলাদেশ মিশন সূত্র।
আইএলও’র স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী বাংলাদেশ শ্রম আইন পরিবর্তন এবং এর বিধি বাস্তবায়ন করার শর্ত দিয়েছিল আইএলও। এমনকি বাংলাদেশের রফতানি পণ্যের সবচেয়ে বড় বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়নে অগ্রাধিকারমূলক বাজারসুবিধা অব্যাহত রাখতে চাইলে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে শ্রম অধিকার নিশ্চিত করার তাগিদ দেয়া হয়। এরই মধ্যে বাংলাদেশ আইএলও’র বার্ষিক সম্মেলনে গিয়ে শর্ত পরিপূর্ণ পালনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যা দেশের পোশাক শিল্পের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, এমন শর্তে মেনে শ্রম আইনের নতুন খসড়া প্রস্তুত করার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে এ খসড়া প্রস্তুত করে আইএলও’র সঙ্গে আলোচনা করা হবে। আর আগামী ২০১৮ সালের জুনে আইএলও’র বার্ষিক সম্মেলনের আগে তা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বাংলাদেশ।
এছাড়া আগামী বছরের আগস্ট মাসের মধ্যেই রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) সংগঠন করার পূর্ণ স্বাধীনতার শর্তটির খসড়াও প্রস্তুত করে আইএলও’র বার্ষিক সম্মেলনের আগে তা বাস্তবায়নের করার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ।
জানা যায়, শ্রমে ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনের প্রক্রিয়া তরান্বিত ও সহজ করার শর্ত দিয়েছিল আইএলও। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তৎক্ষণাৎ সে শর্ত বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। এ বছর ১৭ মে এ বিষয়ে একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর প্রস্তুত করা হয় বলে জানানো হয়। এছাড়া আইএলও’র রেমিডিয়েশন কোঅর্ডিনেশন সেলকে পূর্ণভাবে চালু করার শর্ত এই জুনের শেষ দিক থেকে কার্যকর হবে বলে আশ্বস্ত করেছে বাংলাদেশ।
শ্রমিকদের বিরুদ্ধে অন্যায্য চর্চার সুষ্ঠু তদন্তের বিষয়েও শর্ত দিয়েছিল আইএলও। এ বছরের আগস্টের মধ্যে বিষয়টি জানানোর নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে।
জেনেভা সূত্র জানায়, বাংলাদেশ আইএলও-কে জানিয়েছে, শর্ত অনুযায়ী ২৬৯ জন শ্রম পরিদর্শক নিয়োগের প্রক্রিয়া ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে শেষ করা হবে। বর্তমানে একশজন পরিদর্শক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শিগগিরই আরও ১৬৯ জন পরিদর্শক নিয়োগ দেয়া হবে।
কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নে ২০১৮ সালের পরও অ্যাকোর্ড ফাউন্ডেশনের সঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বাংলাদেশ। আইএলও’র পক্ষ থেকে এ বিষয়টির অগ্রগতি জানতে চাওয়া হলে বাংলাদেশ জানায়, তৈরি পোশাক মালিক সংগঠন বিজিএমইএ এবং অ্যাকোর্ডের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। ২০১৭ সালের নভেম্বরে নাগাদ এ বিষয়ে পূর্ণ সিদ্ধান্ত জানা যাবে।