নরওয়ে সরকার সোমবার পুরো চেহারা ঢেকে রাখা হয় এমন মুসলিম পোশাক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিষিদ্ধের লক্ষ্যে একটি বিল প্রস্তাব করেছে৷ নার্সারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় অবধি সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য হবে৷
নরওয়ের ক্ষমতাসীন রক্ষণশীল এবং অভিবাসনবিরোধী দলগুলোর জোট সরকার গতবছরই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিকাব, বোরকা, মুখ ঢাকা টুপি এবং মুখোশ নিষিদ্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল৷ তারা মনে করে, ক্লাসরুমে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকের মধ্যে যোগাযোগে বিঘ্ন ঘটায় এ ধরনের পোশাক৷
দেশটির শিক্ষা এবং গবেষণা বিষয়ক মন্ত্রী এ বিষয়ে বলেন, “মুখ ঢেকে রাখে এমন পোশাক আমরা নার্সারি, স্কুল বা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাই না৷ এই পোশাক ভালো যোগাযোগের পথ রুদ্ধ করে, যা শিক্ষার্থীদের ভালো শিক্ষা দেয়ার পথে এক অন্তরায়৷”
দেশ এবং সংস্কৃতিভেদে অনেক মুসলমান নারী হিজাব পরিধান করেন৷ মূলত মাথা, চুল এবং গলা এবং ঘাড়ের খোলা অংশ ঢাকা হয় এই পোশাক দিয়ে৷ বিভিন্ন ডিজাইনের এবং রঙের হিজাব পাওয়া যায় যেগুলো পরলে চেহারা পুরোটাই দেখা যায়৷
প্রস্তাবিত এই আইনের ফলে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন, তাদের সঙ্গে আগামী কয়েকমাস আলোচনা করবে নরওয়ের কর্তৃপক্ষ৷ সেদেশের পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, আগামী বছরের বসন্তে বিলটি অনুমোদিত হতে পারে৷ প্রায় সব রাজনৈতিক দলের এই নিষেধাজ্ঞায় সমর্থন রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে৷
প্রসঙ্গত, নরওয়ের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ চাইলে এক্ষুনি স্কুলে নিকাব নিষিদ্ধ করতে পারে, তবে সে দেশের জাতীয় স্তরে এখনো এই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা নেই৷ তাছাড়া নিকাব নিষিদ্ধের আইন কেউ অমান্য করলে তার কী শাস্তি হবে তা-ও প্রস্তাবিত বিলে উল্লেখ করা হয়নি৷
নরওয়েতে নিকাব পরার চল তেমন একটা না থাকলেও মাঝেমাঝেই এই বিষয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টি হয়৷ দ্য ইসলামিক কাউন্সিল নামক মুসলমানদের প্রতিনিধিত্বকারী একটি সংগঠন নিকাব পরেন এমন একজনকে নিয়োগ করলে সেটি নিয়ে চলতি বছরের শুরুতে উত্তপ্ত বিতর্ক শুরু হয়৷ নরডিক দেশটিতে আগামী সেপ্টেম্বরে নির্বাচন৷
নিকাব নিষিদ্ধ প্রসঙ্গে সে দেশের অভিবাসী এবং একীভূতকরণ অন্তর্বর্তী মন্ত্রী পার স্যান্ডবার্গ এই বিষয়ে বলেন, “নিকাব এবং বোরকার মতো মুখ ঢেকে রাখে এমন পোশাকের কোনো স্থান নরওয়ের স্কুলে নেই৷ একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারাটা একটি মৌলিক আবশ্যকতা৷” বিবিসি