ইরানের রাজধানী তেহরানের দুটি স্পর্শকাতর স্থাপনায় হামলার পর সৌদি আরবে হামলার হুমকি দিয়েছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)। বুধবার তেহরানে হামলা চালিয়ে ১৭ জনকে হত্যার দাবি করে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক এই জঙ্গিগোষ্ঠী।
তেহরানে দেশটির বিপ্লবী প্রতিষ্ঠাতা আয়াতুল্লাহ খোমেনির মাজার ও পার্লামেন্টে আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী ও বন্দুকধারীরা হামলা চালায়। হামলায় ১৭ জন নিহত ও আরো কয়েক ডজন মানুষ আহত হয়। আইএস এই হামলার দায় স্বীকার করে ইরানের সংখ্যাগরিষ্ঠ শিয়াদের বিরুদ্ধে অারো হামলার হুমকি দিয়েছে।
তেহরানে হামলার আগে ধারণ করা এক ভিডিওতে মুখোশ পরিহিত আইএসের পাঁচ জঙ্গিকে ইরানের শিয়াদের হুমকি দিতে দেখা যায়। একই সঙ্গে সৌদি সরকারকে উদ্দেশ্য করে ওই ভিডিওতে বলা হয়, শিগগিরই তোমাদের পালা আসবে।
জঙ্গি কার্যক্রম পর্যবেক্ষণকারী মার্কিন সংস্থা সাইট ইনটেলিজেন্স গ্রুপ বলছে, ‘ভিডিওতে এক যোদ্ধা বলে, আল্লাহর অনুমতিতে ইরানে এটি হবে এই ব্রিগেডের প্রথম জিহাদ এবং আমাদেরকে অনুস্মরণের জন্য মুসলিম ভাইদেরকে আহ্বান জানাচ্ছি। আগুন যেহেতু জ্বলেছে তা নিভবে না।’
ভিডিও’র একেবারে শেষের দিকে আইএসের ওই জঙ্গি সৌদি সরকারকে বার্তা দিয়ে বলে, ‘জেনে রাখ, ইরানের পরে তোমাদের পালা আসবে। আল্লাহর কসম, আমরা তোমাদের নিজেদের গৃহে আঘাত করব… আমরা কারো অ্যাজেন্ট নই। আমরা আল্লাহর অনুগত এবং তার বার্তাবাহক। আমরা ইরান অথবা আরব উপদ্বীপের জন্য লড়ছি না। আমরা ধর্মের জন্য লড়াই করছি।’
ইরাক ও সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের হাতে। অতীতে সৌদি আরবের নিরাপত্তা বাহিনী ও দেশটির শিয়াদের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রাণঘাতী বোমা ও বন্দুক হামলা চালানোর নজির রয়েছে আইএসের।
ইরানি কর্তৃপক্ষ বলছে, তেহরানের পার্লামেন্ট ও মাজারে হামলাকারীদের পাঁচজন ইরানি নাগরিক এবং আইএস তাদেরকে নিয়োগ দিয়েছিল। এদিকে ইরানের বিপ্লবী নিরাপত্তা বাহিনী তেহরানে ওই হামলার জন্য আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী সৌদি আরবকে দায়ী করে প্রতিশোধ নেয়ার হুমকি দিয়েছে। তবে সৌদি আরব হামলায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
কাতারের সঙ্গে সৌদি নেতৃত্বাধীন ১০ দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কচ্ছেদের জেরে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। জঙ্গিবাদ সমর্থন ও অর্থায়নের অভিযোগ এনে কাতারের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের অভিযোগ আনা হলেও দোহা বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
সূত্র : রয়টার্স।