তাদের দু’জনের প্রশংসার ভাষা এখন আর কারো জানা নেই। কী শব্দে তাদের প্রশংসা করবেন। এ জন্য যে এখনও কোনো শব্দ তৈরি হয়নি! পরাজয়ই তো ধরে নিয়েছিল সবাই। ৩৩ রানে ৪ উইকেট পড়ার পর কেউ কেউ হয়তো ভেবেছিলেন, একজন, দু’জন মন ভোলানো একটা, দুটা ইনিংস খেলতে পারেন।
কিন্তু সাকিব আল হাসান আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ যা করে দেখালেন, তা ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। কিউই বোলিংয়কে কচুকাটা করে ২২৪ রানের অবিশ্বাস্য এক জুটি গড়ে তুললেন দু’জন। তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার, অথ্যাৎ সেঞ্চুরি করলেন তারা দু’জনই। জোড়া সেঞ্চুরিতে জয় না এসেই পারে না।
অবশেষে মোসাদ্দেক হোসেনের উইনিং বাউন্ডারি। তাতেই যেন গড়া হয়ে গেলো ইতিহাস। চরম অনিশ্চয়তার এক ম্যাচকে এভাবে অসাধারণ ক্যারিশমা দিয়ে জয় ছিনিয়ে নিয়ে আসলো বাংলাদেশ। নিঃসন্দেহে এর কারিগর তারা দু’জনই, সাকিব আল হাসান এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে ডেকে নেয়া হলো সাকিব-মাহমুদউল্লাহ দু’জনকেই। অসাধারণ সেঞ্চুরির পর দু’জনই ম্যাচ সেরার দাবিদার। কাকে সেরা ঘোষণা করা হবে। শেষ পর্যন্ত সাকিব আল হাসানকেই ম্যাচ সেরার জন্য ঘোষণা করা হলো। তবে, এটা হয়তো আনুষ্ঠানিকতা; কিন্তু সেরা যে তারা দু’জনই!
পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে দাঁড়িয়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এমন ব্যাটিংয়ের রহস্য সম্পর্কে বললেন, ‘আমাদের এই জুটির সবচেয়ে বড় রহস্য হচ্ছে, আমরা আসলে একে অপরের সঙ্গে খুব বেশি কথা বলিনি। আমরা শুধু ব্যাটিংটাই করতেই চেয়েছি। ইতিবাচক থাকতে চেয়েছি। শুরুতে উইকেটে খুব সুইং ছিল। যখনই সুইং বন্ধ হলো, তখন ব্যাট করা সহজ হয়ে গেলো। আমি মনে করি, এই টুর্নামেন্টে তামিম দারুণ ব্যাটিং করেছে। এ কারণে শুরুতেই তাকে হারিয়ে ফেলা আমাদের জন্য ছিল বিশাল ক্ষতির কারণ। সাকিব আর আমি চেয়েছিল শুধু গ্যাপে শট খেলতে এবং বাজে বল পেলেই সেগুলোকে বাউন্ডারির বাইরে পাঠাতে।’
ম্যান অব দ্য ম্যাচ সাকিব আল হাসান বললেন, ‘মাহমুদউল্লাহ যেমন বলেছেন, আমরা আসলে ব্যাট করার সময় খুব বেশি কথা বলিনি। আমরা আসলে শুরুতে ভাবিইনি যে, এই রান তাড়া করবো। আমরা শুধু চেয়েছিল ৪০ ওভার পর্যন্ত ব্যাট করতে। এরপর দেখতে চাইলাম আমরা কোথায় আছি। আইসিসির কোনো ইভেন্টে একটা ম্যাচ জেতা মানে অনেক বড় কিছু। এখান থেকেই আমরা সামনে এগিয়ে যাওয়ার রসদ খুঁজে পাবো।’