অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের একমাত্র জয়টি এসেছিল ২০০৫ সালে। ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত তিন জাতি ন্যাটওয়েস্ট ট্রফিতে। কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেনে অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচে অসাধারণ সেঞ্চুরি করেছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। তার ব্যাটে ভর করেই রিকি পন্টিংয়ের দলকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ।
অসিদের হারানোর সেই স্মৃতি এবং নিজের অসাধারণ সেঞ্চুরির প্রতিটি মুহূর্ত যেন এখনও গেঁথে রয়েছে আশরাফুলের মানসপটে। ঠিক ডায়েরিতে যেমন লেখা থাকে ঘটনাপঞ্জি, তেমনই। আশরাফুলের মুখেই শোনা যাক, তার সেই ডায়েরিটা।
আমার ক্রিকেট ক্যারিয়ারই শুধু নয়, বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের এক বড় অর্জন ও প্রাপ্তি এই কার্ডিফে। তাই কার্ডিফের স্মৃতি আমার মনের আয়নায় একদম সাজানো। এক মুহূর্ত চোখ বন্ধ করলেই যেন চোখের সামনে দেখতে পাই সেদিনের প্রতিটি দৃশ্যপট।
হ্যাঁ, সত্যিই কার্ডিফ একটি ইতিহাস। শুধু আমাদের ক্রিকেট ইতিহাসের জন্যই নয়, বিশ্ব ক্রিকেটে চমক বা অঘটনের ইতিহাস রচনা করতে গেলে আমাদের কথা স্বর্ণাক্ষরে লিখা থাকবে। তাই এখনো চমক জাগানো জয়, আর অঘটনের ম্যাচ বললে কার্ডিফের ওই ম্যাচটি এবং আমাদের জয়ের প্রসঙ্গই চলে আসে।
আমার জীবনের অবিস্মরণীয় এক ম্যাচ ছিল সেটা। যে ম্যাচের স্মৃতি কোনভাবেই ভোলার নয়। বলতে পারেন, ওই ম্যাচের প্রতিটি দৃশ্য আর ঘটনা আমার মনের গহীনে ভিডিও করা আছে। একটু রিওয়াইন্ড করলেই সব চলে আসে।
কে কিভাবে নেবেন জানি না, আমার মনে হয় ওই খেলায় ভাগ্য আমাদের পক্ষে ছিল। আমরা সৌভাগ্যবান ছিলাম যে, অস্ট্রেলিয়া আগে ব্যাট করেছে। উইকেট মোটেই সহজ ছিল না। খানিক ভেজা ছিল। প্রথম ১৫-২০ ওভার ব্যাট করা বেশ কঠিন ছিল।
ওই উইকেটে আগে ব্যাট করলে আমরা নির্ঘাত ১০০/১২০ থেকে ১৫০ রানে অলআউট হয়ে যেতাম। নিজেদের ভাগ্যবান বলছি এই কারণে যে, অজিরা টস জিতে আমাদের ব্যাট করতে না পাঠিয়ে নিজেরা ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
ব্যাটিংয়ে নেমে অজিরাও বেশ কিছুক্ষণ স্ট্রাগল করেছে। অজি টপ ও মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদেরও স্বচ্ছন্দে খেলতে আর হাত খুলে মারতে সমস্যা হয়েছে। তবে ওরা হয়ত ভেবেছিল, আগে শুরুর ধাক্কা সামলে উঠি। উইকেটে থিতু হই। ইনিংসকে নতুন করে সাজাই। তারপর রানের চাকা সচল করবো।
আর শেষ দিকে মেরে ইনিংসকে লম্বা চওড়া করা যাবে। তখন স্কোর বোর্ডটাও মোটা তাজা হবে; কিন্তু তা আর হয়নি। অস্ট্রেলিয়ান ইনিংস আড়াইশো‘তে আটকে যায়।
ওরা কখনোই হারের কথা ভাবেনি। অজিদের চিন্তায় একবারও উঁকি দেয়নি, আমরা জিতে যাবো। কেন আসবে বলুন? খেয়াল করলে দেখবেন, অজিরা বেশিরভাগ ক্লোজ ম্যাচ জিতে যায়। অনেক বড় দলের সাথে ক্লোজ ম্যাচ হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অজিরাই শেষ হাসি হাসে।
কাজেই ওদের বিশ্বাস ছিল, তারাই জিতে যাবে। সত্যি বলতে কি আমরাও ভাবিনি জিতবো। খেলা শুরুর আগে আর দুই ইনিংসের মাঝখানের সময়টায়ও চিন্তায়ই আসেনি আমরা জিততে পারি। আসলে এখন ২৫০ কে তেমন বড় টার্গেট মনে হয় না; কিন্তু ওই সময় অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ওই রান যে অনেক!
তাই জয়ের চিন্তা বাদ দিয়ে আমরা ভাবছিলাম কতটা ভাল ব্যাটিং করা যায়। আমাদের লক্ষ্য ছিল ভাল খেলা। বিরতিতে ড্রেসিং রুমে বলা হলো, আমরা চাই ভাল ব্যাটিং। যত বেশি সম্ভব রান করা এর বেশি কিছু নয়।
ওদিকে আমার অবস্থাও তখন ভাল না। টেস্ট সিরিজে ভাল খেলিনি। তেমন রান করতে পারিনি। আর তিন জাতি ন্যাটওয়েস্ট টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে শূন্য রানে সাজঘরে ফিরেছিলাম। তাও প্রথম বলেই আউট।
তাই সংকোচ, সংশয় নিয়েই মাঠে নামলাম। এখনো মনে আছে উইকেটে যাবার পর পুল শট মারলাম একটা। স্কোয়ার লেগ আর মিড উইকেটের মাঝখান দিয়ে চার হলো। তারপর সুইপ খেলে আরও এক বাউন্ডারি পেলাম।
এরপর আমার প্রিয় শট কভার ড্রাইভে আরেকটা চার মারলাম। মাঠে নেমে অল্প সময়ে মাঝ ব্যাট দিয়ে তিন তিনটি বাউন্ডারি- মনে হলো রানের মুখ দেখতে পারি আজ। দেখি চেষ্টা করে। আস্তে আস্তে সুমন ভাইয়ের (হাবিবুল বাশার) সাথে খেলতে শুরু করি। জুটি গড়ে ওঠে।
বিশ্বাস করুন, আমিও অল্প সময়ে ওই তিন বাউন্ডারি মারার পর কিছুটা আত্ববিশ্বাসী হয়ে উঠেছিলাম। কেন যেন জয়ের কথা মাথায় চাপলো। মনে হলো জেতা সম্ভব। আমরা জিতেও যেতে পারি। কি করলে রানের চাকা সচল রাখা যায়, আর কীভাবে ব্যাট চালালে জেতা যাবে তা মাথায় চলে আসছিল বার বার।
সুমন ভাই তা খেয়াল করলেন। আর শুধু বললেন, এখনই জেতার কথা মাথায় আনিস না তো। তুই শুধু ব্যাটিং কর। নিজের খেলা খেল। ওদিকে আমাকে তখন জয়ের নেশায় পেয়ে বসেছে। আর যা করতে চাচ্ছিলাম, তা হয়েও যাচ্ছিলো।
প্রায় প্রত্যেক ওভার, না হয় এক ওভার পর পর একটি করে বাউন্ডরি চলে আসছিল। ক্লার্ককে এক্সট্রা কভার দিয়ে চার হাঁকালাম। তারপর মাইক হাসি বোলিংয়ে আসলো, তাকে স্কুপ করে সীমানার ওপারে পাঠালাম। মোট কথা, যখনই একটু রানের তাড়া চলে আসছিল, বাউন্ডারি দরকার পড়ছিল- তখনই চারের মার বেরিয়ে আসছিল ব্যাট থেকে।
এক সময় ফিফটি হয়ে গেল। আসলে ভাগ্য ভাল ছিল আমাদের। ফিফটির পর পরই সাজঘরে ফিরে যেতে পারতাম; কিন্তু লাইফ পেলাম। গিলেস্পি আমার ক্যাচ ফেলে দিলেন। রোদের কারণে বল ঠিকমত দেখেননি। আমার বাউন্ডারি হাঁকানোর শট গিলেস্পির হাত ফস্কে বেরিয়ে গেলো। জীবন পাওয়ার পর মনে হলো, নাহ আজ আর বাজে শট খেলবো না।
একটু সতর্ক হয়ে গেলাম। সাবধানে খেলা শুরু করলাম। ততক্ষণে মাঠের আকার জানা ও বোঝা হয়ে গেছে। শট খেলতে থাকলাম দেখে ও বুঝে। দেখলাম মাঠটা স্বাভাবিকের চেয়ে একটু ছোট। সোজা ছোট। আর দুদিকে বা পাশে বেশি। আর চারকোনা বা উইকেট থেকে কোনাকুনি সবচেয়ে বড়। আমি যে বলে আউট হয়েছি, সেটা যদি সোজা খেলতাম তাহলে নির্ঘাত ছক্কা হতো। আমি কোনায় তুলে মারতে গিয়ে আউট হলাম।
পওে, মানে দ্বিতীয় সেশনে আমরা যখন ব্যাট করছিলাম, তখন যে উইকেট কত সুন্দর আর ব্যাটিং ফ্রেন্ডলি হয়ে পড়েছিল, বলে বোঝানো যাবে না। এত ভাল আর চমৎকার ব্যাটিং উপযোগী পিচ যে, গেøন ম্যাকগ্রার মত ওই সময় বিশ্বেরে অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলারের বলকেও কিছুই মনে হয়নি।
অথচ জানেন, ওই ম্যাচ শুরুর পরও মনে হচ্ছিল আমার বোধ হয় এ টুর্নামেন্টের সব ম্যাচ খেলা হবে না। সময় ভাল যাচ্ছে না। প্রথম ম্যাচে খালি হাতে ফিরেছি। এ উইকেটেও হয়ত রান করতে পারবো না। আর যেহেতু প্রথম ম্যাচে উইকেটে গিয়ে প্রথম বলে শূন্য রানে ফিরছি, আজ রান না করলে নির্ঘাত বাদ। ড্রেসিং রুম আর ডাগআউটে বসে কাটাতে হবে। পানি টানাটানি করতে হবে। পওে মাঠে নেমে আল্লাহর রহমতে ১০০ করলাম।
মাঠে উপস্থিত সবাই আমার প্রশংসায় ব্যতিব্যস্ত। আমি হয়ে গেলাম সবার মধ্যমনি। আল্লাহ মানুষকে যে জিরো থেকে হিরো বানান, রাজাকে ফকির করেন আর ফকিরকে আমির করে দেন, তা নিজের জীবন দিয়েই উপলব্ধি করলাম।
ওই ম্যাচ শুরুর আগে অমি ছিলাম জিরো। ম্যাচ শেষে হয়ে গেলাম হিরো। সবাই আমাকে নিয়ে মাতামাতি শুরু করলো। ওই ম্যাচে খেলা আমার সব শটই মনে আছে। কাকে কোথা দিয়ে কি শটে চার হাঁকিয়েছিলাম, তাও ভুলিনি। সম্ভবত আমার ইনিংসে ছিল নয়টি বাউন্ডারি (আসলে বাউন্ডারি ছিল ১১টি)। সবগুলোই সুন্দর ছিল।
মাইক হাসিকে স্কুপ করে মারা বাউন্ডারি, আর ম্যাকগ্রাকে ৯০তে প্যাডেল সুইপ করে চার হাঁকানো আর এক ম্যাকগ্রার এক ওভারে দু’বার কভারের ওপর দিয়ে দুটি চার মেরে খুব তৃপ্তি পেয়েছিলাম। কভার আর মিড অফের ওপর দিয়ে চারটি মনে বিশেষ দাগ কেটে আছে।
ম্যাকগ্রা ঠায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিলেন, বল মুহুর্তে সীমানার ওপারে চলে যাচ্ছে। আমার খুব বেশি ভাল লাগছিল তখন। এভাবে আস্থার সাথে খেলার কারণে আমার আর সুমন ভাইয়ের জুটি লম্বা হলো। রানও উঠলো বেশ।
আমরা জয়ের পথে অনেক দুর এগিয়েও গেলাম। এক সময় সুমন ভাই আউট হলেন। আমিও জয় থেকে ঠিক ২৩ রান দুরে দাঁড়িয়ে ফিরে আসলাম সাজঘরে।
তখন ১৭ বলে ২৩ রান বাকি। ঠিক ঐ ওভারে গিলেস্পিকে ওয়াইড লং অন আর ডিপ মিডউইকেটের মাঝখান দিয়ে ছক্কা হাঁকালো আফতাব। আফতাবের ওই ছক্কা মারার পর মনে হলো আমরা জিততে যাচ্ছি।
যদিও আমি আর সুমন ভাই ওভার পিছু যেমন দরকার সেভাবেই রান তুলছিলাম। তারপরও ভিতরে একটা চাপা সংশয় ছিল। বার বার মনে হচ্ছিলো অজিরা মেন্টালি খুব টাফ। মনের জোর বেশি। সহজে হাল ছাড়ে না।
এ কারণে অস্ট্রেলিয়া বেশির ভাগ সময় ক্লোজ ম্যাচ জিতে যায়। আমরা জয়ের ভীত মজবুত করে দেবার পরও তাই চাপা সংশয় ছিল। কারণ অনেককে দেখেছি প্রতিপক্ষের ২০ বলে ২৫ রান দরকার থাকা অবস্থায়ও অস্ট্রেলিয়া জিতে যায়।
জয়ের ঠিক আগের মুহুর্তেও ভাগ্য আমাদের পক্ষে আসলো। রফিক ভাই বাই রান নিতে গিয়ে অল্পের জন্য রান আউটের হাত থেকে বেঁচে গেলেন। ওই ম্যাচে ভাগ্য আরেকবার সঙ্গী হলো। থ্রো লাগলে রফিক ভাই নির্ঘাত আউট হয়ে যেতেন।
তারপর তো জিতে গেলাম। অবিস্মরনীয় মুহূর্ত। বলে বোঝাতে পারবো না, কি যে খুশি লাগছিল তখন! বাঁধ ভাঙ্গা জোয়ারের মত উচ্ছাস-উল্লাস আর আনন্দ। জয়োল্লাসটা বেশি হলো একটা বিশেষ কারণে।
আসলে আমরাও খানিক চাপে ছিলাম। ইংলিশ মিডিয়া আমাদের বেশ বাঁকা চোখেই দেখছিল। আমাদের সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। প্রথম ম্যাচে ১৯০ করে ১০ উইকেটে হেরেছি। বৃটিশ মিডিয়ার ভাবখানা এমন ছিল যে, আমরা কিছুই পারি না। একদম অকারণে খেলতে এসেছি। আমাদের যোগ্যতা-সামর্থ্য কিছুই নেই।
কার্ডিফের এক জয়ে বদলে গেল সব দৃশ্যপট। ম্যাচ জেতার পর সবাই আমাদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। ওই ম্যাচ জেতার সঙ্গে সঙ্গে সব সমলোচনা বন্ধ হয়ে গেল। উল্টো সবাই আমাদের পক্ষে কথা বলতে শুরু করলো। বললো না, এদেরও সামর্থ্য আছে। আফতাব, মাশরাফি আর আমার কথা বলা হলো, এসব তরুণরা পারে ভাল খেলতে। ম্যাচ জিততে। একটু সময় দিলে আরও ভাল হবে।
জেতার পরে রাস্তা ঘাট, হোটেল- সর্বত্র আমাদের সম্মান অন্যরকম বেড়ে গেলো। কদরও পেতে থাকলাম বেশি করে।
আমার একটি ঘটনা খুব বেশি মনে পড়ছে। প্রধান নির্বাচক ফারুক ভাই (সাবেক প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ) আমাকে একটি কথা বলে গিয়েছিলেন। আমাদের টেস্ট সিরিজ শেষে ওয়ানডে টুর্নামেন্ট শুরুর ঠিক আগে দেশে চলে এসেছিলেন ফারুক ভাই। দেশে ফেরার আগে একটা কথা বলে গিয়েছিলেন, ‘শোন আশরাফুল তুই ছয়টা ম্যাচই খেলবি। অন্তত একটা পঞ্চাশ করবি।’ এই কনিফেডেন্সটা দিয়ে আসছিলেন ফারুক ভাই। আজও মনে হয় কত বেশি আস্থা আর বিশ্বাস ছিল আমার ওপর।
কার্ডিফে আমার ম্যাচ জেতানো সেঞ্চুুরির পর ফারুক ভাই ফোনে আবেগতাড়িত গলায় বললেন, ‘আরে কোচ ডেভ হোয়াটমোর তোরে ড্রপ দিতে চায়, ও কি জানে কে ম্যাচ জিতাইবো বাংলাদেশরে?’ ফারুক ভাই আর সুমন ভাই সাপোর্ট দিয়েছেন।
কার্ডিফের জয়ের ম্যাচের আরও দুটি ঘটনা খুব বেশি মনে পড়ে, অস্ট্রেলিয়ানরা কিন্তু এমনিতে খুব স্লেজিং করে। নানাভাবে ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ করে মনোযোগ নষ্ট করার চেষ্টা করে। এটা ওটা বলে আস্থায় চিড় ধরানোর চেষ্টা করে; কিন্তু আমাদের তেমন স্লেজিং করেনি। আমার ধারণা, ওরা আসলে চিন্তায়ই করেনি, আমরা জিততে পারি।
তা যে করেনি, তার প্রমাণ শুনুন- কার্ডিফে জেতার পরের খেলায় ঠিক স্লেজিং করেছিল। কার্ডিফে জয়ের পর সব অজি ক্রিকেটারই ধন্যবাদ- ওয়েল প্লেইড বলেছেন। আমাদের অনেকেই সাফল্যের ম্মৃতি চিহ্ন হিসেবে উইকেট উপড়ে নিচ্ছিলো। হঠাৎ দেখি অস্ট্রেলিয়ান উইকেটরক্ষক ও ওপেনার গিলক্রিস্ট একটা স্ট্যাম্প নিয়ে আমার দিকে আসছেন। তারপর আমার পিঠ চাপড়ে আর হাত মিলিয়ে অন্য হাতে স্ট্যাম্প দিয়ে বললেন, ‘গ্রেট ইনিংস। এটা রেখে দাও স্মৃতি হিসেবে থাকবে। এ ম্যাচের স্ট্যাম্প তোমারই প্রাপ্য।
কার্ডিফের ওই ঐতিহাসিক জয়ের পরের ম্যাচটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল আমাদের জন্য। কারণ ওই ম্যাচে মুখ থুবড়ে পড়লে সবাই ভাবতো অস্ট্রেলিয়ার সাথে জয়টি ‘ফ্লুক।’
পরের ম্যাচে ইংলিশরা ৩৯১ করছিল ওই ম্যাচে। আমাদের দরকার ছিল ভাল খেলা। সে ম্যাচে আমি আরও ভাল খেললাম। একদম হাড্ডাহাড্ডি লড়াই না হলেও আমার অ্যাটাকিং ব্যাটিংয়ে (৫২ বলে ৯৪) আমরা সম্মানজনক স্কোর (২২) করলাম। আল্লাহর রহমতে ভাল খেলায় আর আগের জয়টাকে কেউ ফ্লুক ভাবতে পারেনি। খেলা শেষে ইংলিশ ওপেনার মার্কাস ট্রেসকোথিক এসে আমার হাতের স্ট্যাম্প তার হাতে নিয়ে দেখেছিলেন।