কি আছে বাংলাদেশের ভাগ্যে? চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে গ্রুপ পর্বের বেড়া ডিঙাতে পারবে মাশরাফির দল? না, বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড ম্যাচ দুটি শেষ না হওয়া পর্যন্ত এসব প্রশ্নের উত্তর মিলানো যাচ্ছে না কোনোভাবেই। তবে বাংলাদেশ শিবিরে আপাতত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালের স্বপ্ন অটুট রয়েছে। মঙ্গলবার রাতে (৬ জুন) বাংলাদেশের সেই স্বপ্নকে আরেকটু সতেজ করল ইংল্যান্ড।
এ রাতে নিউজিল্যান্ডকে ৮৭ রানে হারিয়ে সবার আগে আসরের সেমিফাইনালের টিকেট কেটে ফেলেছে স্বাগতিক দলটি। সেই সুবাদে ৪ দলের গ্রুপ টেবিলের তলানিতে চলে গেছে নিউজিল্যান্ড। রান গড়ের হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান নিউজিল্যান্ডের ওপরে। ফলে ৯ জুন যদি নিউজিল্যান্ডকে ধরাশায়ী করতে পারে বাংলাদেশ, আর ১০ জুন যদি অস্ট্রেলিয়াকেও বধ করতে পারে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ইংল্যান্ড; তাহলে ইংল্যান্ডের সঙ্গী হয়ে গ্রুপ-এ থেকে বাংলাদেশ চলে যাবে সেমিফাইনালে।
একবুক আশা নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মঞ্চে হাজির হয়েছিল বাংলাদেশ। তা যেমন ছিল দলের ক্রিকেটারদের, তেমনি কোটি কোটি বাংলাদেশি ভক্তেরও। কিন্তু আসরের প্রথম ম্যাচেই ৩০৫ রানের সংগ্রহ গড়েও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে বসে মাশরাফিবাহিনী; বাংলাদেশের ‘ভালো করার’ স্বপ্ন রং হারায়। এরপর সোমবার (৫ জুন) অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স নেই। ম্যাচ জিততে চলেছিল অস্ট্রেলিয়ানরা। তবে বৃষ্টির কৃপায় শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি পণ্ড হয়। নিশ্চিতভাবে হারতে বসা ম্যাচে উল্টো একটি পয়েন্ট যোগ হয় বাংলাদেশের ভাণ্ডারে।
বৃষ্টিতে পণ্ড হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড ম্যাচও। ফলে দুই দলের ভাণ্ডারে যোগ হয়ছিল একটি করে পয়েন্ট। বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ার পয়েন্ট দাঁড়ায় ২ ম্যাচ ২। অন্যদিকে, ২ ম্যাচে বাংলাদেশের পয়েন্ট হয় ১; নিউজিল্যান্ড এক ম্যাচে এক পয়েন্ট। বাংলাদেশের সেমিফাইনাল সম্ভাবনা জাগিয়ে রাখতে তাই মঙ্গলবার রাতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের হার জরুরি ছিল। শেষ পর্যন্ত কার্ডিফের মাটিতে তা-ই হয়েছে।
আগে ব্যাটিং করে সম্মিলিত চেষ্টায় অলআউট হওয়ার আগে (৪৯.৩ ওভারে) ৩১০ রান করে ইংল্যান্ড। সর্বোচ্চ ৬৪ রান আসে জো রুটের ব্যাট থেকে। দ্বিতীয়ে সর্বোচ্চ ৬১ রান (অপরাজিত) করেন জস বাটলার। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে অ্যাডাম মিলনে ও কোরে অ্যান্ডারসন ৩টি করে উইকেট নেন।
জবাব দিতে নেমে ইংলিশ বোলারদের বিপক্ষে সুবিধা করতে পারেনি নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা। অধিনায়ক কেইন উইলিয়ামসন ৮৭ রান করলেও বাকিরা বড় ইনিংস খেলতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত ৪৪.৩ ওভারে ২২৩ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। দলকে জয় এনে দেওয়ার পথে ৪টি উইকেট নেন ইংল্যান্ডের লায়াম প্লাঙ্কেট। এ ছাড়া ২টি করে উইকেট নেন জ্যাক বল ও আদিল রশিদ।
এ ম্যাচ শেষে ২ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষ দল হিসেবে সেমির টিকেট পেয়েছে ইংলিশরা। সমান ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশ রয়েছে তৃতীয় স্থানে, রান গড়-০.৪০৭। চতুর্থ স্থানে থাকা নিউজিল্যান্ডের রান গড়-১.৭৪০।
সেমিফাইনালের টিকেট হাতে পেতে চাইলে তাই নিজেদের শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে হারাতেই হবে বাংলাদেশের। অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়াকে হারতে হবে ইংল্যান্ডের কাছে। এর বাইরে অন্য কোনো ফলে কাজ হবে না।
নিঃসন্দেহে ক্রিকেটপ্রেমী কোটি কোটি বাংলাদেশির হৃদয়ে বাংলাদেশকে সেমিতে দেখার প্রার্থনাই চলছে এখন!