মেয়ের মৃত্যুর কারণ জানতে বাবা-মা চেয়েছিলেন তার ফেসবুক পোস্ট এবং মেসেজ ঘেঁটে দেখতে৷ এজন্য ফেসবুকের শরণাপন্ন হন তারা৷ ফেসবুক দিতে অস্বীকার করলে হাজির হন আদালতে৷ কিন্তু আদালত তাদের বিপক্ষে রায় দিয়েছেন৷
ট্রামের ধাক্কায় মেয়ের মৃত্যু হয়েছে সেই ২০১২ সালে৷ কিন্তু সেটা কি নিছক দুর্ঘটনা ছিল নাকি আত্মহত্যা তা নিশ্চিত হতে পারেননি বাবা-মা৷ ১৫ বছর বয়সি কিশোরীর অভিভাবকরা তাই চেয়েছিলেন মৃত সন্তানের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রবেশের অধিকার, যাতে বিভিন্ন জনের সঙ্গে তার চ্যাট এবং পোস্ট ও মন্তব্য ঘেঁটে তারা দেখতে পারেন যে মেয়ে কোথাও কখনো আত্মহত্যার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল কিনা৷
ফেসবুক অবশ্য তাদের সেই অধিকার দেয়নি৷ ফলে বিষয়টি গড়ায় আদালতে৷ ২০১৫ সালে বার্লিনের নিম্ন আদালত অভিভাবকের পক্ষে রায় দেন৷ কেননা, আদালতের বিবেচনায় সেই কিশোরীর ফেসবুক পোস্ট এবং মন্তব্যকে তার ডায়েরির সঙ্গে তুলনা করা হয় এবং সেটা অভিভাবকরা পড়তে পারেন বলে জানায়৷ কিন্তু ফেসবুক সেই যুক্তি মানেনি৷ ফলে বিষয়টি গড়ায় বার্লিনের আপিল আদালতে৷
গত বুধবার আপিল আদালত বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পক্ষে রায় দিয়েছে৷ ফেসবুক আদালতে জানায় যে, কিশোরীর অ্যাকাউন্টে তার অভিভাবকের প্রবেশের সুযোগ দিলে যারা তার সঙ্গে চ্যাট করেছিল তাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার ক্ষুণ্ন হবে৷ আদালত এই যুক্তি মেনে নিয়েছেন৷
তবে বিষয়টি এত জলদি সুরাহা হয়ে যাচ্ছে, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই৷ বরং গণমাধ্যম জানাচ্ছে, মৃত সন্তানের ফেসবুকে প্রবেশের অধিকার সংক্রান্ত এই মামলা জার্মানির সর্বোচ্চ আদালত অবধি গড়াতে পারে৷ ফেসবুক অবশ্য বলেছে, তারা মৃত কিশোরীর পরিবারের আবেগের দিকটাও বোঝে৷ ফলে ভবিষ্যতে হয়ত এমন একটা উপায় বের করা যেতে পারে যাতে পরিবারের দাবিও পূরণ হবে আবার অন্যদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকারও সুরক্ষিত হবে৷ কিন্তু সেটা কীভাবে সম্ভব তা বিস্তারিত এখনো জানায়নি ফেসবুক৷
উল্লেখ্য, ফেক নিউজসহ নানা ইস্যুতে গত কয়েক মাস ধরেই জার্মানিতে আলোচনায় রয়েছে ফেসবুক৷ বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটিকে আরো নিয়মনীতির মধ্যে আনতে সরকার উদ্যোগী হলেও অনেকক্ষেত্রেই আদালত প্রতিষ্ঠানটির পক্ষেই রায় দিচ্ছে৷ কিছুদিন আগে চ্যান্সেলর ম্যার্কেলের সঙ্গে এক শরণার্থীর ছবির অপব্যবহার রুখতে সেই শরণার্থী মামলা করলে রায় ফেসবুকের পক্ষে যায়৷ ডিডব্লিউ