কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত অত্যাধুনিক নৌযান অ্যাডভাঞ্জার-৫ আকষ্মিক আগুনে পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে। শ্রমিকরা জাহাজটিতে কাজ শেষ করে স্থান ত্যাগের আধা ঘন্টার মাথায় এই অগ্নিকান্ড সংগঠিত হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বরিশাল ও নলছিটি ফায়ার সার্ভিসে অন্তত ৬ টি ইউনিট একযোগে কাজ করে। কিন্ত আগুনের ব্যপ্তি অনেক বেশি হওয়ায় নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছিল না।
ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (৬ জুন) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে নলছিটির দপদপিয়া ইউনিয়নের কীর্তনখোলার তীরে। তবে কিভাবে আগুনের সূত্রপাত তা তাৎক্ষণিক নিশ্চিত হওয়া যায়নি। রাত সাড়ে ১০ টার সর্বশেষ খবরে বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা জানিয়েছে আগুনে নিয়ন্ত্রণ নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে তাদের তৎপরতা চলছে আগুন বন্ধে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, জাহাজটিতে সন্ধ্যার আগে অন্তত ৭০ থেকে ৮০ জন শ্রমিক কাজ করে। মাগরিবের আজানের আগ মুহূর্তে তারা ইফতারের উদ্দেশে কাজ শেষ করে চলে যায়। এর দেড় থেকে দুই ঘন্টার মাথায় রাত সাড়ে ৯ টার দিকে জাহাজটিতে আগুন জ্বলে ওঠে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওই আগুন জাহাজের সর্বত্র ছড়িয়ে পরে। ফলে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে শুরু হাইহুতাশ। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, আসন্ন ঈদ-উল ফিতরে এই জাহাজটি বরিশাল-ঢাকা নৌরুটে দিনের বেলায় যাত্রী পরিবহন করার কথা ছিল।
মূলত সেই কারণে জাহাজটিতে অধিক শ্রমিক খাটিয়ে কাজ সম্পন্নের প্রস্তুতি নেন পরিচালক নিজাম মৃধা। যদিও ঘটনার পর তাকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি বা তার আনুষ্ঠানিক কোন মতামতও পায়নি প্রশাসন বা মিডিয়াকর্মীরা। তবে তার পরিবারের দাবি লঞ্চটির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আর মাত্র ৫ থেকে ৭ দিন পরেই নদীতে ভাসানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। যার দরুণ শেষ সময়ে জাহাজটিতে এসি বসানোর কাজ চলছিলো। সরেজমিনের দেখা গেছে অগ্নিকান্ডের জাহাজটির সবগুলো এসি আগুন লাগার ফলে বিস্ফোরিত হয়েছে। ফলে সেখানে কর্মরত শ্রমিকরা কান্নায় ভেঙে পড়ে। তাদের ধারণা জাহাজটিতে ইলেকট্রিসিটির কাজ এতটা নিখুতভাবে করা হয়েছে সেখান থেকে আগুন লাগার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।
কিন্তু এরপরেও এই আগুন লাগায় তারা রহস্যের গন্ধ পাচ্ছেন। এমতাবস্থায় শ্রমিকরা ধারণা করছে কোন ব্যক্তি বিশেষের আক্রশের আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে অন্তত ৫ কোটি টাকায় নির্মিত আধুনিক এই নৌযানটি। তবে সংশ্লিষ্ট নলছিটি থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস প্রশাসন প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে কোন মন্তব্য করছে না। বরং মিডিয়ার কাছে তাদের অভিব্যক্তি হচ্ছে, তাৎক্ষণিক কোন মন্তব্য করা যাচ্ছে না বা ঠিক হবে না। আগুন নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর পর্যালোচনা করা হবে সূত্রপাত কি।’’