মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর এলাকায় বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ভেঙ্গে যায় মনু নদের প্রতিরক্ষা বাঁধ। লোকালয়ে প্রবেশ করতে শুরু করে পানি। এলাকার মানুষ বিষয়টি দেখে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেয়া হয়। আর তাতে সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসে সর্বস্তরের গ্রামের মানুষ। সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে রাতভর প্রাণান্ত-চেষ্ঠায় রোধ করা সম্ভব হয় সৃষ্ঠ ভাঙনের। আর তাতে রক্ষা পায় উপজেলার হাজীপুর ও শরীফপুর ইউনিয়নের কমপক্ষে ২০টি গ্রাম ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি থেকে।
নিশ্চিন্তপুর গ্রামের আবুল কালাম, আব্দুল লতিফ, আব্দুল হান্নান, লেদু মিয়া, এলাইচ, রবিউল হাসান ছায়েদ জানান, রাত ১২ টার পর থেকে নিশ্চিন্তপুর এলাকায় মনু নদের প্রতিরক্ষা বাঁধ এলাকা দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ শুরু করে। তাৎক্ষণিকভাবে মসজিদের মাইকে ঘোষণা করার পর গ্রামের মানুষ এগিয়ে আসে। সেহরির আগ পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে মানুষ ভাঙন রোধ করতে সফল হয়।
প্রায় ১০০ মিটার এলাকা জুড়ে এই ভাঙনের সৃষ্টি হয় বলে জানান নিশ্চিন্তপুর গ্রামের মানুষ। স্থানীয় লোকজন জানান, যদি ভাঙন রোধ করা সম্ভব না হতো, তাহলে উপজেলার হাজীপুর ও শরীফপুর ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর, মাদানগর, ভূঁইগাঁও, আলীপুর, দত্তগ্রাম, সোনাপুর, ইসমাইলপুর, রনচাপসহ কমপক্ষে ২০টি গ্রামে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হত। এমনকি প্রাণহানিরও আশঙ্কা ছিলো।
মনু নদের ৩৯টি স্থানকে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু জৈষ্ঠ্যমাস অতিবাহিত হতে চলেছে, তারপরও ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ মেরামতে কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এ নিয়ে জনমনে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এব্যাপারে শরীফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জুনাব আলী বলেন, তিনি বিষয়টি জেনেছেন। আমি বিষয়টি বারবার পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ও উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। আবার পানি বাড়লে এই স্থান দিয়ে বন্যার পানি লোকলয়ে প্রবেশ করবে।
এব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিজয় ইন্দ্র শংকর চক্রবর্তীর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাজীপুর ও শরীফপুর ইউনিয়নে মনু প্রতিরক্ষা বাঁধ এলাকায় নিয়োজিত উপসহকারী প্রকৌশলী মো. সাহাদাৎ হোসেন জানান, নিশ্চিন্তপুর এলাকায় যে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে বলো হচ্ছে এটা খুব উদ্বেগের বিষয় না। আমি সকালে সরেজমিন পরিদর্শণ করে এসেছি। একটু পানির ফ্লো ছিলো। মানুষ বস্তা দিয়ে তা আটকে দিয়েছে। নির্বাহী প্রকৌশলীর ফোন বন্ধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, স্যারের স্ত্রী অসুস্থ তাই ফোন বন্ধ।