হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : প্রত্যাশা ছিল আকাশ চুম্বি। স্বপ্নের নগরী হবে হবিগঞ্জ। এখানকার পরিবেশ হবে প্রকৃতির মতই সুন্দর ও ঝকঝকে। কিন্তু সেই প্রত্যাশা কতটুকু পূরণ হয়েছে শহরবাসীর। স্থানীয়রা বলছেন, পৌর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে প্রত্যাশার এক তৃতীয়াংশও পূরণ হয়নি। শহরের বড় বড় সমস্যা এখনও সমস্যাই রয়ে গেছে। বিশেষ করে যানজট আর অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা শহরের প্রধান দুটি সমস্যা। অথচ এই দুটি সমস্যা সমাধন করার কোনো মাথাব্যথাই নেই কর্তৃপক্ষের।
মাত্র এক রাতের টানা বর্ষণে হবিগঞ্জ শহর জলাবদ্ধ ও কাদার নগরিতে পরিণত হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন শহরবাসী। বুধবার রাত থেকে থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত হবিগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় টানা বর্ষণ চলে। এতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। সেই সাথে বিভিন্ন এলাকায় রাস্তায় কাদা জমে যায়।
শহরের নিম্নাঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ এখন পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া শহরের শায়েস্তানগর, ইনাতাবাদ, সার্কিট হাউজ রোড, পুলিশ সুপারের বাস ভবন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও বাস ভবন, পুরাতন হাসপাতাল সড়ক, দানিয়ালপুর, বগলবাজার, মোহনপুর, শ্যামলী, নিউ মুসলিম কোয়ার্টার, সিনেমা হল রোড, উত্তর শ্যামলী, নোয়াবাদ, পিটিআই রোড, বিকেজিসি স্কুল, চিড়িয়াকান্দি এলাকা, বেবীস্ট্যান্ড, গার্নিং পার্ক, কালিগাছ তলা, নয়াহাটিসহ বিভিন্ন এলাকায় পানি প্রবেশ করে আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়। ফলে, মানুষের ভোগান্তি চরম আকারে পৌঁছে। অনেক বাসা-বাড়িতে পানি ঢুকে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
অফিসগামী ও স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের পানি ভেঙে অফিস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হয়েছে।
এদিকে, শহরের প্রধান কাঁচা বাজার চৌধুরী বাজার পানিতে তলিয়ে যাওয়ার ফলে ক্রেতা বিক্রেতারা বিপাকে পড়েছেন। পানির নিচে পড়ে অনেক শাক সবজি ফলমূল নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে ব্যবসায়ীদের।
অপরদিকে, ভারি বর্ষণের কারণে স্থানে স্থানে বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটছে। ফলে জনসাধারণের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।
স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, পানিনিষ্কাশনের সুব্যবস্থা না থাকায় একটু বৃষ্টি হলেই শহরে জলাবদ্ধতার সাথে কাদায় পরিণত হয় শহর।
জলাবদ্ধতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় আনুয়ার হোসেন নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘শহরের জলাবদ্ধতা দূর করার জন্য অনেক টাকা খরচ করে নর্দমা নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও যদি জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়, তাহলে নর্দমা নির্মাণের দরকারই কি ছিল?’
পথচারী আব্দুল্লাহ্ খান বলেন, ‘অপরিকল্পিতভাবে নর্দমা নির্মাণের কারণে সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ, আশপাশের এলাকা থেকে পানি মূল নর্দমায় আসার কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। এ ছাড়া শাখা নর্দমাগুলোও সংস্কার করা হয়নি। এতে অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।’
এ ব্যাপারে পৌরমেয়র আলহাজ্ব জিকে গউছ বলেন, ‘পৌরসভার জনবলের অভাব আছে। এ কারণে সময়মতো নর্দমাগুলো পরিষ্কার করা যায় না। তাই বৃষ্টির পানি সহজে সরতে পারে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বৃষ্টির পানি সহজে না সরতে পারার কারণে রাস্তার বিভিন্ন স্থানে কাদায় পরিণত হয়েছে। তবে দ্রুত এগুলো সরানোর ব্যবস্থা করা হবে।’