কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে এক সপ্তাহ্ ধরে অনশনের পর সিঁথির সিঁদুর জয় করলো সুরবালা রায় শিল্পী নামের এক এনজিও কর্মী। সুরবালার অনশনের কারণে পলাতক প্রেমিক অমল চন্দ্র বর্মন বাধ্য হয় ফিরে আসে। পরে বুধবার (৩০ মে) রাতে উভয়ের পরিবার, এলাকাবাসী, স্থানীয় ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে মহা ধুমধামে তাদের বিয়ে হয়।
এদিকে বিয়ের কাজ সম্পন্ন হওয়ায় প্রেমিকা সুরবালা খুশি হলেও খুশি হতে পারেনি অমল চন্দ্র বর্মন। তবুও সুখের সংসার গড়ার প্রত্যয় এ প্রেমিক যুগলের।
এলাকাবাসী জানায়, কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের বানছারাম গ্রামে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়ীতে অনশন শুরু করে সুরবালা রায় শিল্পী (২৫) নামের এক এনজিও কর্মী। গত ২৪ মে রাত ১০টার দিকে বিয়ের দাবি নিয়ে প্রেমিক অমল চন্দ্র বর্মনের বাড়িতে আসলে প্রেমিক কৌশলে পালিয়ে যায়। এরপর থেকে অমল চন্দ্রের পরিবারের লোকজন নানা কৌশল করেও ঐ যুবতীকে বাড়ি থেকে বের করে দিতে ব্যর্থ হয়। অন্যদিকে বিয়ে না হলে ছেলের পরিবারকে আত্মহত্যার হুমকী দিতে থাকে সুরবালা রায় শিল্পী। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে প্রতিদিনই প্রেমিকার অনশন স্থলে বাড়তে থাকে এলাকাবাসীর ভীড়।
ঘটনাটি নিয়ে শহরজুড়ে তোলপাড় শুরু হলে উপায়ান্ত না পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুস ছালাম, সবুজ ও মোগলবাসা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান বাবলু প্রেমিককে হাজির করে তড়িঘড়ি করে বিয়ের ব্যবস্থা করে দেয়। পরে বুধবার রাতে পারিবারিক ভাবে তাদের বিয়ের কাজ সম্পন্ন করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের বানছারাম গ্রামের নিবারন চৌধুরীর ডিগ্রী পাশ ছেলে অমল চন্দ্র রায়ের সাথে দুর্গাপুর ইউনিয়নের গোড়াই মন্ডলপাড়া গ্রামের সম্বারু চন্দ্র বর্মনের মেয়ে সুরবালা রায়ের দীর্ঘ ৪ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। গত এক বছর ধরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সুরবালা রায়ের সাথে বহুবার দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলে প্রেমিক অমল চন্দ্র। বিষয়টি জানাজানি হলে প্রেমিকার পারিবারের পক্ষ থেকে ছেলের পরিবারকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে ছেলের পরিবার তা প্রত্যাক্ষান করে। এ অবস্থায় প্রেমিক অমল চন্দ্র নানা টালবাহানার পাশাপাশি অন্যত্র বিয়ে করার চেষ্টা চালায়। এর একপর্যায়ে উপায়ান্ত না পেয়ে বিয়ের দাবিতে ছেলের বাড়িতে অবস্থান নেয় সুরবালা রায় শিল্পী।
প্রেমিকা সুরবালা রায় শিল্পী বলেন, দীর্ঘ সংগ্রামের পর বিয়ের পীড়িতে বসতে পেরে খুশি হয়েছি। আমি সকলের কাছে আর্শিবাদ চাই যেন আমি আমার মনের মানুষকে নিয়ে সুখী হতে পারি।
প্রেমিক অমল চন্দ্র বর্মনের কাছে তার অনুভুতি জানতে চাইলে কোন কথা না বলে মাথা নেড়ে তার সম্মতির কথা জানিয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে প্রেমিক অমল চন্দ্রের পিতা নিবারন চৌধুরীর ছেলের বিয়ের ব্যাপারে কোন অনুভুতি প্রকাশ না করলেও প্রেমিকা সুরবালা রায় শিল্পীর পিতা সম্মারু চন্দ্র বর্মন মেয়ের বিয়েতে খুব খুশি বলে অনুভুতি ব্যক্ত করেছেন।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আব্দুস ছালাম বলেন, চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনা করে তাদের বিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুস সোবহান বলেন, ছেলের বাড়িতে প্রেমিকার অনশনের ঘটনাটি শোনার পর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে।