স্বামীর ভয়াবহ নির্যাতনে পঙ্গু হয়ে গেছেন রাশেদা বেগম। তালাকপ্রাপ্ত হয়ে ফিরে এসেছেন বাপের বাড়ি। তার কাছ থেকে আলাদা করা হয়েছে সন্তানদের। ক্রাচে ভর করে বয়ে বেড়াচ্ছেন ক্ষত-বিক্ষত পঙ্গুত্ব জীবন। নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে নতুন করে জীবন সাজাতে চান তিনি। জীবনযুদ্ধে ঘুরে দাঁড়াতে চান তিনি। শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার তাতিহাটি ইউনিয়নের উত্তর ষাইটকাকড়া গ্রামের মৃত সনু শেখের মেয়ে রাশেদা তার জীবনের ফেলে আসা কিছু ঘটনা তুলে ধরেন এ প্রতিনিধির কাছে।
রাশেদার বাবা মারা গেছেন অনেক আগেই। মা অন্যর বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে সংসার চালাতেন। রাশেদার বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী রহমতপুর গ্রামের তুফানো শেখের ছেলে বাবুল মিয়ার সঙ্গে। দাম্পত্য জীবনে দুই ছেলে ও এক মেয়ের মা হন তিনি। স্বামী ছিল জুয়াড়ি। বিয়ের সময় যৌতুক নিয়েছিলেন ৬০ হাজার টাকা। দিয়েছিল নানা আসবারপত্র। এরপরও টাকার জন্য মাঝে মাঝে নির্যাতন করা হতো তাকে। প্রায় একবছর আগে তাকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়। ভেঙে দেওয়া হয় এক হাত ও এক পা। এরপর তাকে তালাক দিয়ে ঘর থেকে বের করে দেন জুয়াড়ি স্বামী। রেখে দেন তার নাড়িছেঁড়া ধন তিন সন্তানকে। সহায় সম্বলহীন নির্যাতিত এ নারী মায়ের কাছে কাটাচ্ছেন দুঃসহ জীবন। এখন ঘুরে দাঁড়াতে চান তিনি। সামান্য দুই হাজার টাকা দিয়ে শুরু করেছেন ভাপা পিঠার ব্যবসা। জীবনের নির্মম কষাঘাত থেকে নিজেকে সফল করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি পাড়া প্রতিবেশী বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তাদেরকেও সফল করতে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
রাশেদার প্রত্যাশা সরকারি বা বেসরকারি সহায়তা পেলে বদলে দিতে পারবেন এ জীবন। সমাজে যোগ হবে এক নতুন সংগ্রামী নারী। এবার জেলা ও উপজেলা মহিলা অধিদপ্তর থেকে অন্বেষণে বাংলাদেশ কার্যক্রমের আওতায় তাকে জয়িতা হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে। তার এ জীবনকাহিনী এখন পিছিয়ে পড়া নারীদের জন্য পাথেয়।