সাভার প্রতিনিধি : সাভার পৌর এলাকার মধ্যগেন্ডা মহল্লার জঙ্গি আস্তানায় অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে ১০টি বোমা। এর মধ্যে সাতটি গ্রেনেড ও তিনটি সুইসাইডাল ভেস্ট ছিল বলে জানা গেছে। এ ছাড়া যে ভবনটিতে জঙ্গিরা আস্তানা গেড়েছিল, তার মালিক ব্যাংক কর্মকর্তা সাকিবকে জিজ্ঞাসাবাদের আটক করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, সকাল ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে ঢাকা থেকে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছে। এরপর বেলা ১১টা থেকে মূল অভিযান শুরু করা হয়। এ সময় গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এরপর শুরু হয় অভিযান। বেলার সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত বাড়িটির ভেতর থেকে একে একে ১০টি বোমা নিষ্ক্রিয় করেন বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা। সর্বশেষ গ্রেনেডটি বিস্ফোরণের সময় পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। দুপুর আড়াইটার দিকে অভিযান শেষ হয়।
এদিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. এনামুর রহমান জানান, মাত্র ১৫ দিন আগেই ওই এলাকায় জঙ্গিবিরোধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরই মধ্যে এত বড় জঙ্গি আস্তানার সন্ধান আমাকে হতবাক করেছে। তাই তিনি জঙ্গি মোকাবিলায় সমাজের সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম জানান, জঙ্গি আস্তানায় অভিযান শেষ হয়েছে। সেখানে যে দশটি বোমার বিস্ফোরণ হয়েছে এর মধ্যে সাতটি গ্রেনেড ও তিনটি সুইসাইডাল ভেস্ট ছিল। এ ছাড়া প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাড়ির মালিক ব্যাংক কর্মকর্তা সাকিবকে আটক করা হয়েছে। বিস্তারিত সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানানো হবে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার রাতে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের দুটি দল ও ঢাকা জেলা পুলিশের শতাধিক সদস্য পৌর এলাকার মধ্যগেন্ডা মহল্লার ব্যাংক কর্মকর্তা সাকিবের নির্মানাধীন ছয়তলা ভবনের দোতালার একটি ফ্ল্যাটে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় সেখান থেকে বেশ কিছু বোমা তৈরির সরঞ্জামাদি, জিহাদি বই ও ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়। ফ্লাটটিতে খাওয়ার জন্য গরম ভাত ও তরকারি চুলায় থাকলেও পুলিশের উপস্থিতিতে গা-ঢাকা দেয় জঙ্গিরা। তবে ফ্ল্যাটটির একটি কক্ষে থাকা বড় ব্যাগে বোমা ও অপর একটি তালাবদ্ধ থাকায় ভেতরে জঙ্গি সদস্যরা অবস্থান করতে পারে বলে ধারণা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর আগে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে পৌর এলাকার নামা গেন্ডা মহল্লার আনোয়ার মোল্ল্যা নামের এক ব্যক্তির পাঁচতলা ভবনের নিচতলায় অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত কমিশনার জাহিদ হোসেনের নেতৃত্বে দুটি দল ও ঢাকা জেলার প্রায় শতাধিক পুলিশ ওই বাড়িতে ঘণ্টাব্যাপী তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করেও কোনো কিছু উদ্ধার কিংবা কাউকে আটক করতে পারেনি।