সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
রোজা একটি মহান ইবাদত। সওয়াবের আশাবাদী রোজাদারের সওয়াব আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেন না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “বনি আদমের প্রত্যেকটি কাজের সওয়াব তার নিজের জন্য; রোজা ছাড়া। রোজা আমার জন্য; আমিই রোজার প্রতিদান দিব।”[সহিহ বুখারী (১৯০৪) ও সহিহ মুসলিম (১১৫১)]
রমজানের রোজা ইসলামের একটি রোকন। রোজা ফরজ হোক অথবা নফল হোক একজন মুসলমানের রোজা পালনে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত; যাতে সে আল্লাহর কাছ থেকে উপযুক্ত প্রতিদান পেতে পারে।
রোজার অনেক সুন্নত রয়েছে। যেমন-
এক:
রোজাদারকে কেউ গালি দিলে অথবা তার সাথে ঝগড়া করলে এর বিনিময়ে তার সাথে ভাল ব্যবহার করে বলবে: “আমি রোজাদার”।
দুই:
রোজাদারের জন্য সেহেরী খাওয়া সুন্নত। সেহেরীর মধ্যে বরকত রয়েছে।
তিন:
অনতিবিলম্বে ইফতার করা সুন্নত; আর দেরিতে সেহরী খাওয়া সুন্নত।
চার:
কাঁচা খেজুর দিয়ে ইফতার করা; কাঁচা খেজুর না পেলে শুকনো খেজুর দিয়ে; শুকনো খেজুরও না পেলে পানি দিয়ে ইফতার করা সুন্নত।
পাঁচ:
ইফতারের সময় এই দোয়াটি পড়া
“ذَهَبَ الظَّمَأُ وَابْتَلَّتِ الْعُرُوقُ، وَثَبَتَ الْأَجْرُ إِنْ شَاءَ اللَّهُ”
“তৃষ্ণা দূর হয়েছে; শিরাগুলো সিক্ত হয়েছে এবং প্রতিদান সাব্যস্ত হয়েছে; ইনশাআল্লাহ”।
ছয়:
রোজাদারের বেশি বেশি দু’আ করা মুস্তাহাব। দলিল হচ্ছে- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “তিন ব্যক্তির দু’আ ফিরিয়ে দেয়া হয় না। ন্যায়পরায়ণ শাসক। রোজাদার; ইফতার করার পূর্ব পর্যন্ত। মজলুমের দু’আ।
মুসনাদে আহমাদ (৮০৪৩), মুসনাদ কিতাবের পাঠোদ্ধারকারী সম্পাদকগণ হাদিসটিকে অন্যান্য সহায়ক সনদ ও হাদিসের ভিত্তিতে ‘সহিহ’ বলেছেন।
ইমাম নববী (রহঃ) বলেছেন:
রোজাদারের জন্য রোজাপালনকালে নিজের জন্য, প্রিয় মানুষের জন্য এবং সকল মুসলমানের দুনিয়া ও আখেরাতের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দু’আ করা মুস্তাহাব।[আল-মাজমু (৬/৩৭৫)]
সাত:
রোজার দিন নিম্নোক্ত বিষয়গুলো পালন করা মুস্তাহাব:
– মসজিদে বসে বসে কুরআন তেলাওয়াত করা ও আল্লাহর যিকির করা।
– শেষ দশদিন ইতিকাফ করা।
– তারাবীর নামায আদায় করা।
– বেশি বেশি দান সদকা করা।
– পরস্পর কুরআন অধ্যয়ন করা। সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিমে ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেন: “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন শ্রেষ্ঠ বদান্য মানুষ। তিনি সবচেয়ে বেশি বদান্য হতেন রমজান মাসে; যখন জিব্রাইল (আঃ) তাঁর সাথে সাক্ষাত করতেন। জিব্রাইল (আঃ) প্রতি রাতে তাঁর সাথে সাক্ষাত করতেন এবং একে অপরকে কুরআন পাঠ করে শুনাতেন। নিশ্চয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুক্ত বাতাস চেয়ে অধিক বদান্য ছিলেন।”
-অনর্থক ও বেহুদা কাজে সময় নষ্ট না করা; যা তার রোজার উপর প্রভাব ফেলতে পারে যেমন অতিরিক্ত ঘুম, অতিরিক্ত ঠাট্টা মশকরা ইত্যাদি। নানা রকম খাবারদাবার নিয়ে ব্যতিব্যস্ত না হওয়া। কারণ রোজা পালনকালে এগুলো তাকে অনেক নেকীর কাজ করা থেকে বিরত রাখবে।