কলামিস্টঃ আর.এম।
পায়রা পোষ মানে এবং সব জায়গা ঘুরে আবার নিজের ঠিকানায় ফিরতে সক্ষম তাই বলে কি এই পাপ কর্ম থেকেও তার রেহাই হবেনা?
অনলাইনে নিজটি দেখে অবাক যতটুকু হয়েছি তার চেয়ে বেশি লজ্জিত যে আমি নিজেও মানুষ!
দূর থেকে দেখে কোনও সন্দেহ হয়নি নিরাপত্তা রক্ষীদের। হওয়ার কথাও নয়। কিন্তু, শক্তিশালী ক্যামেরায় পায়রার ছবিটা ধরা পড়তেই তৈরি হয় সন্দেহ। ক্যামেরায় দেখা যায়, পায়রার পিঠের উপর কিছু একটা আটকানো রয়েছে। এমনিতেই সীমান্ত এলাকা। ফলে সন্দেহ আরও জোরালো। তড়িঘড়ি পায়রাটিকে নামানোর চেষ্টা শুরু হয়। দ্রুততার সঙ্গেই পাকড়াও করা হয় হালকা নীলচে রংয়ের শান্তির দূতকে। সন্দেহভাজনকে নিজেদের ‘হেফাজতে’ নেওয়ার পর রীতিমতো চক্ষু চড়কগাছ জর্ডনের শুল্ক দফতরের আধিকারিকদের। পায়রার পিঠে বাঁধা নীল বাধা রংয়ের থলির মধ্যে মেলে ১৭৮টি মাদকের বড়ি।
জর্ডনের শুল্ক দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘ড্রাগ পাচারের কাজে পায়রাকে ব্যবহার করা হচ্ছে, এই খবর আমাদের কাছে ছিল। কিন্তু, এই প্রথম ড্রাগ পাচারের ‘অভিযোগে’ কোনও পায়রাকে আটক করা হল।’’ ইরাক সীমান্তের কাছে পায়রাটিকে আটক হয়। ফলে ড্রাগ সীমান্ত পারে চালান করা হচ্ছিল কি না, তা নিয়েও তদন্ত শুরু হয়েছে।
কলম্বিয়ার পুলিশ ২০১১ সালের এপ্রিলে একটি পায়রাকে কারাগার এলাকা থেকে আটক করেছিল। পিঠে কোকেন ও গাঁজার ভারে এটি উড়তে পারছিল না।
২০১৫ সালে কোস্টারিকায় কোকেন চোরাচালানে কাজে পায়রাকে ব্যবহার করার ঘটনা সামনে এসেছিল।
ভারতের কাশ্মীর সীমান্তে মাস কয়েক আগে গোপন ক্যামেরা লাগানো একটি পায়রাকে আটক করেছিলেন নিরাপত্তা রক্ষীরা। চরবৃত্তি চালানো জন্য পাক সেনা এই কাজ করেছিল বলেই সেক্ষেত্রে সন্দেহ করা হয়েছিল
নানা দেশের ইতিহাসেই চিঠি চালাচালিতে প্রশিক্ষিত পায়রা ব্যবহারের নজির আছে। পায়রা কখনও বয়ে আনত প্রেমপত্র, কখনও বা রাজদরবারে গুপ্তচরের বার্তা। কিন্তু সে তো কোন প্রাচীন কালের কথা। তার পর ডাকব্যবস্থার আধুনিক থেকে আধুনিকতর হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ডাক পায়রারা অতীত হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ইতিহাসের ধনও কিছুই যায় না ফেলা। আজও অত্যাধুনিক নজরদারি ব্যবস্থাকে বোকা বানানোর চেষ্টায় নানা ভাবে ব্যবহার হয় প্রাচীন পদ্ধতি। সোজা পথে না হোক, বাঁকা পথে তো বটেই।