কলামিস্টঃ আর.এম।
গরমে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে কিন্তু চাহিদার তুলনায় বিদ্যুতের ঘাটতি এতটাই বেড়েছে যে পরিস্থিতি হঠাৎ করেই বেশ শোচনীয় আকার ধারণ করেছে। লোডশেডিংয়ের অত্যাচারে দেশজুড়ে মানুষ এক অসহনীয় অবস্থার মধ্যে পড়েছে। পরিস্থিতি সহনীয় হতে আরও তিন-চার দিন সময় লাগবে বলে সরকারের তরফে বলা হচ্ছে। আর রোজার আগে স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে আশ্বাস দেওয়া হলেও বর্তমান বিদ্যুৎ ঘাটতি ও সামগ্রিক বিদ্যুৎ পরিস্থিতি মনে প্রশ্ন ছুড়ে দেয়।
বর্তমানে বিদ্যুৎ ঘাটতির মূল কারণ গরমে চাহিদা বেড়ে যাওয়া এবং একই সঙ্গে অনেকগুলো বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ থাকা। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়েছে রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য। রোজার সময়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন নিরবচ্ছিন্ন রাখতেই এই উদ্যোগ। কিন্তু এই উদ্যোগের পরিকল্পনায় নিশ্চিতভাবেই সমস্যা রয়েছে। রোজা হুট করে এসে হাজির হয়নি। ফলে রোজার মাসটিকে বিবেচনায় রেখে নেওয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের উদ্যোগ আরও আগে থেকে এবং ধারাবাহিকভাবে শুরু করা উচিত ছিল। তাহলে একসঙ্গে এতগুলো বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ থাকত না।
বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে সরকার নানা পরিকল্পনা ও মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সাধুবাদ জানাই তাকে। কিন্তু সরকারের পরিকল্পনা ও লক্ষ্য অর্জনের সময়সীমার সঙ্গে বাস্তবের অনেক ফারাক রয়েছে। ১৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জনের সাফল্য সরকার গত বছর উদ্যাপন করেছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে সর্বোচ্চ ৯ হাজার ২০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়নি। এখানে কোথাও শুভংকরের ফাঁকি রয়ে গেছে।
বর্তমান পরিস্থিতি সরকার মোকাবেলা করে জনগনকে দেয়া আশা পুরন করতে পারবে নাকি তাও শুভংকরের ফাঁকি হয়ে যাবে এই প্রশ্ন এখন সবার মনে।
বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা নিয়ে আত্মতৃপ্তিমূলক তথ্য-উপাত্তের চেয়ে জনগণ বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ চায়। আশাকরি এটা সরকার নজরে রাখবে।