রাজধানীর বনানী থানা এলাকায় দুই তরুণী ধর্ষণের ঘটনায় আলোচনা শেষ না হতেই অন্য এক যুবতী (২৯) ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন। ওই যুবতী তার প্রেমিক মাহমুদুল্লা হাসান শাহীন ওরফে জুয়েলের (৩০) নামে সোমবার (২২ মে) বনানী থানায় এ অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, মাহমুদুল্লার সঙ্গে ভিকটিমের ফেসবুকে পরিচয় থেকে প্রেম। পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বনানীর একটি হোটেলে নিয়ে ওই যুবতীর সঙ্গে শরীরিক সম্পর্ক করে তার নগ্ন ছবি তোলে অভিযুক্ত আসামি মাহমুদুল্লা। এ মামলা দায়েরের পর ওই যুবতীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এনে তদন্তের স্বার্থে বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সোমবার (২২ মে) বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মাহমুদুল্লা হাসান শাহীন ওরফে জুয়েলের (৩০) বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে বনানী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ওই যুবতী। (মামলা নম্বর- ২৯।)
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত মাহমুদুল্লার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। এক বছর আগে রাজধানীর মিরপুরের বাসিন্দা ওই যুবতীর সঙ্গে মাহমুদুল্লার ফেসবুকে পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে গত বছরের ১৬ নভেম্বর মাহমুদুল্লা ঢাকায় বেড়াতে আসেন। তখন তিনি ওই ভিকটিমের সঙ্গে যোগাযোগ করে মহাখালীর হোটেল জাকারিয়া ইন্টারন্যাশনালে নিয়ে যান। পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে রাতেই ওই যুবতীর সঙ্গে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক করেন মাহমুদুল্লা।
ওই প্রেমিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন ওই যুবতী। ঘটনার দিন ওই নারীর অজান্তেই কিছু নগ্ন ছবি তোলেন প্রেমিক, যা অনলাইনে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে আবার শারীরিক সম্পর্কের জন্য ব্ল্যাকমেইল করছিল বলে অভিযোগ করেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, ঘটনার দিন হোটেলের রিসিপশনে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে ভাড়া নেয়। এরপর মাহমুদুল্লা ওই যুবতীকে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে বিয়ে করা সম্ভব না বলে জানান। তখন ওই যুবতী বের হয়ে যেতে চাইলে জোরপূর্বক আটকে তার সাথে শারীরিক সম্পর্কের কথা বলেন মাহমুদুল্লা। বিয়ের প্রলোভনে এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। পরে বাদী ঘুমিয়ে গেলে তার অজান্তেই নগ্ন ছবি তোলেন মাহমুদুল্লা। পরদিন ১৮ নভেম্বর সকালে তারা হোটেল থেকে বের হয়ে যান। পরে মাহমুদুল্লাকে বিয়ের কথা বললে আর রাজি হননি বরং সে ওই ছবি ইউটিউব ও ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে আবার শারীরিক সম্পর্কের জন্য ব্ল্যাকমেইল করছে বলে অভিযোগ করেন ভিকটিম।
মামলার পরপরই সোমবার বিকেলে ওই নারীকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠিয়েছেন বনানী থানা পুলিশ।
এ প্রসঙ্গে ঢামেক ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের সমন্বয়কারী ডা. বিলকিস বেগম দ্য রিপোর্টকে বলেন, ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ভিকটিমের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। কিছুদিন পর রিপোর্ট পাওয়া যাবে।
বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল মতিন দ্য রিপোর্টকে বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ভিকটিমকে মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট আমরা এখনো হাতে পাইনি। তবে ব্যাপারটি ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।