স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘দেশের উন্নয়ন থমকে যাবে যদি আমরা আমাদের সন্তানদের রক্ষা করতে না পারি; আমাদের মেধাকে রক্ষা করতে না পারি। জেলের কয়েদীদের ২০ শতাংশই মাদক আইনে গ্রেফতার। তাই আমাদের ছেলে-মেয়েদের নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না। তাদের রক্ষা করতে হবে।’
তিনি আরো বলেছেন, ‘ঐশির মতো অনেক মাদকসেবী পথ হারিয়েছে। এমন যাতে আর না হয় সেজন্য আমাদের একটি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’
পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার ধূপখোলা মাঠে শুক্রবার (১৭ মে) সন্ধ্যায় মাদক ও সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেছেন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ওয়ারি বিভাগ এই সমাবেশের আয়োজন করে।
সমাবেশে মাদক সেবন ও বিক্রি থেকে ফিরে আসা ২৫ জনকে পুরস্কার এবং নতুন চাকরি দেওয়া হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেছেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর থেকেই এ দেশে মাদক আসে। আমরা ফেনসিডিল আনা বন্ধে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আশা করছি, তা বন্ধ করা সম্ভব হবে। কিন্তু আরেকটি মাদক আছে যেটা কি-না এখন অহরহ পাওয়া যাচ্ছে; সেই ইয়াবা আসে প্বার্শবর্তী দেশ মায়ানমার থেকে। তারা তা বন্ধের আশ্বাস দিলেও প্রকৃতপক্ষে কোনো শক্ত পদক্ষেপ নেয়নি। তাই বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে এগুলো প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছে।’
সন্তানরা কি করে তা লক্ষ্য রাখার জন্য অভিভাবকদের প্রতি আহবান জানিয়ে তিনি বলেছেন, “আমরা জঙ্গি পুরোপুরি দমন করতে পারিনি, তবে নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। আমরা কখনো বলিনি যে জঙ্গিবাদ পুরোপুরি নির্মূল করতে পেরেছি। যারা ’৭৫-এর পর থেকে রগকাটার রাজনীতি করেছে তারাই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের জন্ম দিয়েছে। হুজি, জেএমবি, আনসারুল্লাহ বাংলাটিম, নব্য জেএমবি এগুলো সব একই সূত্রে গাঁথা। এসব জঙ্গিরা বিদেশ থেকে আসেনি, এরা আইএস না। এগুলো দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ। দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করার জন্যই এ চক্রান্ত করা হচ্ছে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেছেন, “আমরা সারাদেশ খুঁজেও আইএস বা আল কায়দার কোনো অস্তিত্ব পাইনি। অথচ প্রতিটি ঘটনার পরই একটি বিদেশি সাইট এসব ঘটনার সঙ্গে আইএস ও আল কায়দার সংযোগ আছে বলে বিবৃতি দিচ্ছে। আসলে এটি একটি নতুন পাঁয়তারা। এখন বিশ্বের কোথাও গেলে মুসলিমদের আলাদা লাইনে দাঁড় করায়। বিশ্বে একটি প্রবাদ লক্ষ্য করা যায় ‘অল হিউম্যান আর নট টেরোরিস্ট, বাট অল টেরোরিস্ট আর মুসলিম।’ এটা চিন্তার বিষয়। ছোট ছেলে-মেয়েরা তেমন কিছুই জানে না কিন্তু আরেকজনের কথায় বেহেশত লাভের আশায় তারা এ ধরনের কাজ করছে।’
সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন- বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক, ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ, ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লা, ঢাকা-৪ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাত ও সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ।