আলাউদ্দিন শাহরিয়ার,
বান্দরবান:
প্রাতভ্রমণকারীদের কারও মনে হতে পারে পাহাড়ি পথে লেগেছে লাল-হলুদ-নীল-সোনালী আগুন। এ আগুনে কোনো কৃত্রিমতা নেই, এ যে প্রকৃতির দান। কেউবা ভাববেন লাল বেনারশি পরা নববধূর সজ্জায় কারও অপেক্ষায় আছে বান্দরবান। অপেক্ষাই তো তার স্বভাব।
সারাবছরই কতজনেই না তার কাছে আসে বা আসতে চায়। এভাবে দিনের একেক সময় একেক রূপে হাজির হয় রঙিন শহরটি।
পর্যটক মুখরিত জেলাটির প্রবেশপথ বান্দরবান-চট্টগ্রাম সড়কের হলুদিয়া থেকে জেলা শহরের বিভিন্ন সড়কে রাস্তার দুই পাশে এখন শোভা পাচ্ছে কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, অশোক, সোনালু ও জারুলসহ নানা রঙ-রূপ-ঘ্রাণের ফুল।
শুধু স্থানীয়রা নন বেড়াতে আসা পর্যটকরাও ফুলে ফুলে সাজানো বান্দরবান দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন। এমনই দুইজন সূচনা আফরোজ ও মেহরাজ। এ দম্পতি বলেছেন, ‘পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখতে এসে রাস্তার দু’পাশে ফুলে ফুলে সাজানো বান্দরবান দেখলাম। সত্যিই দেখতে অসাধারণ লাগছে। বিশেষ করে কৃষ্ণচূড়ার লালরাঙা সৌন্দর্যের বর্ণনা করা অসম্ভব।
কৃষ্ণচূড়ার লাল আভায় জেগে ওঠেছে পাহাড়ি জেলা বান্দরবান। মনে হচ্ছে লাল বেনারশি পরা নববধূর সাজে সজ্জিত হয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে কারো অপেক্ষায়।
জানা গেছে, ২০০৩ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান ভূঁইয়া ও বান্দরবান বিভাগীয় বন কর্মকর্তা অভনী ভূষণ ঠাকুর সড়কের সৌন্দর্য বর্ধণে শহরের প্রবেশদ্বার হলুদিয়া থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের গাছ লাগিয়েছেন। কয়েক বছরের মধ্যে গাছগুলো বেড়ে ওঠে। বসন্ত ও গ্রীষ্মে পাল্টে দেয় শহরের দৃশ্য।
স্থানীয় বাসিন্দার ফয়সাল এবং জাকির জানিয়েছে, বান্দরবানকে ফুলের শহর হিসেবে গড়ে তোলার বহুদিনের স্বপ্ন ছিলো। এখন তা বাস্তবে পরিণত হয়েছে। এ উদ্যোগ ও পরিকল্পনা পাহাড়ি জেলার সৌন্দর্যকে আরও প্রস্ফুটিত করেছে।
জেলা আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, সড়কসহ শহরের সৌন্দর্য বর্ধণে বিভিন্ন ধরণের ফুলের গাছ লাগানোসহ বনায়ন কার্যক্রম অব্যাহত রাখা দরকার। এতে সড়কের স্থায়িত্ব রক্ষা পায়, দুর্ঘটনা রোধ হয় ও জেলার সৌন্দর্য অনেকাংশে প্রস্ফুটিত হয়।
বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মো. কামাল হোসেন জানিয়েছেন, বান্দরবান-চট্টগ্রাম প্রধান সড়কসহ অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর দুইপাশে চলতি বছরে নতুন করে গাছ লাগানোর সরকারিভাবে কোনো বরাদ্দ নেই। তারপরও বৃষ্টির সময় জুন মাসে সড়কের দুপাশের খালি জায়গাগুলোতে সৌন্দর্য বর্ধণে ফুলের গাছ লাগানো হবে। এছাড়াও রাস্তার পাশে নতুনভাবে কোথাও গাছ লাগানোর সুযোগ থাকলেও সেখানেও লাগানো হবে।