রবিবার , ১৪ মে ২০১৭ | ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. Featured
  2. অন্যান্য খেলার সংবাদ
  3. অন্যান্য ধর্ম
  4. অপরাদ
  5. অর্থনীতি
  6. অলটাইম নিউজ লেটার
  7. আইটি টেক
  8. আইন – আদালত
  9. আইন শৃংখলা বাহিনী
  10. আন্তর্জাতিক
  11. আবহাওয়া বার্তা
  12. ইসলাম
  13. উদ্যোগ এবং পরিবর্তন
  14. ওয়েবসাইট
  15. কবিতা

“আজ বিশ্ব মা দিবস” কিন্তু কোন মুখ নিয়ে যাব আমরা মায়েদের সামনে?

প্রতিবেদক
alltimebdnews24 com
মে ১৪, ২০১৭ ৪:১৭ অপরাহ্ণ

কলামিস্টঃ আর-এম।

আজ বিশ্ব মা দিবস। তাই অনেকটা ঘটা করেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবাই বিভিন্ন পোষ্ট দিচ্ছে, ছবি দিচ্ছে, অনেক আবেগের কথা শেয়ার করছে। আজ মাকে নিয়ে আরেকবার আবেগাপ্লুত হব, মায়ের কাছে যাব! কিন্তু কোন মুখ নিয়ে যাব আমরা আমাদের মায়েদের সামনে?

মনে হচ্ছে আমাদের মা জাতী আমাদের মুখের ওপরে ছুড়ে মারবেন সংবাদপত্রগুলো, আর বলবেন, এই দেখো, কেমন রেখেছ তোমরা আমাদের, কোন মুখে তোমরা মা দিবসের কথা বলো, নারী দিবসের কথা বলো!

বনানীর হোটেলকক্ষে আটকে রেখে অস্ত্রের মুখে নির্মমভাবে নির্যাতন-ধর্ষণ করা হয়েছে দুজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে। সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সেই ভয়ংকর রাতের বিবরণ শেষ পর্যন্ত পাঠ করা কঠিন! কী ভয়াবহ, কী অমানবিক, কী নিষ্ঠুর! যারা ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা ‘ধনীর দুলাল’। নানা মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ‘একটি মহল’ অপরাধীদের সুরক্ষা দেবার চেষ্টা করেছে। বনানী থানা মামলা নিতে চায়নি, অপরাধীদের গ্রেপ্তারে তাদের চেয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহলের চেষ্টা ছিল বেশি। একটা কাগজে পড়লাম, অপরাধ সংঘটনের পর অপরাধীরা নিজেরা বলেছে, তাদের নামে একাধিক খুনের মামলা আছে, তারা দেশের প্রধান স্মাগলার, কেউ তাদের কিছু করতে পারবে না। কী ভয়ংকর স্পর্ধা! আরেক কাগজে পড়লাম এক অভিযুক্তের বাবার সাক্ষাৎকার, তিনি বলছেন, যুবা বয়সে এমন হয়েই থাকে, তিনিও নাকি…। সর্বনাশ! আমরা জানি, খারাপ পুঁজির মতো ভয়ংকর আর কিছু নেই; তা কেবল ভালো পুঁজিকে অপসারণ করে তা-ই নয়, দেশের আইনকানুন, মূল্যবোধ, সামাজিক ন্যায়বিচারকেই ধূলিসাৎ করতে চায়। বাংলাদেশে এই লুটেরা পুঁজিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারতে হবে। কে করবে তা? তা করবে সুশাসন, আইনের শাসন, ভালো রাজনীতি, দক্ষ প্রশাসন। কিন্তু খারাপ টাকা এসবকেই তো নস্যাৎ করতে চায় সবার আগে। ফলে কাজটা কঠিন হয়ে পড়ে।

আশার কথা হলো জনমত। আশার কথা রাজপথের প্রতিবাদ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উচ্চারিত জনগণের মনের বিক্ষোভ। সমাজকে প্রতিবাদ করতে হবে, গণমাধ্যমকে উচ্চকণ্ঠে প্রতিবাদ জানাতে হবে। অতীতে ইয়াসমিন হত্যাসহ অনেকগুলো ধর্ষণ ও খুনের প্রতিকার পাওয়া গিয়েছিল জনগণ সোচ্চার হয়েছিল বলে। দিল্লিতেও নির্ভয়া ধর্ষণ ও খুনের বিচার হয়েছে, তার কারণ ভারতবাসীর প্রতিবাদ। শেষ পর্যন্ত লেগে থাকতে হবে। এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত দেশবাসী, সমাজের সচেতন অংশ হাল ছাড়বে না। বিচার হলে, দৃষ্টান্তমূলক সাজা নিশ্চিত করা গেলে অপরাধীরা নিরুৎসাহিত হয়। মেয়ে এবং বাবা যে দেশে ন্যায়বিচার চেয়ে প্রতিকার না পেয়ে ট্রেনের নিচে আত্মহত্যা করে, সে দেশে একটুখানি নমনীয় হওয়ার অবকাশ নেই। যে দেশে পুলিশ দুজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর আনা এই ধরনের একটা ভয়াবহ মামলাকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে, সে দেশে জাগ্রত জনতার একটুখানি জিরোনোর সুযোগ নেই।

আশার কথা, পুলিশের উচ্চমহল তৎপরতা দেখিয়েছে, রাজনীতির উচ্চমহলও ন্যায়বিচার ও শাস্তির পক্ষে। তবু সাবধান করে দিতে চাই, প্রভাবশালী বলে, ধনাঢ্য বলে যেন বিচার ব্যাহত করার চেষ্টা করা না হয়। বাংলাদেশের পলিমাটি বর্ষায় নরম, কিন্তু চৈত্রে এই মাটি ইস্পাতের মতো দৃঢ় আর গনগনে হয়ে ওঠে।

বলছি বটে, এ হলো খারাপ পুঁজির আস্ফালনের নমুনা, বলছি বটে, এ হলো বাজে প্যারেন্টিং বা অভিভাবকত্বর ফল, কিন্তু তা-ই একমাত্র কারণ নয় নারী নির্যাতনের, ধর্ষণের। সবখানে, শহরে, গ্রামে, উঁচু তলায়, নিচের স্তরে, ঘরে আর ঘরের বাইরে—কোথায়ই বা নারী নিরাপদ? কবীর সুমন গান লিখেছেন, আমার শহরে এসেছে মেয়েটা হালচাল জানা নেই, বিশ্বাস করে বসলো কেন যে তিনটি পুরুষকেই? পুরুষ কিংবা নপুংসকের রয়েছে গায়ের জোর, তিন থেকে ছয় পুরুষের জয় ধর্ষণে রাতভোর। সুমন লিখেছেন, আমার শহর কুণ্ঠিত বড়ো ক্ষমা করো তুমি মেয়ে, পুরুষ বলেই গাইছি এ গান শুধু মার্জনা চেয়ে।

আজ মা দিবস, আজকের দিনে আমদের সব পুরুষদের শুধু একটা কাজই করা উচিৎ, মা জাতির সামনে হাতজোড় করে ক্ষমা চাওয়া।

(Visited ২ times, ১ visits today)

সর্বশেষ - অর্থনীতি