জবি প্রতিনিধি : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নবম ব্যাচের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নীরব ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। হাসপাতালের বেডে শুয়েই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হল সঙ্কটসহ নানা সমস্যাগুলো তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে খোলা চিঠি লিখেছেন।
তার চিঠিটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
খোলা চিঠি……!
বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ মমতাময়ী দেশমাতা, ১৬ কোটি বাঙালির অভিভাবক, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কে..!
মা! জানি না আমার এই গুরুত্বহীন কিছু কথা আপনার দৃষ্টি গোচর হবে কিনা! তার পরেও কারো জন্য না হোক আমার নিজের জমানো কষ্ট আর ধরে রাখতে না পেরে অব্যক্ত কথাগুলা আজ ব্যক্ত করলাম।
আমি মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত একজন রোগি। লেখাটা একটু বড়। এতটা অসুস্থতার মধ্যেও অনেক কষ্ট করে কথাগুলা লিখেছি, বেশ কয়েকবার বমিও হয়েছে তার পরেও লিখেছি। আমার অনুরোধ সবাই কষ্ট করে হলেও একটু পড়বেন।
আমি এএইচ মোকলেছুর রহমান (হাসান)। বাবা মায়ের ৪ সন্তানের মধ্যে সবার ছোট। ২০১০ সালে সাতক্ষীরা পি এন হাই স্কুল ও কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে জি.পি.এ-৫ পাই। সেইবার ২০১০ সালে যশোর বোর্ড মানবিক বিভাগে সাধারণ গ্রেডের বৃত্তিতে যশোর বোর্ডের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করি (রোল: ২৫০১২৯)। ২০১২ সালে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে জি.পি.এ-৪.৬০ পাই। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় আশানুরূপ ও কাংখিত ফলাফল না পাওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি। যে কারণে প্রথমবার ভার্সিটির ভর্তি পরীক্ষাতে তেমন কোন আশানুরুপ ফলাফল করতে পারিনি। ভেঙে পড়লাম না। নিজের মনকে বোঝালাম ভেঙে পরলে চলবে না। ঠিক এমন সময় আমার বাবা গুরুতরভাবে মোটামুটি ২-৩ বার হার্ট স্ট্রোক করেন। তার পরেও নিজের মনকে আরো শক্ত করলাম ভালো কোন ভার্সিটিতে আমাকে চান্স পেতেই হবে। সিদ্ধান্ত নিলাম ঢাকা যেয়ে কোচিং করবো। তার পরে ২০১৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকাতে আশি। কথা গুলা না বললেই নয় সে জন্য বলতে হলো। কারণ বাস্তব জীবন কাকে বলে সেটা অনুধাবন করার সুযোগ তখনো আসেনি। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি তে ইউসিসি ভর্তি হলাম ও তেজকুনি পাড়া একটি হোস্টেলে উঠলাম। থাকা ও খাওয়ার জন্য চুক্তি করলাম প্রতি মাসে ৫০০০ টাকা। ভার্সিটি অ্যাডমিশনের প্রস্তুতি শুরু করলাম। তারপরেও মাথায় একটা কথাই ঘুরপাক খায়, বাবা অসুস্থ…! বাসা থেকে প্রায়ই খবর পেতাম, বাবার শরীর তেমন ভালো যাচ্ছে না। আবার এদিকে মাসের শেষ হবার পথে। মাস শেষ হলেই আবার হোস্টেলে টাকা দিতে হবে। আগেই বলে রাখি বাবার আর্থিক অবস্থা ভালো না। আবার বাবার এই অসুস্থতা। কিছুই বুঝতে পারলাম না কি করবো। ঠিক করলাম আমাকে নিজেই কিছু একটা করতে হবে অর্থ যোগানোর জন্য। কিন্তু এদিকে আবার আমি ২য় বারের মত ভার্সিটি অ্যাডমিশন ক্যান্ডিডেট। যদি পড়াশুনা না করি তবে ভালো কোন ভার্সিটিতে ভর্তি হতে পারবো না। তার পরেও নিজেকে বোঝালাম পরিবারের দিকে তাকিয়ে হলেও আমাকে কিছু একটা করতে হবেই, বাবাকে বাঁচিয়ে রাখতে তার মুখের হাসিটুকু দেখতে আমাকে এটা করতেই হবে। যা হোক মাথায় একটা পরিকল্পনা আসলো, আমি যে হোস্টেলে থাকতাম সেখানে প্রায় ১০০-১২০ জনের মত ছাত্র থাকত। আমি হোস্টেলের ম্যানেজারের সাথে যোগাযোগ করে আমার সমস্যার কথা খুলে বললাম এবং এটাও বললাম আপনার হোস্টেলে মাসে অনেক হলুদ ও মরিচেরগুঁড়া লাগে, যদি ওগুলা আমার কাছে থেকে নিতেন তবে অনেক উপকৃত হতাম। যা হোক সাতক্ষীরা থেকে হলুদ ও মরিচেরগুঁড়া সরবরাহের একটা মাধ্যম ছিলো। সাতক্ষীরা থেকে সুন্দরবন কুরিয়ারের মাধ্যমে সেগুলো সরবরাহ শুরু করলাম। কল্যাণপুর থেক তেজকুনিপাড়ার দূরত্ব বেশ অনেক ছিল। তাছাড়া যোগাযোগের মাধ্যমটাও ভালো না থাকার কারণে প্রসঙ্গতই আমাকে প্রায় দুই কিলোমিটারের মত সেই হলুদ ও মরিচের গুঁড়ার বস্তা হাতে টেনে নিয়ে যেতে হত। বলে রাখি যদি বস্তাতে ২৫ কেজি গুঁড়া থাকতো সেটা হাতে বহন করলে ৫০ কেজি মনে হত। তাই কষ্ট কমানোর জন্য লোকলজ্জার কথা না ভেবে বস্তা মাথায় করে নিতাম আর মনকে এই ভেবে মনকে সান্ত্বনা দিতাম একদিন যখন অনেক বড় হবো সেদিন মিডিয়াকে বলার মত কিছু ইতিহাস তো থাকতে হবে…..! যা হোক অনেক কষ্টের পরে তার ফল ও পেলাম। দেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠের ৩-৪ টিতেই মেধাক্রমে টিকে গেলাম। এর মধ্যে সিদ্ধান্ত নিলাম ঢাকাতেই থাকবো। ঢাকা ভার্সিটিতে ডি ইউনিটে ওয়েটিং থাকায় ও ভালো বিষয় পাবার আশা না থাকায় ভর্তি হলাম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে। ভর্তির শুরুতেই দেখি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হল আন্দোলন। যা হোক সেদিকে জাবো না। মাথার মধ্যে ভালো করে ঢুকিয়ে নিলাম নিজের খরচ নিজে চালিয়েই পড়াশুনা করতে হবে। পরবর্তী সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার জন্য ভার্সিটির ছাত্র হিসাবে বেছে নিলাম গৃহ শিক্ষকের পথ। কিন্তু অপরিচিত এই ঢাকায় আমাকে কে টিউশনি খুজে দিবে? তাই কারো মুখাপেক্ষী না হয়ে নিজেই টিউশনির অনুসন্ধান শুরু করলাম। পড়াইতে চাই….!!! এই বলে বেশ কছু লিফলেট ছাপালাম। তেজকুনিপাড়া থেকে শুরু করে আগারগাঁও, তালতলা মিরপুর হয়ে মোহাম্মদপুর পর্যন্ত লিফলেট লাগালাম সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। অতঃপর মোহাম্মদপুরে একটা টিউশনি পেলাম। মাসে পাবো ২৫০০ টাকা। যাক কিছুতো একটা হলো। তার পরে পূর্ব পরিচিত বন্ধুদের সাথে মোহাম্মদপুরে একটি মেসে উঠলাম। মাসে থাকা খাওয়া, পড়াশুনা ও অন্যান্য খরচ প্রায় ৮-১০ হাজার টাকার মত। আমার খুব সামান্য ইনকাম ২৫০০ টাকা। বাসায় টাকা চেতে পারতাম না। ভাবতাম যদি বাবা মা জানেন যে তার ছেলে কষ্ট করে পড়াশুনা করছে তাহলে তারা খুব খুশি থাকবেন। তার পরেও সামান্য কিছু টাকা নিতাম। সর্বসাকুল্যে মোট অর্থ যোগান সম্ভব হত ৪৫০০-৫০০০ টাকার মত বাকিটা প্রতি মাসেরই ঘাটতি। কোত্থেকে ম্যানেজ করবো? যে কারণে মেসের টাকাটাই সময়মত দিতে পারতাম না। প্রতি চলতি মাসের টাকা দিতাম তার পরের মাসে বা তারও পরের মাসে। যেটা ঢাকার কোন মেসে হয় কিনা আমার জানা নেই। সবাই ছাত্র ছিলাম, যার কারণে সবারই টাকার সীমাবদ্ধতা ছিলো। আমার এই ঘাটতি টাকার কারণে প্রতি মাসের প্রায় শেষের ৮-১০ দিন সবাইকে খাওয়া না খাওয়া থাকতে হত। কারণ একটাই আমি মেসে টাকা দিতে পারতাম না। ভাবলাম মোহাম্মদপুর থেকে সদরঘাট অনেক দূর, তাছাড়া মোহাম্মদপুরে থাকার খরচটাও অনেক বেশি। কিন্তু সদরঘাট যেয়ে এই মুহূর্তে কোথায় থাকবো, কোথায় উঠবো কোথাও কোন টিউশনি পাবো কিনা এসব ভেবে মোহাম্মদপুরেই থেকে যেতে হলো। মোহাম্মদপুরের দিনগুলা কেমন ছিলো একটু না বললেই নয়। সত্য বলতে আমার কাছে নগদ কোন টাকাই থাকতো না। কারণ যে অল্প টাকা পেতাম সেটা বিগত মাসের বকেয়া পরিশোধেই যেত। সকাল ৫.৩০ এ ঘুম থেকে ওঠে ফ্রেস হতাম। রেডি হয়ে বাহির হবার সময় দুই বন্ধু প্রিন্স ও তারেকের মানিব্যাগ থেকে কিছু টাকা (৩০-৫০) টাকা নিতাম, যদিও ওরা জানতো। ৬.৩০ এর মধ্যে শ্যামলীতে ভার্সিটির বাসের জন্য দাঁড়াতাম। বাসে খুব কষ্ট করে ছাত্র ছাত্রীদেরকে উঠতে হয়। কারণ আমাদের বাসের সিট সংখ্যার তুলনায় বাসে ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা থাকে তিন গুনেরও বেশি। কারণ বাসের সল্পতা। যদি বসার জায়গা পেতাম তবে মনে হত সোনার হরিণ পেয়েছি। আর যদি না পেতাম তবে বান্দরের মত বাসের বাম্পারে ঝুলতে ঝুলতে ভার্সিটি পৌছাতাম। সকালে ক্যান্টিন থেকে সবজি খিচুরি(প্রতিদিন) ২০ টাকা করে খেতাম। তারপরে ক্লাস থাকলে ক্লাস না থাকলে সেমিনার, লাইব্রেরি বা বন্ধুদের আড্ডায় কখন যে দুপুরের খাবারের কথাটা নিজেই ভুলে থাকার অহেতুক চেষ্টা করতাম নিজেই জানতাম না। কারণ দুপুরে খাবার মত টাকা বেশিরভাগ দিনই থাকতো না। সবাই বলবেন বাবার কাছে কেন বলি নি? হ্যা!! বলিনি, মুখফুটে টাকার কথা বলিনি বরঞ্চ বাবাকে আরো বেশি আশা দিয়েছি। বলেছি যে, বাবা আমি অনেক ভালো আছি। ২-৩ বার হার্ট স্ট্রোক করা বাবাকে কে না খুশি দেখতে চায় বললেন? কেউ না চাক আমি চাই, কারণ আমি অন্য কেও ছিলাম না আমি আমিই ছিলাম। ভার্সিটির বাসেই ফিরতাম বিকাল ৫-৬ টার দিকে। ৯টার দিকে মেসে ফিরতাম। সেই একই ঘটনা মেসে বাজার হয়নি রান্নাও হয়নি। কারণ আগেরটাই! মেসে চলতি মাসে কোন টাকাই দেওয়া হয়নি। লজ্জা লাগতো অনেক, আমার জন্য অন্য সবাইকে আমি কষ্ট দিচ্ছি। বন্ধুত্বের খাতিরে ওরা কিছু বলতো ও না, শুধু নীরবে সহ্য করে যেত। অন্যরা বাহিরে থেকে খেয়ে আসতো, আমাকে বললে লজ্জার খাতিরে বলতাম আমি খেয়ে এসেছি বা স্টুডেন্টের বাসা থেকে খেয়ে এসেছি। না খেয়ে দুপুর ও রাত পার করার স্বভাবটা রীতিমত অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেল। খুব যখন কষ্ট হত। না পেরে মন কে সান্ত্বনা দিতাম যদি নাই বা কষ্ট করি তবে অনেক বড় হয়ে সবাইকে কীভাবে বলবো যে আমি অনেক কষ্টে বড় হয়েছি? তাই আবার সেই না হারা মনোবল নিয়ে দৃঢ়চিত্ত নিয়ে শুধু সংগ্রাম করে যেতাম আর নিজেকে নিজের কাছে প্রতিনিয়ত লুকাতাম। ক্যাম্পাসের অনেকে বলবে কই তোমাকে বা তোমার পোশাকে তো কখনো মনে হয়নি যে তুমি এমন। আসলে আমার পোশাকগুলা নিউমার্কেটের ফুতপাত থেকে ১৫০-২০০ টাকার মধ্যেই খুঁজে নিতাম। আর জুতার ব্যাপারটা হলো গুলিস্তান ফুলবাড়িয়া ফ্লাইওভারের নিচের চোরাই জুতা ৩০০০ হাজার টাকার জুতা ৩০০ টাকায়। সেটাই বন্ধুর কাছে বাড়িয়ে বলে নিছক আনন্দ হত।
এতগুলো কথা বলারই ছিল। আজ যা বলবো সব সত্য ও উন্মুক্ত করে বলবো।
আজ আমার পাকস্থলীতে ক্যান্সার, একদিনে হয়নি অবশ্যই। পাকস্থলী ক্যান্সারের কারণগুলো সবারই জানা। যারা অতিরিক্ত তামাক বা তামাকজাত দ্রব্য গ্রহণ করে তাদেরই এ রোগ বেশি হয়, আর হয় আলসার থেকে। সবাই হয়তো বুঝতে পেরেছেন যে এ রোগের কারণটা তামাক জাত দ্রব্য নয় বরঞ্চ না খাওয়া থেকে। সবার কাছে আমার শুধু একটা প্রশ্ন! বলুনতো ঠিক কতটুকু খাবারের কষ্ট পেলে মানুষের এমনটা হয়? অনেকে বলে দুই টাকা দিয়ে একটা বিস্কুটও খেতে পারতে, তবে সেটা কেন করনি? সত্যি বলছি ভাই! আমার কাছে বেশির ভাগ সময় দুইটা টাকাও থাকত না। এখানেও আবার অনেকে বলবেন বাবা মাকে কেন বলনি? জেদি ছিলাম, দৃঢ় চিত্তের ছিলাম হারতে নারাজ ছিলাম, জানতাম এ কষ্টের ফল পাবোই, তার জন্য খুব পরিশ্রমও করতাম, পড়াশুনাও করতাম।
এবার আমার প্রশ্ন সবার কাছে খাওয়ার কষ্ট কেন পাব না? সকালে ঘুম থেকে যেখানে উঠলেই মনে হয় কীভাবে এই মাসের ঘর ভাড়ার (৩০০০-৩৫০০) টাকাটা দিব, খাওয়ার কথা তো দূরে থাক! আচ্ছা একটা কথা বলতে পারেন? আমি পাবলিক ভার্সিটির ছাত্র হয়ে কেন ঘর ভাড়ার চিন্তা করবো? ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী বা অনান্য কোন ভার্সিটির ছাত্ররা কি ঘর ভাড়ার কথা আদৌ চিন্তা করে? তাহলে আমাকে কেন করতে হবে ? আবারো প্রশ্ন করি আমার এই মুহূর্তের কাজটা কি? অর্থের যোগান নাকি লেখা পড়া করা? আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রকে দেখেছি তারা তাদের খরচ চালিয়ে বাড়িতেও টাকা পাঠায়। আচ্ছা একটু চিন্তা করে বলবেন সবাই? হলে থেকে তাদের খরচ মাসে কত হতে পারে, আর আমাদের মেসে থেকে মাসে কত খরচ হতে পারে ? আজ যদি আমাদের হল থাকতো? কিছু না হোক মাথা গোজার জায়গা টুকু থাকলে খাওয়ার যোগান নিজেরাই দিতে পারতাম। আজ আমার মাথা গোজার জায়গা খুঁজতে যেয়ে মাথাটাই হারিয়ে যাবার পথে।
আমি, এ.এইচ.মোকলেছুর রহমান (হাসান)। ভার্সিটিতে নাম নীরব। আমি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৩-২০১৪ শিক্ষাবর্ষের (৯ম ব্যাচ) ছাত্র। তাছাড়া আমার আরও একটি বড় পরিচয় আমি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত ছাত্রলীগের একজন প্রত্যক্ষ কর্মী।
আমার ডিপার্টমেন্টে আমার ব্যাচের ফার্স্ট ক্লাস থার্ড ছিলাম। সি.জি.পি.এ. ছিলো ৩.৬০ এর মত। আমার ডিপার্টমেন্টের এক বড় ভাই (আমিনুল ইসলাম) ৩৫তম বি.সি.এস অ্যাডমিন ক্যাডারে সম্ভবত ৫ তম স্থান লাভ করেন। যে কারণেই হোক না কেন, অভিমানবশত ভাইয়াকে বলেই ফেলেছিলাম কমপক্ষে আপনার আগের স্থানটা দখল করেই আপনার সাথে যোগাযোগ করবো, ইনশাআল্লাহ্। আমি জানতাম আমি পারবো। কারণ আমার মনবল দৃঢ় ছলো। কিন্তু একি হলো আমার? কিছুরই যে আর মুল্য থাকলো না।
আজ যদি আমি একটু সহায়তা পেতাম একটু মাথা গোঁজার জায়গা পেতাম আমি হয়তো আজ চিকিৎসার জন্য হাত না পেতে দেশের উন্নয়নের অংশীদার হতে পারতাম। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়নের অংশীদার হতে পারতাম। কিন্তু আজ আমি নিঃস্ব। যেখানে আজ আমার স্বপ্নের দিন গোনার কথা সেখানে আজ আমি মৃত্যুর দিন গুনছি।
মা! (বঙ্গমাতা) আমারা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালের ছাত্র-ছত্রীরা অনেক অবহেলিত, অনেক বঞ্চিত। আমারাতো নিজের যোগ্যতায় অনেক তুলনামূলক পরীক্ষাতেও ভাল করছি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়নে অংশীদার হচ্ছি। তাহলে দিন্ না আমাদের আরও একটু সুযোগ, যাতে আমরা মাথা উঁচু করে বলতে পারি আমরা সোনার বাংলার সন্তান, আমরা মুজিব সন্তান। দিন্ না আমাদেরকে মাথা গোঁজার একটু জায়গা করে, যাতে মাথা গোঁজার অভাবে আমার মত আমার ভার্সিটির আর কোন ফুলকে অকালেই ঝরে পড়তে না হয়। আমি না হয় আজ পূর্ণ প্রস্ফুটিত হতে পারলাম না, কিন্তু দিন্ না অন্যদেরকে প্রস্ফুটিত হওয়ার একটু সুযোগ।
দিন্ না আমাদের কে একটু ঠাঁই পাবার বন্দ্রোবস্ত করে।
আমাদেরকে হল দিন মা…..!!