রবিবার , ২৭ নভেম্বর ২০১৬ | ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. Featured
  2. অন্যান্য খেলার সংবাদ
  3. অন্যান্য ধর্ম
  4. অপরাদ
  5. অর্থনীতি
  6. অলটাইম নিউজ লেটার
  7. আইটি টেক
  8. আইন – আদালত
  9. আইন শৃংখলা বাহিনী
  10. আন্তর্জাতিক
  11. আবহাওয়া বার্তা
  12. ইসলাম
  13. উদ্যোগ এবং পরিবর্তন
  14. ওয়েবসাইট
  15. কবিতা

সীমান্তে অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে হাজারও রোহিঙ্গা।।

প্রতিবেদক
alltimeBDnews24
নভেম্বর ২৭, ২০১৬ ১:০২ পূর্বাহ্ণ

রির্পোটঃ অনলাইন ডেস্ক.

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনে অতিষ্ঠ আরও দশ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা রাখাইনের বিভিন্ন গ্রাম থেকে পালিয়ে সীমান্তে আশ্রয় নিয়েছে। তারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে। এ লক্ষ্যে মংডু থানার কুয়ারবিল এলাকার ঝোপ-জঙ্গলে আত্মগোপন করে আছে। গোপন স্থান থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রকৃত অবস্থা জানার চেষ্টা করছে। সুযোগ বুঝে নাফ নদী পার হয়ে তারা টেকনাফের ঝিমংখালী সীমান্ত দিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করছে। তবে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড-বিজিবি এবং আইনশৃংখলা বাহিনীর কড়া নজরদারির মুখে অনেকের চেষ্টা ব্যর্থ হচ্ছে বলে জানা গেছে।এদিকে বিবিসি জানিয়েছে, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় দেশে দেশে প্রতিবাদ হচ্ছে। বাংলাদেশের পর মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলবের ঘোষণা দিয়েছে মালয়েশিয়া। অং সান সুচির নোবেল প্রত্যাহারের দাবি এসেছে ইন্দোনেশিয়া থেকে। বিক্ষোভ হচ্ছে থাইল্যান্ডে। অং সান সুচির নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো।বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত টেকনাফ সীমান্তের ৩টি পয়েন্ট থেকে রোহিঙ্গা বহনকারী ৪টি নৌকা মিয়ানমারের দিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। বিজিবির নজরদারির মধ্যেও তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে দালালদের মাধ্যমে নির্যাতিত রোহিঙ্গারা নাফ নদী পার হয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে। তারা বলছেন সেনাবাহিনীর সঙ্গে স্থানীয় রাখাইনরাও (মগ) ধর্ষণ, প্রকাশ্যে জবাই, শিশুদের আগুনে নিক্ষেপ, মৃতদেহ পুড়িয়ে ফেলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগে অংশ নিচ্ছে। শুক্রবার সীমান্ত অতিক্রম করে উখিয়ার কুতুপালং আনরেজিস্টার্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আসা কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে এসব বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। আতংকিত মানুষগুলো বলছেন রাখাইনের বিভিন্ন গ্রামে সেনাবাহিনী পেট্রল ঢেলে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করছে। সেখানে ধর্ষণের শিকার দেড়শ’ নারী উখিয়ার এক শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। জীবন নিয়ে পালিয়ে আসা আতংকিত মানুষগুলো নিজ বাসভূমে ফিরতে চাচ্ছে না।কক্সবাজার জেলার উখিয়া থানার কুতুপালং আনরেজিস্টার্ড মুসলিম রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শনিবার দিনভর সরেজমিন ঘুরে, আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে গা শিউরে ওঠার মতো অনেক অজানা তথ্য পাওয়া গেছে। তারা জানিয়েছেন, অধিকাংশ ঘটনা ঘটেছে রাখাইন রাজ্যের মংডু থানা এলাকার বিভিন্ন গ্রামে। কথা বলার সময় সবার চোখে-মুখে ছিল চরম আতংক। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা জানেন না এখানে কত দিন থাকতে পারবেন। যারা আসতে পারেননি তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে কেউ বলতে পারছেন না। তবে কেউ কেউ অত্যন্ত গোপনে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে স্বজনদের খবর নেয়ার চেষ্টা করছেন।মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু থানাধীন লুদাই গ্রামের মৃত ছালামত উল্লাহর ছেলে নূর কবিরের বর্ণনায় উঠে এসেছে তার পরিবারের সদস্যদের ক্ষতবিক্ষত হওয়ার কাহিনী। ৩০ বছর বয়সী নূর কবির বলেন, তার ৫ বিঘা ধানী জমি ছিল। তা কেড়ে নেয়া হয়েছে। সেনাবাহিনী তার বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে। এরপর পরিবারের ১১ সদস্যের মধ্যে পুরুষরা আশ্রয় নেয় ঝোপঝাড়ের মধ্যে। মেয়েরা আশপাশের বাড়িঘরে আশ্রয় নেয়ার জন্য ছোটাছুটি শুরু করে। এরই মধ্যে তার ২৫ বছর বয়সী এক বোন হাসিনাকে ধরে নিয়ে যায় সেনারা।
এরপর তাকে ধর্ষণ করা হয়। একদিন পর হাসিনার রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায়। নুর কবির যখন কথা বলছিলেন তখন তার চোখ গড়িয়ে পানি পড়ছিল। তিনি বলেন, আমার বোনটাকে ধর্ষণের পর হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি পাষণ্ডরা। তার ৩ বছরের ছেলে আফতাব এবং ৬ মাসের মেয়ে রেহেনাকে আগুনে ফেলে হত্যা করে তারা। আমার ৮ বোনের মধ্যে হাসিনার কথাতো বললাম। বাকি ৭ বোন এবং ২ ভাইয়ের কোনো খবর পাচ্ছি না। তারা বেঁচে আছে কিনা তাও জানি না। আমাদের পুরো পরিবারটাকেই নিঃশেষ করে দিয়েছে ওরা। নুর কবির জানান, এক সময় ভোটার তালিকায় তার নাম ছিল কিন্তু কিছুদিন আগে তারা বলে তোমরা এ দেশের নাগরিক না। এজন্য ভোটার তালিকা থেকে নামটিও কেটে দেয়া হয়। তার ধানী জমি ছাড়াও একটি দোকান ছিল। কয়েকদিন আগে সে দোকানের মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে তারা। পরে দোকানটি পুড়িয়ে দেয়া হয়।উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া জুবায়েরে বলেন, তার বাবার নাম আমির হোসেন। বাড়ি রাখাইন রাজ্যের মংডু থানাধীন মিয়াজান পাড়া গ্রামে। সে দেশের সেনাবাহিনী তার বংশের ১৪ জনকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। এছাড়া তার বাবা এবং শ্বশুরসহ যাদের ধরে নিয়ে গেছে তাদের ফেরত পাওয়ারও আশা নেই। তিনি বলেন, স্থানীয় বলি বাজারে আমার মনোহরি দোকান ছিল। দোকানটি লুটপাট হয়েছে। এমনকি আমার বাড়িতে কিছু নগদ টাকা ও স্বর্ণের গহনা ছিল সেগুলোও নিয়ে গেছে তারা।এদিকে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বেশ তৎপর হয়ে উঠেছে বিজিবি ও স্থানীয় পুলিশ। বিজিবি মহাপরিচালক শুক্রবার সীমান্তবর্তী এলাকা ঘুরে যাওয়ার পর অধীনস্তদের কড়া নির্দেশনা দিয়ে যান। বিজিবি ব্যাটালিয়ন ২-এর অধিনায়ক আবুজার আল জাহিদ শনিবার জানিয়েছেন, সীমান্তের ৩টি পয়েন্টে রোহিঙ্গা বোঝাই ৪টি নৌকা ফেরত পাঠানো হয়েছে। টেকনাফ থানার ওসি আবদুল মজিদ শনিবার বিকালে যুগান্তরকে জানান, সীমান্তে নজরদারির জন্য ১০টি পয়েন্টে সাদা পোশাকে শতাধিক পুলিশ সদস্য টহল দিচ্ছেন। দালালদের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এদের সংখ্যা ৪০। এর মধ্যে ১৩ জনকে এরই মধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসব দালালের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের অনেকেই বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করছেন

(Visited ৩ times, ১ visits today)

সর্বশেষ - অর্থনীতি