সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হলো জিস্যাট-৯ সাউথ এশিয়ান স্যাটেলাইট। শুক্রবার (৫ মে) বিকেল ৫টা ৩ মিনিটে চেন্নাই থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে শ্রীহরিকোটায় সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র থেকে এই উপগ্রহ সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে।জিএসএলভি (জিওসিনক্রোনাস লঞ্চ ভেহিকল)-এফ০৯ নামক একটি রকেটের সাহায্যে উপগ্রহটি মাহকাশে পাঠানো হয়েছে।
এই ‘দক্ষিণ এশীয় উপগ্রহ’ উৎক্ষেপণের জন্য কাউন্টডাউন শুরু হয়েছিল ৩ মে (বৃহস্পতিবার) দুপুর ১২টা ৫৭ মিনিটে। ২৮ ঘণ্টার কাউন্টডাউনের পর শুক্রবার বিকেলে এই সফর উৎক্ষেপণ হয়। উপগ্রহটি মহাকাশে কার্যকরী থাকবে ১২ বছর, ২০২৯ সাল পর্যন্ত।
সার্ক সদস্যভুক্ত আট দেশের মধ্যে শুধু পাকিস্তান এই উপগ্রহের সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করেনি। নিজস্ব মহাকাশ কর্মসূচি আছে, এমন মন্তব্য করে ভারতের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিল দেশটি। তবে বাংলাদেশসহ সার্কের বাকি সদস্য দেশগুলো এতে সম্মতি দেয়। উপগ্রহটি সফলভাবে কক্ষপথে স্থাপিত হওয়ার পর পাকিস্তান বাদে সার্কের বাকি সাত সদস্য দেশ এ থেকে নানাবিধ উপকার পাবে। বিভিন্ন ধরনের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ছাড়াও এই উপগ্রহের সাহায্যে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আগাম হদিস পাওয়া এবং তার সুষ্ঠু মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।
উপগ্রহটির উৎক্ষেপণ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সাতটি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানেরা ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে যোগ দেন। তাদের স্বাগত জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
উৎক্ষেপণের পর দায়িত্বপ্রাপ্ত ইসরোর বিজ্ঞানীদেরও অভিনন্দন জানিয়েছেন মোদি।
তিনি বলেছেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার দেশ হিসেবে আমরা একই পরিবারের সদস্য। এই উপমহাদেশের শান্তি, সমৃদ্ধি, প্রগতি ও সমগ্র মানবতার স্বার্থে আমরা এক হয়েছি।’
এদিকে, ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারত যৌথভাবে এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক সুদৃঢ়করণে অনেক সাফল্য অর্জন করেছে। আমি এ বিষয়ে নিশ্চিত যে, এই উপগ্রহ উৎক্ষেপণ দক্ষিণ এশিয়ায় দেশগুলোর দৃশ্যপট বদলে দেবে।’
তিনি আরো বলেছেন, ‘দক্ষিণ এশীয় উপগ্রহ উৎক্ষেপণের মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারত তাদের পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রকে স্থল, জল এবং আকাশপথ ছাড়িয়ে মহাশূন্য পর্যন্ত বিস্তৃত করলো।আমি নিশ্চিত মহাশূন্যে এই সহযোগিতা আমাদের এই অঞ্চলের স্বার্থে আমাদেরকে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের উচ্চাকাক্সিক্ষ পথে নিয়ে যাবে।’
প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন দক্ষিণ এশীয় উপগ্রহ এই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।