ইন্টারনেটের দাম গ্রাহক পর্যায়ে কমাতে চায় সরকার। এজন্য উদ্যোগ নিয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ।
বর্তমানে ইন্টারনেটের মূল্যে কোন ‘শুভাঙ্করের ফাঁকি’ আছে কিনা- মোবাইল ফোন অপারেটরদের সে বিষয়টি স্পষ্ট করার নির্দেশ দিয়েছে ডাক টেলিযোগাযোগ বিভাগ।
সচিবালয়ে বুধবার (২৬ এপ্রিল) ইন্টারনেটের মূল্যে পুর্ননির্ধারণ সংক্রান্ত সভা শেষে ডাক টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ইন্টারনেটের মূল্য কিছুটা হলেও কমানো যায় কিনা সে বিষয়ে চেষ্টা করা হচ্ছে। বাংলাদেশে ইন্টারনেটের মূল্য পৃথিবীর তৃতীয় সর্বনিম্ন। আমরা চাই এন্ড ইউজার লেভেলে কিছুটা হলেও যেন দামটা কমে। এ কারণে আমাদের কিছুটা ত্যাগের মনোভাব নিয়ে, কিছুটা লস হলেও তা মেনে নিয়ে আমদের জনকল্যাণের মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। ট্যাক্স, ভ্যাটে কিছু করার আছে কিনা, সে বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব।’
তিনি বলেন, ‘কিছুটা যদি রেভিনিউ শেয়ারিং মডেল, কস্ট শেয়ারিং মডেলে কস্ট কমানো যায়- সেই বিষয়গুলো এক্সপ্লোর করে আমি বলেছি দুই দিনের মধ্যে এমএনও-রা (মোবাইল অপারেটর) একটা প্রস্তাব দেবেন।’
বিভিন্ন সময়েই গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে যে, গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেটের অতিরিক্ত দাম নেওয়া হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ইন্টারনেটের মূল্য নির্ধারণে কোন ফাঁকি রয়েছে কিনা বিষয়টি জানতে আগামী দুই দিনের মধ্যে অপারেটরদের এ ব্যাখা দিতে বলা হয়েছে।’
ভোক্তা পর্যায়ে কেন ইন্টারনেটের এত মূল্য নেওয়া হচ্ছে- প্রশ্নে রেখে তারানা হালিম বলেন, ‘আপনারা জানেন ২০০৯ সালে প্রতি এমবিপিএস ইন্টারনেট ব্যান্ডইউডথ এর মূল্য ছিল ২৭ হাজার টাকা। বর্তমান সরকার সেটা কমিয়ে ৬২৫ টাকা করেছে।’
তিনি বলেন, ‘তাদের পক্ষ থেকে জানিয়েছে যে প্রচারণাটি চলছে এর মধ্যে অনেকগুলো বিভ্রান্তিকর তথ্য আছে। যেমন হোলসেল এবং রিটেইলের মধ্যে কনফিউজড করা হয়েছে। স্পিড ও ভলিউমের মধ্যে কনফিউজড করা হয়েছে।’
তারানা হালিম বলেন, ‘মোবাইল অপারেটরদের বক্তব্য, যে দুটো কনফিউজ করার ফলে অঙ্কে যে হিসাব দেখানো আছে সেখানে একটা বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে, যেটা তথ্য ভিত্তিক নয়, এর মাঝে ভ্যাট, ট্যাক্স, প্রডাকশন খরচ, মেইনট্যান্যান্স খরচ আছে। এই সমস্ত কারণে উৎপাদন খরচ এবং এন্ড ইউজারলেবেলে যে খরচের তারতম্য হিসেবে আনা হয়নি।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তারপরও আমরা বলেছি, মাঝে কোন শুভঙ্করের ফাঁকি আছে কিনা, এটা দেখতে হবে।’
‘অপারেটরদের দু’দিনের মধ্যে প্রত্যেকটি পয়েন্টের ক্লারিফিকেশন দিতে হবে। আমি তাদেরকে (অপারেটর) বলেছি শুক্রবারে প্রতিটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তাদেরকে জানাতে হবে সংবাদটি কী, মানুষের ধারণাটা কী এবং তাদের বক্তব্য কী। এটা মানুষের কাছে তাদের দায়বদ্ধতা। কারণ গ্রাহককে দিয়েই অপারেটররা ব্যবসা করছে।’
সভায় মোবাইল অপারেটরদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়াও ন্যাশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন), ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) ও সাবমেরিন কেবল কোম্পানির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।