বুধবার , ১৯ এপ্রিল ২০১৭ | ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. Featured
  2. অন্যান্য খেলার সংবাদ
  3. অন্যান্য ধর্ম
  4. অপরাদ
  5. অর্থনীতি
  6. অলটাইম নিউজ লেটার
  7. আইটি টেক
  8. আইন – আদালত
  9. আইন শৃংখলা বাহিনী
  10. আন্তর্জাতিক
  11. আবহাওয়া বার্তা
  12. ইসলাম
  13. উদ্যোগ এবং পরিবর্তন
  14. ওয়েবসাইট
  15. কবিতা

নিখোঁজ চার তরুণের একজন ফিরেছেন

প্রতিবেদক
alltimeBDnews24
এপ্রিল ১৯, ২০১৭ ১২:১৮ পূর্বাহ্ণ

রাজধানীর বনানীতে গত ডিসেম্বরের শুরুতে একই দিনে নিখোঁজ হওয়া চার তরুণের মধ্যে মেহেদী হাসান (২৫) নামে এক নিখোঁজ তরুণ বাড়ি ফিরেছেন। তিনমাস নিখোঁজ থাকার পর মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ওই যুবক বরিশালের বাবুগঞ্জে তার বাড়িতে ফিরে যান।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মেহেদীর স্ত্রী শারমিন আক্তার রিংকি  জানান, তিনি বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে বাড়িতে ফিরেছেন। নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে তার কিছুই খেয়াল নেই। মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে তিনি নিজেকে সাভারের নবীনগর এলাকায় আবিষ্কার করেন। পরবর্তী সময়ে সেখান থেকে তিনি তার বাড়ি বরিশালের বাবুগঞ্জে ফিরে আসেন। এতদিন কোথায় ছিলেন এমন প্রশ্নে কিছুই বলতে পারেননি মেহেদী। তবে তিনি এখন শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ আছেন।

মেহেদীর বাবা জাহাঙ্গীর হাওলাদার ঝালকাঠি সদর থানার পুলিশ কনস্টেবল। গত ১ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানী থেকে নিখোঁজ হন মেহেদী। ওই ঘটনায় মেহেদীর চাচা মাহাবুব আলম ২ ডিসেম্বর বনানী থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।

ওই সময় মেহেদীর মা হাওয়া নূর বেগম জানান, তার ছেলে মেহেদি চাকরির খোঁজে চাচা মাহাবুব আলমের বাসা রাজধানীর লক্ষ্মীবাজার এলাকার যান। ১ ডিসেম্বর ল্যাপটপ মেরামত করতে তার বন্ধু সুজনের অফিসে যাওয়ার কথা বলে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। পরে তারা দু’জনই নিখোঁজ হন।

রহস্যজনকভাবে মেহেদী ও সুজন ছাড়াও একই দিন বনানী থেকে আরো দুই যুবক নিখোঁজ হন। তারা হলেন— শাফায়াৎ হোসেন ও জাইন হোসেন খান।

বনানী থানা সূত্রে জানা যায়, গত তিন মাস আগে মেহেদী হাসানসহ আরো ৩ যুবক নিখোঁজ হওয়া সংক্রান্তে বনানী থানায় দুটি সাধারণ ডায়রি করা হয়। সর্বশেষ গত ১ ডিসেম্বর বনানী কাঁচাবাজার এলাকার নর্দান ক্যাফে রেস্তোরাঁয় ওই চার যুবককে একত্রে শেষ দেখা গিয়েছিল। এরপর থেকেই নিখোঁজ হন তারা।

এর আগে একই দিনে চার তরুণ নিখোঁজ হওয়ায় বিষয়টি বেশ নাড়া দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। অতীতে এমনিভাবে নিখোঁজ অনেক তরুণের জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মেলে বলে তরুণদের এমন হঠাৎ নিখোঁজ হওয়ার খবর অশুভ এক শঙ্কারও জন্ম দেয়। এবারও তেমন কিছু কিনা, এ শঙ্কা ভর করে অনেকের মনে। আবার এটি ‘গুম’ জাতীয় কোনো ঘটনা কিনা তেমন আশঙ্কাও বিরাজ করে কারো কারো মনে।

গত ১ ডিসেম্বর রাতে বনানী কাঁচাবাজার এলাকার নর্দান ক্যাফে রেস্টুরেন্টের সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজে মেহেদীসহ চার তরুণকে সর্বশেষ দেখা যায়। ওইদিন সন্ধ্যায় বাসা থেকে বের হন সাফায়েত হোসেন, জায়েন হোসাইন খান পাভেল, মোহাম্মদ সুজন ও মেহেদী হাওলাদার। এদের মধ্যে সাফায়েত ও জায়েন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী। সুজন কাজ করেন এশিয়াটিক বিজ্ঞাপনী সংস্থায়। বরিশাল বিএম কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষে মেহেদী ২৬ নভেম্বর ঢাকায় এসেছিলেন চাকরির খোঁজে। নিখোঁজের পর ২ ও ৩ ডিসেম্বর বনানী থানায় আলাদা দুটি সাধারণ ডায়রি করেন তাদের স্বজনরা।

জায়েনের পরিবার ১ নম্বর বিমানবন্দর রোডের গলফ টাওয়ার অ্যাপার্টমেন্টে বসবাস করেন। তার বাবা পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন খান রাসেল দ্য রিপোর্টকে জানান, ঘটনার দিন সে রাত ৮টার দিকে ফটোকপি করতে বাসা থেকে বনানী সুপার মার্কেটের উদ্দেশে বের হয়ে যায়। পরে সে ও তার অপর দুই বন্ধু সাফায়েত ও সুজন একসঙ্গে নিখোঁজ হয়। পরে বিভিন্ন স্থানে তাদের খোঁজাখুঁজি করেও পাওয়া যায়নি। জায়েন উজ্জ্বল শ্যামলা, তার উচ্চতা সাড়ে ৫ ফুট। সে যখন বাসা থেকে বের হয় তখন কালো প্যান্ট ও জ্যাকেট পরিহিত ছিল। আমি বুঝতে পারছি না সে কোথায় গেল? নাকি কেউ তাকে তুলে নিয়ে গেছে।

ওই সময় জিডির বরাত দিয়ে ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা বনানী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সোহেল রানা দ্য রিপোর্টকে জানান, সাফায়েতের বাবার নাম মো. আলী হোসেন এবং তার পরিবার বনানীর ৪ নম্বর রোডের ব্লক-সিতে বসবাস করেন। সাফায়েতের গায়ের রং উজ্জল শ্যামলা, তার উচ্চতা ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি। তার পরনে ছিল চেক শার্ট ও প্যান্ট। সুজনের বাবার নাম মো. আনিসুর রহমান এবং সে গলফ টাওয়ার অ্যাপার্টমেন্টে বসবাস করত। সুজন কালো বর্ণের, তার উচ্চতা ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি। নিখোঁজ হওয়ার আগে সে জিন্স প্যান্ট ও সাদা শার্ট পরিহিত ছিল।

তাদের পরিবারের থেকে জানা যায়, গলফ টাওয়ার অ্যাপার্টমেন্টে থাকার কারণে জায়েনের সাথে সুজনের বন্ধুত্ব হয়। পরে পরিচয় হয় সাফায়েতের সঙ্গে। মেহেদী বরিশালের বাবুগঞ্জে সুজনের গ্রামের প্রতিবেশী। সাফায়েতের বাবা আলী হোসেন ও জায়েনের বাবা ইসমাইল হোসেন খান রাসেলের পুরান ঢাকায় পাশাপাশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হওয়ার কারণে তাদের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। ছোট বেলা থেকেই সাফায়েত ও জায়েন বন্ধু।

নিখোঁজ মেহেদীর বাবার নাম জাহাঙ্গীর হাওলাদার। ওই সময় তার চাচা মাহাবুব হাওলাদার দ্য রিপোর্টকে জানান, সে ঢাকায় এসে রায়েরবাজারে ফুপুর বাসায় উঠেছিল। ঘটনার দিন সুজনের সঙ্গে দেখা করতে সে বিকেল ৫টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে বনানী সুপার মার্কেটে যায়। সেখানে সে তার বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করে। সেই রাত থেকে তাদের কাউকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তার সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোনটিও তখন থেকে বন্ধ।

সে সময় এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মো. মাসুদুর রহমান বলেন, জিডির ভিত্তিতে অনুসন্ধান শুরু করা হয়েছে। পুলিশ তাদের অবস্থান এবং নিখোঁজ হওয়ার রহস্য জানতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ঘটনা যাই হোক নিখোঁজদের সন্ধান জানতে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।

তিনি আরও বলেন, সাধারণত তদন্তের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য সকল দিক মাথায় রেখেই তদন্ত করা হয়। সেক্ষেত্রে তারা স্বেচ্ছায় বাসা থেকে বেরিয়েছে নাকি অপহরণ করা হয়েছে নাকি অন্য কোনো কারণ আছে- সকল দিক বিবেচনায় রেখেই তদন্ত করছে পুলিশ।

(Visited ১ times, ১ visits today)

সর্বশেষ - অর্থনীতি