প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভুটানে অটিজম বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে তিনদিনের সরকারি সফরে মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) থিম্পুর উদ্দেশে যাত্রা করবেন। ভুটানের রাজধানীর রাজকীয় অতিথিশালায় ‘অটিজম ও নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার’ শীর্ষক ৩ দিনের এ সম্মেলন ১৯ এপ্রিল শুরু হবে।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সোমবার (১৭ এপ্রিল) এ খবর নিশ্চিত করে বলেছেন, সফরকালে প্রধানমন্ত্রী ভুটানের রাজা জিগমে খেসার ন্যামগেল ওয়াংচুক ও প্রধানমন্ত্রী তেসেরিং তোবগের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন।
প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে দ্রুক এয়ারের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট মঙ্গলবার সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ৩৫মিনিটে ভুটানের রাজধানীতে প্যারো ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে পৌঁছবে।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ও থিম্পুতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জিষ্ণু রায় চৌধুরী বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাবেন। এ সময় তাকে আনুষ্ঠানিক খাদার (স্কার্ফ) উপহার দেওয়া হবে। পরে প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার দেওয়া হবে এবং তিনি গার্ড পরিদর্শন করবেন।
বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রীকে মোটর শোভাযাত্রা সহকারে রাজপ্রাসাদে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে ভুটানের রয়েল প্রিভি কাউন্সিলের চেয়ারম্যান তাকে অর্ভ্যথনা জানাবেন।
বিকেলে প্রধানমন্ত্রীকে তাসিচোড জঙ্গ রাজকীয় প্রাসাদে আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নেওয়া হবে। তাসিচোড জঙ্গ প্রাসাদের মূল ফটকে একজন ক্যাবিনেট মন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন। প্রাসাদে ভুটানের রাজা ওয়াংচুক ও রানী জেটসান প্রেমার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাত হবে। এরপর দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠকের পর বাংলাদেশ ও ভুটানের বিভিন্ন বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে।
প্রধানমন্ত্রী তার সম্মানে দেওয়া রাজকীয় অতিথিশালায় ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর নৈশভোজে যোগ দেবেন। বুধবার (১৯ এপ্রিল) সকালে শেখ হাসিনা রাজকীয় অতিথিশালায় গেস্ট অব অনার হিসেবে ‘অটিজম ও নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার’ শীর্ষক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের সৌজন্যে দেওয়া ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর ওয়েলকাম লাঞ্চে অংশগ্রহণ করবেন।
বিকেলে শেখ হাসিনা টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রার অংশ হিসেবে অটিজম ও অন্যান্য নিউরোডেভেলপমেন্ট সমস্যার যথাযথ সমাধানে সক্ষমতা অর্জন শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের এক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করবেন।
শেখ হাসিনা হেজো’তে বাংলাদেশ দূতাবাসের ভিত্তিপ্রস্তর ফলক উন্মোচন করবেন। পরে প্রধানমন্ত্রী ভুটানের রাজা ও রানীর দেওয়া এক ব্যক্তিগত ভোজে যোগ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁর তিনদিনের সফর শেষে বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) সকালে দেশে ফিরবেন।
বাংলাদেশ ও ভুটানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করছে। এতে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে সূচনা ফাউন্ডেশন (সাবেক গ্লোবাল অটিজম), এ্যাবিলিটি ভুটান সোসাইটি (এবিএস) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া কার্যালয়।
সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ‘এএসডি ও অন্যান্য নিউরোডেভেলপমেন্টাল সমস্যায় ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজের জন্য কার্যকর ও টেকসই বহুমুখী কর্মসূচি’। সম্মেলনে উদ্বোধনী ও সমাপনী অনুষ্ঠান ছাড়াও কয়েকটি কারিগরি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। সরকারি নেতৃবৃন্দ, নীতিনির্ধারক, বিশেষজ্ঞরা সম্মেলনে অটিজম সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে কৌশলগত দিক নিয়ে আলোচনা করবেন।