নব ভাস্বর
জসিম উদ্দীন জাফর
সাজিয়ে রেখেছি বরণডালা
তোমার অপেক্ষা করি ।
লাল শাড়ি, লাল টিপ পরে
মঙ্গল শোভা যাত্রা নিয়ে,
আর করনা দেরী ।
কেমন করে আসবে নতুন সাজে ।
ফুলে ফলে পূন্য ভূমি
বাংলাদেশের মাঝে।
ভাঙবে কখন সুপ্তি তোমার
তাকিয়ে আছি মোরা সবে ।
ভাবছ তুমি আসবে তখন?
যখন রাত বারোটা হবে
ডাকবে যখন ভোর বেলাতে
কিচিরমিচির পাখি ।
কেমন করে বন্ধ রাখবে
তোমার আপলক দুটি আঁখি ।
দূর করে দাও পিছনের যত গ্লানি
ঘোমটা খানি দাও খুলে
প্রভাতকালে দেখবে তোমায়
নানান রঙের ফুলে।
যে সব দু:খ পাড়ি দিয়ে
এসেছি হামাগুরি দিয়ে।
যে দিনগুলি চলে গেছে যাক
পুরনো কথাও থাক আজ থাক,
মান-অভিমান যত ছিল তাও থাক
কষ্টগুলোও সু-দূরে চলে যাক।
এসো তবে আজ হাতে রাখি হাত
‘আগামী দিন হবে রঙিন-প্রভাত।
লাল সূর্যটা বলে দিবে মোরে
চির কাল সুখে থাক।
আনন্দ আমাদের নব বর্ষে
নিত্য জাগুক নবীন হরষে
অদেখা বছরের পদার্পণে
খুশীর হাওয়া বয় যে মনে
ছড়িয়ে বাণী হৃদয় খানি
আপন দুয়ারে নব নব ডাকি
নতুন করে সাজাই।
ঢাক ঢোল ও পাতার বাঁশি
যতই করুক হাঁসা হাঁসি
মোরা আপন প্রাণে বাজাই।
লাল শাড়িতে সেজেছে বধু
বাড়ি ঘর দুয়ার ধুয়েছে তবু
লুঙ্গী পাঞ্জাবি পরেছে বাবু
কিশরি বেধেছে লাল ফিতা।
ফুলে ফুলে সাজানো বনে উপবনে
দুলে দুলে ডাকুক কুহু কুহু তানে ।
দুয়ারে দুয়ারে বাঙ্গালী আনা
ঘরে ঘরে চলে ভালো ভালো খানা
নব বর্ষের ডাকে দিয়ে সবাই সাড়া
আজ খুশীতে ডুবে যাক বসুন্ধরা।
তুমি শীতের বাই বাই গ্রীশ্মের হাতছানি
বর্ষার টানা টানি নিয়ে আসো ভাই।
গতবার এসেছিলে চির সুখে ভেসে ছিলে
বাংলায় দিয়ে ছিলে প্রাণ।
তুমি আসবে তাই সাজিয়েছি বাংলা
আম জাম কাঁঠাল লিচুর ত্রোণ।
তুমি পুরাণের দিন ভুলে, স্বপ্নের পাল তুলে
চারিদিক জোয়ারের বাণ,
তুমি বারে বারে হাসাতে, নব সুখ সাজাতে
করে যাও শান্তির আহবান।