মাদারীপুরে কালকিনি উপজেলায় দৈনিক যায়যায়দিনের প্রতিনিধি শহিদুল ইসলামকে গাছে বেঁধে নির্যাতন ও পরে এক চাঁদাবাজি মামলায় গ্রেফতার দেখানোর ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে কেনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
রবিবার (০৯ এপ্রিল) বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ রুল জারি করেন।
স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, মাদারীপুরের পুলিশ সুপার এবং কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ওসিকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এছাড়া এসপি পদমর্যাদার নিচে নন এমন একজন কর্মকর্তাকে দিয়ে ঘটনার সরেজমিন তদন্ত করে পুলিশ মহাপরিদর্শককে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ১৪ মে পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন আদালত।
দৈনিক কালেরকণ্ঠ পত্রিকায় ‘সাংবাদিককে গাছে বেঁধে নির্যাতন : পরে মামলা দিয়ে গ্রেফতার’ শীর্ষক প্রতিবেদন আমলে নিয়ে রবিবার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ রুল জারি করেন আদালত।
পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, গত শুক্রবার দুপুরে উপজেলার পূর্ব এনায়েতনগর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রচারণার সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে তাঁকে এ নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনায় তিনি থানায় মামলা করতে চাইলেও তা নেয়নি পুলিশ। উল্টো শুক্রবার রাতে তাঁর বিরুদ্ধে একটি চাঁদাবাজির মামলা দিয়ে তাঁকে গ্রেফতার করে গতকাল শনিবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শহিদুলের পরিবার, পুলিশসহ বিভিন্ন সূত্র জানায়, শুক্রবার দুপুরে নির্বাচনী প্রচারের সংবাদ সংগ্রহ করতে পূর্ব এনায়েতনগর ইউনিয়নে যান শহিদুল ইসলাম। তিনি নির্বাচনী প্রচারের ছবি তুলতে গেলে তাঁর ওপর আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী বাদল তালুকদার ও তাঁর সমর্থকরা অতর্কিত হামলা চালায়। শহিদুলের কাছ থেকে মোবাইল ফোনসেট ও ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন চালানো হয়।
তাৎক্ষণিক খবর দিলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে কালকিনি থানায় নিয়ে যায়। এ সময় চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর ছোট ভাই সরোয়ার তালুকদার (৩০) ও নাজমুল খান (১৭) নামে দুজনকে আটক করা হয়। বিকেলে শহিদুল ওই ঘটনায় থানায় মামলা করতে চাইলে স্থানীয় নেতাকর্মীদের চাপের মুখে পুলিশ মামলা না নিয়ে তাকে আটকে রাখে। সন্ধ্যায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। রাতে চাঁদাবাজির মামলায় শহিদুলকে গ্রেফতার করে কালকিনি থানা পুলিশ। পরে শনিবার সকালে শহিদুলকে আদালতে নেওয়া হয়। আদালত শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।