জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীর শতকরা ৪ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ বিষন্নতায় ভুগছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
৭ এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে বুধবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ তথ্য জানান। এই হিসাবে বাংলাদেশে ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ৭৩ লাখ ৬০ হাজার বিষন্নতায় ভুগছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘৭ এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের জাতীয় অনুষ্ঠান ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য- ‘ডিপ্রেশন: লেটস টক’ এর বাংলা ভাবার্থ দাঁড়ায়- ‘আসুন বিষন্নতা নিয়ে কথা বলি।’ আমাদের প্রেক্ষাপটে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নানা কারণে আমাদের সমাজে অনেকের মধ্যে বিষন্নতা কাজ করে। যে কোন কারণে বিষন্নতা হোক না কেন, তা কাটিয়ে উঠতে কথা বলতে হবে।’
যে কোন বয়সের মানুষ বিষন্নতায় আক্রান্ত হতে পারে জানিয়ে নাসিম বলেন, ‘কেউ বিষন্নতায় আক্রান্ত হলে পরিবারকে তাকে সাহায্য করতে হবে। দীর্ঘমেয়াদী বিষন্নতায় চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।’
বাংলাদেশে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সে বিষন্নতার লক্ষণ প্রথম দেখা যায়। এছাড়া ১৫ থেকে ১৮ বছর ও ৬০ বছর বয়সের বেশি ব্যক্তিদের মধ্যে এর ঝুঁকি কিছুটা বেশি বলেও জানান মন্ত্রী।
পৃথিবীর প্রায় ৩০ কোটি মানুষ বিষন্নতায় ভুগছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিষন্নতা একটি বৈশ্বিক সংকট। দেশভেদে শতকরা ৩ থেকে ১৭ জন মানুষ বিষন্নতায় আক্রান্ত।’
সংবাদ সম্মেলনে সরবরাহ করা বিষন্নতার বিষয়ক জরিপের তথ্যে দেখা গেছে, বর্তমান বিশ্বে ‘ডিজিজ বার্ডেন’ হিসেবে বিষন্নতার স্থান তৃতীয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ২০৩০ সালে বিষন্নতা ‘ডিজিজ বার্ডেন’ তালিকায় প্রথম স্থানে অবস্থান করবে।
শিশুরাও বিষন্নতায় আক্রান্ত হতে পারে। তবে পুরুষের তুলনায় নারীদের মধ্যে বিষন্নতায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি দ্বিগুণ। দীর্ঘমেয়াদী শারীরিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে বিষণ্নতার ঝুঁকি অন্যান্যদের চেয়ে ৩ থেকে ৪ গুণ বেশি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক হিসাব অনুযায়ী, সারাবিশ্বে প্রতিদিন ৩ হাজার মানুষ আত্মহত্যা করে। এ হিসাবে বছরে আত্মহত্যার সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ১১ লাখ। এরমধ্যে বেশিরভাগ আত্মহত্যাই ঘটে বিষন্নতার কারণে।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।