রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) চলছে ১৩৬তম ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ) সম্মেলন। একইসঙ্গে চলছে ‘আইপিইউ অ্যাসেম্বলি ফেয়ার-২০১৭’। যেখানে বাংলাদেশের একমাত্র ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্য রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান হিসেবে অংশ নিয়েছে ওয়ালটন। মেলায় আগত বিদেশি অতিথিরা প্রশংসা করছেন ওয়ালটন পণ্যের।
সম্মেলনে যোগ দিতে আসা বিদেশি স্পিকার এবং সংসদ সদস্যদের সামনে প্রদর্শিত হচ্ছে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ খ্যাত ওয়ালটন ব্র্যান্ডের ফ্রিজ, এলইডি টিভি, এয়ার কন্ডিশনার, ইলেকট্রিক সুইস-সকেট, বিভিন্ন ধরনের এলইডি লাইটসহ অসংখ্য হোম ও ইলেকট্রিক্যাল এ্যাপ্লায়েন্সেস। মেলা শেষ হচ্ছে ৫ এপ্রিল।
১ এপ্রিল শুরু হওয়া পাঁচদিনের মেলায় দেশীয় ব্র্যান্ড ওয়ালটনের তৈরি বিভিন্ন পণ্যের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি, নিখুঁত ফিনিশিং ও আকর্ষণীয় ডিজাইন দেখে মুগ্ধ হন সম্মেলনে অংশ নেওয়া বিশ্ব নেতৃবৃন্দ। বিশেষ করে, বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইনভার্টার প্রযুক্তির ফ্রিজ ও এয়ার কন্ডিশনার তৈরি হওয়ায় এবং ফ্রিজের কম্প্রেসারে বিশ্বস্বীকৃত পরিবেশবান্ধব আর৬০০এ গ্যাস ব্যবহার করায় ওয়ালটন সম্পর্কে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করছেন তারা। পাশাপাশি, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে নতুন নতুন প্রযুক্তিপণ্য উদ্ভাবনের লক্ষ্যে ওয়ালটন এশিয়ায় অন্যতম বৃহৎ গবেষণা ও উন্নয়ন (আরএন্ডডি) বিভাগ গড়ে তুলেছে শুনে বিস্মিত হন বিদেশি অতিথিরা। সেই সঙ্গে ক্রেডিট রেটিং এ ‘ট্রিপল এ’ স্ট্যান্ডার্ড অর্জন, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই) এর ফাইভ স্টার রেটিং অর্জন, ২০টিরও বেশি দেশে পণ্য রফতানি, দেশব্যাপী বিস্তৃত প্রায় ৪০০ সার্ভিস পয়েন্ট, বিক্রয়োত্তর সেবায় প্রায় ৩ হাজার প্রকৌশলী-টেকনিশিয়ান নিয়োজিত রয়েছে জেনে সন্তোষ প্রকাশ করেন তারা। বাংলাদেশে প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদন শিল্পে দক্ষ জনশক্তি তৈরি, প্রায় ৩২ হাজার লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং এ খাতের বিকাশে অনবদ্য ভূমিকা রাখায় ওয়ালটনের আরো সাফল্য কামনা করেন তারা।
উল্লেখ্য, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ১৭১টি আইপিইউভূক্ত সদস্য দেশের মধ্যে ১৩২টি দেশের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, এমপিসহ প্রায় দেড় হাজার ডেলিগেট নিয়ে গত শনিবার রাজধানীর বিআইসিসি’তে শুরু হয়েছে ১৩৬তম আইপিইউ সম্মেলন। একই সঙ্গে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা চত্বরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ‘রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো’ এবং সংসদ সচিবালয় এর উদ্যোগে শুরু হয়েছে ‘আইপিইউ অ্যাসেম্বলি ফেয়ার’। যা উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
মেলা কর্তৃপক্ষের মতে, সম্মেলনে অংশ নেওয়া বিশ্ব নেতাদের সামনে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বেগবানে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে এরকম বিভিন্ন পণ্য সামগ্রীর চিত্র তুলে ধরতেই আয়োজন করা হয়েছে এই বিশেষ মেলার। রয়েছে চারটি প্যাভিলিয়নসহ ৫৯টি স্টল। অংশ নিয়েছে ওয়ালটনসহ সিরামিকস, ওষুধ, টেক্সটাইল, আইসিটি, চামড়া ও প্লাস্টিকসহ বিভিন্ন খাতের সরকারি ও বেসকরকারি প্রতিষ্ঠান। প্রসঙ্গত, মেলায় শুধু রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানই অংশ নিয়েছে। ২ নম্বর টেন্টের ১৮ নম্বর প্যাভিলিয়ন হচ্ছে ওয়ালটনের। ওয়ালটন প্রদর্শন করছে বিশ্বমান সম্পন্ন ফ্রস্ট ও নন-ফ্রস্ট ফ্রিজ, এলইডি টিভি, ইনভার্টার প্রযুক্তির এসি, সুইস-সকেট, ল্যাপটপ, ট্যাব, হোম ও ইলেকট্রিক্যাল এ্যাপ্লায়েন্সেস।
মেলায় ওয়ালটন প্যাভিলিয়নের প্রধান সমন্বয়ক ও কোম্পানির নির্বাহী পরিচালক (পিআর এন্ড মিডিয়া) মো. হুমায়ুন কবীর জানান, প্রথমদিন থেকেই সম্মেলনে যোগ দেওয়া বিভিন্ন দেশের স্পিকার, সংসদ সদস্য এবং টেকনিক্যাল এক্সপার্টদের দৃষ্টি কাড়ছে ওয়ালটন পণ্য। এরই মধ্যে ওয়ালটনের মিনি প্যাভিলিয়ন ঘুরে রাশিয়ান ফেডারেশনের ফেডারেল অ্যাসেম্বলির স্পিকার ভ্যালেনটিনা ম্যাটভিয়েনকো, তাঞ্জিনিয়ার সংসদ সদস্য ড. খালচেরিয়া আলিয়াছি, উগান্ডার সংসদ সদস্য ড. রবার্ট তুমুকাছি, নাইজেরিয়ার সংসদ সদস্য ড. আর এ আইডু, ভুটানের পেমা তানজিন, আইসল্যান্ডের সুসান, রিলমোসহ অনেকেই ওয়ালটন পণ্যের ব্যাপক প্রশংসা করেছেন।
রাশিয়ার ফেডারেল অ্যাসেম্বলির স্পিকার ভ্যালেনটিনা ম্যাটভিয়েনকো তার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে জানান, তিনি এর আগেও ওয়ালটনের নাম শুনেছেন। তার ভাষায় তিনি বলেন, ‘ওয়ালটন, বাংলাদেশ’স ব্র্যান্ড, আই নো ইট’। বাংলাদেশেই রফতানিযোগ্য প্রযুক্তিপণ্য তৈরি করায় তিনি ওয়ালটনকে ধন্যবাদ জানান এবং এর সাফল্য কামনা করেন। মেলায় আফ্রিকা ও কেনিয়া থেকে আগত অতিথিরা তাদের দেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ওয়ালটনের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন। সাশ্রয়ী মূল্যে উচ্চমানের পণ্য ক্রয় করে এবং প্রযুক্তি স্থানান্তরে ওয়ালটনকে তারা পাশে পেতে চান।