আদালতের নির্দেশে দায়িত্বে ফিরতে না ফিরতেই ফের সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন রাজশাহীর মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
স্থানীয় সরকার বিভাগ রবিবার (২ এপ্রিল) এই দুই মেয়রকে সাময়িক বরখাস্ত করে আদেশ জারি করেছে।
২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। তিনি আদালতের রায়ে রবিবার সিটি করপোরেশনে অফিস করতে আসেন।
অপরদিকে, ২০১৫ সালের ৭ মে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে সাময়িক বরখাস্ত করে সরকার। আদালত সেই বরখাস্তের আদেশ বাতিল করায় রবিবারই সিটি করপোরেশনে অফিস করতে আসেন তিনি।
আরিফুল হকের বরখাস্তের আদেশে বলা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে দায়ের করা ফৌজদারি মামলার সম্পূরক অভিযোগপত্র গত ২২ মার্চ সুনামগঞ্জের স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল গ্রহণ করেছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন-২০০৯ অনুযায়ী সিটি করপোরেশনের মেয়রের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার অভিযোগপত্র আদালত গ্রহণ করলে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের বিধান রয়েছে। সেজন্য আরিফুল হককে ২০০৯ সালের স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন আইন) আইন অনুযায়ী বরখাস্ত করা হয়েছে।
মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে বরখাস্তের আদেশে বলা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে রাজশাহীর মহানগর বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এ একটি মামলার অভিযোগপত্র আদালত গ্রহণ করেছে। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন-২০০৯ অনুযায়ী সিটি করপোরেশনের মেয়রের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার অভিযোগপত্র আদালত গ্রহণ করলে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের বিধান রয়েছে। তাই আইনানুযায়ী মোসাদ্দেক হোসেনকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলার আসামি সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হককে ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর হবিগঞ্জের একটি আদালত কারাগারে পাঠান।
চলতি বছরের ৪ জানুযারি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে সাময়িক বরখাস্ত আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন আরিফুল। রিট আবেদনের শুনানি শেষে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ গত ১২ মার্চ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। পরে এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে দিয়ে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন।
নাশকতার অভিযোগের চার মামলায় পুলিশ বুলবুলের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিলের পর ২০১৫ সালের ৭ মে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। বরখাস্তের ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন বুলবুল। হাইকোর্ট ওই বছরের ২৮ মে বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করে রুল জারি করেন। এ রুলের শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ১০ মার্চ হাইকোর্ট স্থানীয় সরকার বিভাগের আদেশ অবৈধ বলে রায় দেন।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করলে ২০১৬ সালের ৪ জুন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালত হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেন এবং রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন। এই আবেদনের ওপর গত ৫ মার্চ শুনানি শেষে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।