কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহে কৃমিনাশক ট্যাবলেট খেয়ে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী ম্যাস সাইকোজেনিক ইলনেস রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়েছে। এ সব শিশুদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। শনিবার সকালে ঝিনাইদহের শৈলকূপার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হতে থাকলে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসকরা বলছেন, কৃমিনাশক ওষুধ সেবন করে এটা হয়নি। আতঙ্কিত হয়ে শিশুরা অসুস্থ হয়েছে।
শিক্ষক ও স্বজনরা জানায়, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ উপলক্ষে শনিবার শৈলকূপা উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ানো হয়।
প্রথমে অচিন্ত্যপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হতে শুরু করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শৈলকূপার হিতামপুর, কাতলাগাড়ি, হাকিমপুর, ঝাউদিয়া, দেবতলা, কবিরপুর ও ষষ্ঠিবরসহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হতে থাকে। তাদেরকে নসিমন ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে করে শৈলকূপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঝিনাইদহ-১ আসনের সংদস সদস্য আব্দুল হাই, উপজেলা চেয়ারম্যান শিকদার মোশাররফ হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. উসমান গনি, ভাইস চেয়ারম্যান শামীম হোসেন ও পুলিশ প্রশাসনের লোকজন তাদেরকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান।
শৈলকূপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. খন্দকার বাবর আলী জানান, প্রচণ্ড গরমের কারণে বাচ্চারা কিছুটা অসুস্থ হয়েছে।
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানান, কুষ্টিয়ায় কৃমিনাশক ওষুধ (ট্যাবলেট) খেয়ে কমপক্ষে শতাধিক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এদেরকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অসুস্থ শিক্ষার্থীরা জানায়, স্কুল থেকে কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়ার পর প্রথমে মাথা ঘোরা, ব্যথা ও পরে বমি করে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। এছাড়াও পেটে পীড়া হচ্ছে।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, বেলা ৩টার পর থেকে একে একে মাইক্রোসহ বিভিন্ন পরিবহনে করে অসুস্থ শিশুরা হাসপাতালে আসতে থাকে। অসুস্থ শিক্ষার্থীদের বয়স চার থেকে ১১ বছর। তারা জানায়, কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়ার পর থেকেই তারা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এতো রোগী একবারে হাসপাতালে আসায় সেবা দিতে বা সুস্থ করে তুলতে বেগ পেতে হচ্ছে।
কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৪ থেকে ১২ বছরের শিশু শিক্ষার্থীদের শনিবার কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়ানো হয়। দুপুর গড়িয়ে গেলে ধীরে ধীরে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদেরকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এরপর জেলার ও জেলার পার্শ্ববর্তী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে একে একে অসুস্থ শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে এসে ভর্তি হয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে অন্তত শতাধিক অসুস্থ শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে অসুস্থ শিক্ষার্থীর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) তাপস কুমার জানান, কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়ার পরে অতিরিক্ত গরম পড়ায় শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এতে তিনি আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেন।