জর্জিয়ার বিতর্কিত অঞ্চল আবখাজিয়ায় নৌঘাঁটি স্থাপন করবে রাশিয়া। এজন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে বলে দাবি করেছেন অঞ্চলটির নেতা আসলান বাজানিয়া।
রুশ সাংবাদমাধ্যম ইজভেস্টিয়া ট্যাবলয়েডকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘কৃষ্ণ সাগরীয় রুশ নৌবহরের জন্য খুব শিগগির মস্কো সমর্থিত এ অঞ্চলে একটি নৌঘাঁটি স্থাপন করা হবে।’
এ ঘোষণাটি এমন একটা সময়ে এলো, যখন ইউক্রেন রাশিয়ার কৃষ্ণ সাগরীয় নৌবহরের ওপর হামলা বাড়িয়েছে। দুই সপ্তাহ আগেই ক্রিমিয়ায় রুশ নৌবহরের সদর দপ্তরে হামলা চালায় কিয়েভ।
এদিকে কথিত এই চুক্তি সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি ক্রেমলিন।
জর্জিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এটি জর্জিয়ার ‘সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার স্পষ্ট লঙ্ঘন’ হবে।
আবখাজিয়ায় ইতিমধ্যে রুশ সামরিক ঘাটি রয়েছে। এই অঞ্চলটি জর্জিয়ার উত্তর-পশ্চিমে এবং রাশিয়ার সীমান্তে অবস্থিত। অঞ্চলটি ১৯৯২-৯৩ সালে জর্জিয়ার বিরুদ্ধে স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছিল। ১৯৯৯ সালে অঞ্চলটি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিল, কিন্তু বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের কাছ থেকে তারা স্বীকৃতি পায়নি।
২০০৮ সালে রুশ-জর্জিয়া যুদ্ধের পর, মস্কো আবখাজিয়াকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। জর্জিয়া সরকার আবখাজিয়াকে রুশ-অধিকৃত অঞ্চল হিসেবে বিবেচনা করে থাকে।
আবখাজিয়ার নেতা আসলান বাজানিয়া বলেন, ‘ওসামচির জেলায় নতুন নৌ ঘাঁটি রাশিয়া ও আবখাজিয়ার প্রতিরক্ষা ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে এবং অঞ্চল দুটির মৌলিক স্বার্থ রক্ষা করবে।’ তার মতে, নিরাপত্তা সবার আগে।
আসলান বাজানিয়া চলতি সপ্তাহের শুরুতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করেছেন। এ সময় তিনি ইউক্রেনে মস্কোর যুদ্ধের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেন।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রুশ অধিকৃত ক্রিমিয়ায় ইউক্রেনের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে রুশ কৃষ্ণসাগরীয় নৌবহর পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। কমপক্ষে ১৭টি রুশ জাহাজ সেভাস্তোপল থেকে নভোরোসিয়েস্কে মোতায়ন করা হয়েছে বলে স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা গেছে।
রুশ প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জাহাজ মোতায়েন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের কোনও উত্তর দেননি।
কথিত নতুন আবখাজিয়া ঘাঁটির স্থানটি কৃষ্ণ সাগরের উপকূল বরাবর নভোরোসিস্কের আরও দক্ষিণ-পূর্বে ৫০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
রাশিয়ার কৃষ্ণসাগরীয় বাহিনীকে নৌবাহিনীর ফ্ল্যাগশিপ ইউনিট হিসেবে মনে করা হয়ে থাকে। ইউক্রেনে হামলা চালানোর জন্য মস্কো কৃষ্ণসাগরীয় জাহাজগুলো থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে আসছে, যা ইউক্রেনে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে।
এর ফলে রুশ কৃষ্ণসাগরীয় বাহিনী এখন কিয়েভের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে। সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে ক্রিমিয়ায় রুশ কৃষ্ণসাগরীয় নৌবাহিনীর সদর দপ্তরে হামলা চালিয়ে ৩৪ জন নৌ কর্মকর্তাকে হত্যার দাবি করেছিল ইউক্রেন।