বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাছাকাছি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর থেকে দ্বিগুণ ভোটে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত।
তিনি পেয়েছেন ৮৭ হাজার ৮০৮ ভোট।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী ৩৩ হাজার ৮২৮ ভোট।
সোমবার (১২ জুন) রাতে এ ফলাফল ঘোষণা করেন সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবীর।
তিনি জানান, এ নির্বাচনে মোট ভোট পড়েছে ৫১.৪৬%। অর্থাৎ ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৯৭টি ভোটের মধ্যে ভোট পড়েছে এক লাখ ৪২ হাজার ১৭৭টি। প্রদত্ত এ ভোটের মধ্যে ৪২১টি ভোট বাতিল হয়েছে। সেই হিসেবে বৈধ ভোটের সংখ্যা এক লাখ ৪১ হাজার ৭৫৬টি।
প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগও ভোট না পেলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের জামানত বাতিলের বিধান রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ তথ্যানুযায়ী, মেয়র প্রার্থীদের প্রত্যেককে জামানতের টাকা ফেরত নিতে হলে ১৭ হাজার ৭৭২টির মতো ভোট পেতে হবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীদ্বয় ছাড়া এই কোটা পূরণ করতে পারেননি আর কেউই। তাই জামানত হারাতে হচ্ছে বাকী ৫ প্রার্থীকেই। যে টাকা অর্থ চলে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশনের আয়ের খাতে।
ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, সবচেয়ে কম, ৫২৯টি ভোট পেয়েছেন হাতি প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আসাদুজ্জামান। তার ওপরে আছেন হরিণ প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আলী হোসেন হাওলাদার, তিনি পেয়েছেন ২ হাজার ৩৮১ ভোট। তার ওপরে থাকা জাকের পার্টির গোলাপ ফুল প্রতীকের মিজানুর রহমান বাচ্চু পেয়েছেন ২ হাজার ৫৪৬ ভোট। আর জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকের প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস পেয়েছেন ৬ হাজার ৬৬৫ ভোট এবং তৃতীয় অবস্থানে থাকা টেবিল ঘড়ি প্রতীকের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপন পেয়েছেন ৭ হাজার ৯৯৯ ভোট।
এমন অবস্থা যে শুধু এই পাঁচ মেয়র প্রার্থীর ক্ষেত্রেই ঘটছে, তা কিন্তু নয়! জামানত হারাতে হচ্ছে ডজনখানেক কাউন্সিলর প্রার্থীকেও।
বরিশালের অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন বলেন, জামানত জব্দের আইন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের জন্য একই। তবে মেয়রের ভোটের হিসাব হবে ৩০টি ওয়ার্ডের মোট কাস্টিং ভোটের ওপর। আর কাউন্সিলরদের ক্ষেত্রে হিসাব হবে প্রতি ওয়ার্ডের মোট কাস্টিং ভোটের ওপর।
নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত ফলাফল ও নিয়মানুযায়ী, এবারের নির্বাচনে বরিশাল সিটি করপোরেশনের ৩০টি ওয়ার্ডে ১১৮ জন সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ৪৭ জন এবং ৪১ জন সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ১৫ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
অর্থাৎ জামানত বাজেয়াপ্তের তালিকায় রয়েছেন মোট ৬২ জন কাউন্সিলর প্রার্থী। যেখানে সাধারণ কাউন্সিলরদের মধ্যে সব চেয়ে বেশি ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে। তবে একজনও নেই ৮, ৯, ১০ ও ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে।
অন্যদিকে, সংরক্ষিত কাউন্সিলরদের মধ্যে ১৩, ১৪, ১৫ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে জামানত হারাচ্ছেন সর্বোচ্চ ৫ জন। তবে সংরক্ষিত ৭, ৮, ১০ নম্বর ওয়ার্ডে নেই একজনও।