মাদারীপুরে টিনের বেড়া কেটে চুরি করতে ঘরে প্রবেশ করার সময় আটক যুবকের গণপিটুনিতে মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার (৮ মে) রাত ৩টার দিকে মাদারীপুরের রাজৈরের পূর্ব নাগরদি এলাকার সুকদেব মালোর বাড়ির উঠানে এ ঘটনা ঘটে। পরে মঙ্গলবার (৯ মে) সকালে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
নিহত গোবিন্দ রায় (৩৫) হোসেনপুর ইউনিয়নের গোয়ালবাথান এলাকার তারাপদ রায়ের ছেলে। এদিকে আটককৃতরা হলো, পূর্ব নাগরদি এলাকার সুকদেব মালো (৫০) ও তার স্ত্রী বিথি মালো (৪৫)।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, সোমবার রাত ৩টার দিকে মাদারীপুরের রাজৈরের পূর্ব নাগরদি এলাকার সুকদেব মালোর টিনসেট ঘরের বেড়া কেটে ভেতরে প্রবেশ করে গোবিন্দ রায় নামে এক যুবক। ঘরের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে তাকে আটক করে। পরে প্রতিবেশি আকাশ ও সুমনের সহযোগিতায় গোবিন্দকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। এতে ঘটনাস্থলে মারা যায় ওই যুবক। বিষয়টি ভিন্নখাতে নেয়ার জন্য মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে কয়েকশত মিটার দুরে সড়কের পাশের দোকানের সামনে ফেলে রেখে যায় অভিযুক্তরা। পরে ভোরে ত্রিপল নাইনের মাধ্যমে খবর পেয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিচার দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
এদিকে এই ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত ওই এলাকার আকাশ মালো ও সুমন মালো এখনো পলাতক।
নিহত গোবিন্দের বন্ধু সলেমান বলেন, ‘আমার বন্ধুকে যারা পিটিয়ে হত্যা করেছে তাদের কঠিন বিচার চাই। নিরহ লোকটাকে ৮-১০ জনে মিলে হত্যা করেছে। পরে লাশ আরেক জায়গায় ফেলে রেখে যায় অপরাধীরা। এমন ঘটনা যেন ভবিষ্যতে অন্য কেউ করতে সাহস না পায় এমন বিচার চাই।’
স্থানীয় বাসিন্দা শাকিল শেখ বলেন, ‘রাতে চিৎকার চেচামেচি শুনে এগিয়ে যাই, গিয়ে দেখি গোবিন্দকে মারধর করছে সুকদেব ও তার বাড়ির লোকজন। আমরা নিষেধ করলেও তারা শোনেননি। তারপরে চলে আসি। সকালে জানতে পারি গোবিন্দ মারা গেছে। এই ঘটনার তদন্তপূর্বক বিচার দাবি করছি।’
মাদারীপুরের রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন জানান, এই ঘটনায় অভিযুক্ত সুকদেব মালো ও তার স্ত্রী বিথিকে আটক করেছে পুলিশ। বাকিদের ধরতে চলছে অভিযান। এছাড়া আটকৃতরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন। হত্যায় ব্যবহার করা লাঠি জব্দ করা হয়েছে। এই বিষয় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।