ফরিদপুর প্রতিনিধি : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ঢাকাকে ভেঙে আরও একটি বিভাগ করা হবে। ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরিয়তপুর, রাজবাড়ী ও গোপালগঞ্জকে নিয়ে বিভাগটি গঠন করা হবে।’
বুধবার (২৯ মার্চ) বিকেলে ফরিদপুরে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ২০১৯ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দেশের উন্নয়ন হয়। আওয়ামী লীগ মানেই দেশের উন্নয়ন, আওয়ামী লীগ মানেই মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন। নৌকায় ভোট দিয়ে আপনারা উন্নয়ন পেয়েছেন। এই ফরিদপুর বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত ফরিদপুর। এই ফরিদপুর ছিল অবহেলিত, ২০০৮ সালে যখন ফরিদপুরে আসি তখন দেখেছি এখানে বিদ্যুৎ নাই, রাস্তা নাই, সন্ত্রাসের রাজত্ব। বিএনপি ক্ষমতায় থেকে এই এলাকায় উন্নয়ন না করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেছে। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে এবং জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটায়।
এ সময় তিনি বলেন, আমরা যখন উন্নয়ন নিয়ে ব্যস্ত থাকি, বিএনপি তখন জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি ও সন্ত্রাস আর জঙ্গিবাদ নিয়ে ব্যাস্ত থাকে।
জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম, ভ্রাতৃত্বের ধর্ম। ইসলাম কখনোই আত্মহননকে সমর্থন করে না। ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে বিএনপি বাংলার মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। আন্দোলনের নামে তারা মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। ৩৬শ জনকে আগুনে পুড়িয়ে দগ্ধ করেছে। ৩২৫২টি গাড়ি পুড়িয়েছে। তাদের হাত থেকে নারী-শিশু কেউই রক্ষা পায়নি। বায়তুল মোকাররমে পবিত্র কোরআন শরীফ পুড়িয়েছে তারা। বিএনপির রাজনীতি পেট্রোলবোমা দিয়ে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যার রাজনীতি। তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষই প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু বিধ্বস্ত একটি দেশ পেয়েছিলেন, যার কোন রিজার্ভ ছিল না। কিন্তু তিনমাসেই দেশকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধু একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ জাতি গড়তে চেয়েছিলেন। এরপর ২১ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতার বাইরে ছিল। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি সরকারের আমলে সার চাওয়ায় ১৮ জন কৃষককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। আর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে তিন দফায় সারের মূল্য কমিয়েছে। দুই কোটি কৃষককে কৃষি উপকরণ কার্ড দিয়েছে যার মাধ্যমে তারা সরাসরি ভর্তুকি পেয়ে থাকে। ৫০ লক্ষ দরিদ্র পরিবারকে ৩ কেজি করে ১০ টাকা মূল্যের চাল দেওয়া হচ্ছে। আমাদের সরকার বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা ও মুক্তিযোদ্ধা ভাতা চালু করেছে।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশে কোন মানুষ গৃহহীন থাকবে না। প্রত্যেক গৃহহীনকে চিহ্নিত করে প্রত্যেককে গৃহ নির্মাণ করে দেওয়া হবে।
ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহার সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মণি, নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান, ফরিদপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুর রহমান প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।