বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম সেরা রোমান্টিক জুটি শাবনাজ-নাঈম। নব্বইয়ের দশকের শুরুতে এহতেশাম পরিচালিত ‘চাঁদনী’ সিনেমার মাধ্যমে ঢাকাই সিনেমায় আলোড়ন তোলেন দুজন। এরপর প্রায় ২০টি সিনেমায় জুটি বেঁধেছেন। তাদের পর্দার ভালোবাসা এক সময় বাস্তবে ধরা দেয়। যদিও শুরুতে পরস্পরের প্রতি ধারণা খুব বেশি ভালো ছিলো না।
নির্মাতা এহতেশামের সঙ্গে নাঈমের বাবার পারিবারিক সম্পর্ক ছিলো। অন্যদিকে শাবনাজের এক দাদার সঙ্গে এই নির্মাতার ছিলো জানাশোনা। এহতেশাম নাঈমের বাবাকে ‘চকোরী’ সিনেমায় নায়ক বানাতে চেয়েছিলেন। রাজি হননি নাঈমের বাবা। পরে এক বিয়ের অনুষ্ঠানে নাঈমকে দেখে সিনেমার প্রস্তাব দেন এই নির্মাতা।
তবে এই সিনেমায় শাবনাজের যুক্ত হওয়াটা ছিলো কাকতালীয়।
শাবনাজ বলেন, ‘আমার এক দাদার সঙ্গে এহতেশাম সাহেবের বন্ধুত্ব ছিলো। যে কারণে আমার এক চাচার বিয়েতে উনি (এহতেশাম) গিয়েছিলেন। আমিও সেখানে ছিলাম। সেদিন আমি প্রথম শাড়ি পরে ছিলাম। সেই বিয়ের ভিডিও দেখতে গিয়ে তার মনে হয়েছিল আমার ক্যামেরা ফেস ভালো। এরপর তিনি আমাদের বাসায় আসেন। সেদিন নাঈমও এসেছিল। আব্বাকে বলল, ওকে সিনেমায় নিতে চাই। তখন আমি ক্লাস টেন-এ পরি। সামনে পরীক্ষা। আব্বা কোনোভাবেই রাজি হচ্ছিলেন না। এর মধ্যে আমার সামনেই নাঈম বলে ফেলল, এই মেয়ের সঙ্গে আমি অভিনয় করবো না। তাকে দিয়ে হবে না। তখন আমি বেশ শকনো-পাতলা, চশমা পরি। ওর আসলে মনে হয়েছিল, ইনোসেন্ট একটা মেয় ও কীভাবে সিনেমা করবে? বিষয়টি কিন্তু আমার মোটেও ভালো লাগেনি। খুব অপমানিত বোধ করেছিলাম।’
শাবনাজের প্রকৃত নাম সাবরিনা তানিয়া। নির্মাতা এহতেশাম তার নাম বদলে রাখলেন শাবনাজ। বিষয়টি স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছেন শাবনাজ। তার ভাষ্যমতে, আমি সেসময় ভেবেছি আমি তো একটা সিনেমাই করবো। আর সিনেমা করা হবে না। এটাই প্রথম এটাই শেষ। নাম পরিবর্তন হলে সমস্যা নেই।
নাঈমের সঙ্গে প্রথম দিনের শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে চাইলে শাবনাজ বলেন, ‘প্রথম দিন শুটিংয়ে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে কাজ করতে হয়েছে। নাঈমের সঙ্গে প্রথম দেখার ওই ঘটনা মনের মধ্যে জেদ হয়ে চেপে বসেছিল। ফলে সবাই সবাইকে হেল্প করলেও ভেতরে খুব জেলাসও ছিলো।’
‘চাঁদনী’ সিনেমার পাত্রপাত্রী অনেকেই নতুন ছিলেন। খুব মন দিয়ে নিজের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করেছেন তারা। তারই প্রতিফলন ঘটেছে পর্দায়। সিনেমাও হয় সুপার-ডুপার হিট।