বিতর্কিত ব্যবসায়ী ও ধনকুবের মুসা বিন শমসেরের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অনুসন্ধান চলছে, এ বিষয়ে অগ্রগতি হলে মামলা করা হবে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সানাউল হক খান।
বুধবার (২৯ মার্চ) ধানমণ্ডিতে অবস্থিত তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান তিনি। ময়মনসিংহের নয়জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সম্প্রতি গণমাধ্যমে মুসা বিন শমসেরের যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। যেখানে ‘নুলা মুসা’ খ্যাত এই ব্যবসায়ীর নিজ এলাকা ফরিদপুরের অন্তত দুজন মুক্তিযোদ্ধা তার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগের কথা জানান।
এ অবস্থায় মুসা বিন শমসেরের বিরুদ্ধে কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে সানাউল হক খান বলেন, অনুসন্ধান অনেক আগে থেকেই। যা চলমান রয়েছে। সে বিষয়ে যখন অগ্রগতি হবে, আমরা তখন মামলা রুজু করব।
অনুসন্ধান পর্যায়ে অভিযোগ বইয়ে তার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনুসন্ধান পর্যায়ে কম্প্লেইন রেজিস্ট্রারে তোলা হয় নাই। প্রমাণ পেলে মামলা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
তদন্ত কবে নাগাদ শেষ হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা কোনো ভবিষ্যদ্বাণীও করি না, দূর কল্পনাও করি না। ফ্যাক্টস অনুসারে আগাই। যখন আমাদের কাছে ফ্যাক্টস আসবে, তখনই আমরা আগাব। এ ব্যাপারে সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার অধিকার আমার নাই। আমরা আরও অনেকের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে আছি তার ভিতরে হামদার্দ ট্রাস্টিও আছে।
যে দুজন মুক্তিযোদ্ধা অভিযোগ করেছেন তাদের সম্পর্কে সানাউল হক বলেন, যে দুজন সাক্ষী ওই নিউজে বক্তব্য দিয়েছে সে দুজন আমাদেরই সাক্ষী। এদের সম্পর্কে আমি কোন মন্তব্য করব না। আমরা একটা কথা বলতে পারি, কোন রাজনৈতিক পরিচয়, কোন সামাজিক পরিচয়, অর্থনৈতিক পরিচয়, কোন সময়ই আমাদের কোন মামলায় ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে বিরত রাখতে পারে নাই। ওই দুজন সাক্ষী আমাদের পরিচিত। তারা আমাদের অন্য দুটি মামলার সাক্ষী। কাজেই তারা যেহেতু এই কথাটা বলেছেন, এই মামলায় অনুসন্ধানে তো আছেই, আমরা অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তাদের দুজন সাক্ষীর সঙ্গে যোগাযোগ করে অতিসত্বর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলব। এবং ফলাফল যদি কিছু হয়, আপনারা জানবেন।’
উল্লেখ্য, মুসা বিন শমসের ১৯৭০ ও ৮০ এর দশকে আন্তর্জাতিক অস্ত্র ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ফরিদপুরের এই ধনকুবের মুক্তিযুদ্ধের সময় ‘নুলা মুসা’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন বলে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগ। তার ছেলে ববি হাজ্জাজ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের উপদেষ্টা ছিলেন। আর মুসা নিজে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ সেলিমের বিয়াই।