বরগুনায় সরকারিভাবে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এবছর জেলায় লক্ষ্যমাত্রার পাঁচ হাজার ৮৪২ মেট্রিক টন ধান কেনার বিপরীতে এখন পর্যন্ত মাত্র সাড়ে পাঁচ মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছে।
সরকারিভাবে সারাদেশের সঙ্গে একযোগে বরগুনায় গত ২৯ নভেম্বর থেকে আমন ধান সংগ্রহ শুরু হয়েছে, যা আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা সরকারনির্ধারিত দামের চেয়ে বাজারে বেশি মূল্য পাচ্ছেন। যে কারণে সরকারি গুদামে ধান না দিয়ে বাজারে বিক্রি করছেন।
বরগুনার বাঁশবুনিয়া এলাকার আল-আমিন বলেন, সরকারনির্ধারিত দামের থেকে মণপ্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেশি দামে বাজারে ধান বিক্রি করা যায়। এজন্যই বাজারে বিক্রি করছি।
বরইতলা এলাকার কৃষক মতিউর রহমান বলেন, সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে অনেক ভোগান্তির শিকার হতে হয়। অনেক সময় ধানের মান ভালো না বলে ফেরত দিয়ে দেয়। কিন্তু সেই ধান বাজারে বিক্রি করতে কোনো বাধা নেই। তাছাড়া পরিমাণ বেশি হলে মাঠে এসে ধান কিনে নিয়ে যায়। এতে পরিবহন খরচ যেমন থাকে না, তেমনি কোনো ভোগান্তিও হয় না।
সোনাখালী এলাকার মো. আলী বলেন, সরকার যে ধান কেনে আমরা তা জানি না। বাজারের থেকে যদি বেশি দাম এবং পরিবহন খরচ কম হয়, তাহলে সরকারের কাছে ধান বিক্রি করা যায়।
বরগুনা শহরের মুন্সী ট্রেডার্সের ম্যানেজার রেজা বলেন, অনেক কৃষকের সঙ্গে দীর্ঘদিনের কেনাবেচার সম্পর্ক থাকায় তাদের ধান আমাদের কাছেই বিক্রি করে।
হাওলাদার ট্রেডার্সের শ্রমিক মামুন বলেন, ধান কাটা হয়ে গেলে কৃষকরা অনেক সময় দোকানে ফোন দেয়। আমরা গাড়ি নিয়ে একসঙ্গে পাঁচশ থেকে এক হাজার মণ ধান মাঠ থেকেই মেপে নিয়ে আসি।
এ বিষয়ে, বরগুনা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা তহিদুর রহমান বলেন, নির্ধারিত মূল্যের থেকে আমরা বেশি দামে কৃষকদের ধান কিনতে পারি না। অপরদিকে, বাজারে মূল্য বেশি থাকায় সরকারের কাছে ধান বিক্রিতে কৃষকদের আগ্রহ নেই। মাঠ থেকেই ধান বিক্রি হয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, জেলায় চলতি মৌসুমে পাঁচ হাজার ৮৪২ মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রার ধরা হয়েছে। বিপরীতে এখন পর্যন্ত মাত্র সাড়ে পাঁচ মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছে।