আঁটসাঁট প্যান্ট বা লেগিংস পরার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে দুই কিশোরীকে। আর এ ঘটনার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বিতর্কের ঝড় উঠেছে।
খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের একটি বিমান ডেনভার থেকে মিনেপোলিস যাচ্ছিল। বিমানে এই কিশোরীরা উঠলে ফটকে দাঁড়িয়ে থাকা এক কর্মকর্তা তাদের বলেন, লেগিংস পরে ওঠা যাবে না।
বিমান কর্তৃপক্ষ বলছে, কিশোরী দুজন বিমান কর্মচারীর অতিথি হিসেবে বিশেষ পাস নিয়ে বিমানে ভ্রমণ করতে এসেছিলেন। তাই ড্রেস কোডের বিষয়টি আসে।
তবে লিগিংস বা ইয়োগা প্যান্ট নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে এটি প্রথম নয়, এর আগেও এমনটি হয়েছে।
লেগিংস ও ইয়োগা প্যান্ট -এ দুধরনের প্যান্ট মেয়েদের নিত্যদিনের ব্যবহারে পছন্দের হয়ে উঠছে, কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ নিয়ে বিতর্কও হচ্ছে প্রচুর। অনেকের কাছে এটি জিন্সের বিকল্প আরামদায়ক একটি পোশাক।
কিন্তু অনেকের কাছে, এটি ‘অশ্লীল পোশাক’ যা কারো শরীরকে অন্যভাবে তুলে ধরে।
গত অক্টোবর মাসে যুক্তরাষ্ট্রের রোড আইল্যান্ডের এক ব্যক্তি স্থানীয় একটি পত্রিকায় চিঠিতে লেখে, সেখানকার বিশজনেরও বেশি নারী এ ধরনের প্যান্ট পরে এবং তাদের এসব পোশাক পরা থেকে বিরত থাকার আহ্বানও জানায় অ্যালান সরেনটিনো নামের ওই পুরুষ।
অ্যালান সরেনটিনো লিখেছেন, ‘শিশুদের জন্য মিনি স্কার্ট, ইয়োগা প্যান্ট এগুলো ঠিক আছে। ছিমছাম দেহের তরুণীরাও এসব পরতে পারেন কারণ তাদের মানিয়ে যায়। কিন্তু যদি বয়স্ক কোনো ব্যক্তি এ ধরনের প্যান্ট পরেন যা তাদের একদম মানায় না, পাবলিক প্লেসে এমন সব পোশাক পরিহিতাদের দেখতে খুবই অস্বস্তিকর লাগে।’
তার ওই চিঠির পর ‘ইয়োগা প্যান্ট প্রটেস্ট’ নামে প্রতিবাদ সমাবেশও হয়, যেখানে বিভিন্ন বয়সী শত শত নারী লেগিংস বা আঁটসাঁট প্যান্ট পরে শহরজুড়ে হেঁটেছিলেন।
ওই বিক্ষোভ সমাবেশের মূল আয়োজকদের একজন জ্যামি বি বিবিসিকে বলছিলেন, শুধু ইয়োগা প্যান্ট সম্পর্কিত মন্তব্যের জন্য তাদের প্রতিবাদ ছিল না।
সরেনটিনো জানান যে তিনি তার চিঠির জন্য হুমকিও পেয়েছিলেন। পরে তিনি একটি চিঠিতে লেখেন যে পোশাক সম্পর্কিত তার মন্তব্যগুলো ছিল এক ধরনের ‘মজা’।
কিন্তু বিশ্বজুড়ে অনেক নারী নিজেদের পোশাক পরিধানের বিষয়ে বিধিনিষেধ নিয়ে লড়াই করে যাচ্ছে। বুরকিনি বা আরামদায়ক জুতা যাই হোকনা কেন-নারীদের নিজ নিজ স্বাধীনতা আছে এসব পরিধান করার।
‘নিতম্ব ঢেকে চলুন’
যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি স্কুলও লেগিংস নিয়ে এই বিতর্কের জের ধরে তাদের পলিসি আবার বিবেচনা করে দেখেছে।
গত বছর ওহাইওতে লেকউড সিটি স্কুল তাদের শিক্ষার্থীদের ড্রেসকোড পর্যালোচনা করে তা পরিবর্তন করেছে।
কারণ স্কুলটির শিক্ষার্থীদের পোশাকে নাকি ‘যৌন আবেদনময়’ বিষয় আছে বলে কর্তৃপক্ষ অভিযোগ পাচ্ছিল।
এরপর লেগিংস ও ইয়োগা প্যান্টের মতো আঁটসাঁট প্যান্ট পরে আসা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানালো ‘যদি উপরের পোশাকটি নিতম্ব ঢাকে তাহলে সেটি পরে আসা যাবে।’
এরপর পোশাকের বিষয়ে আরো বিধিনিষেধ আনলো তারা। ‘যেসব স্কার্ট হাঁটুর সমান বা তার থেকে বড় থাকবে সেগুলোই পরে আসা যাবে’ -কর্তৃপক্ষ এমন মন্তব্য করলো।
স্কুলটির ওই ড্রেস কোডের বিধান এখনো রয়েছে।